আরো এক ব্যবসায়ীকে অপহরণ!
৮ মে ২০১৪রহমত উল্লাহ সেন্টু পরিবহণ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন৷ তাঁর স্ত্রী লাভলী আক্তার বৃহস্পতিবার ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, গত ৯ই এপ্রিল তাঁর স্বামীকে পুরনো ঢাকার ইংলিশ রোড এলাকা থেকে র্যাবের পোশাক পড়া কয়েকজন অপহরণ করে৷ তিনি জানান, ঐ দিন তিনি তাঁর স্বামীর সঙ্গে একটি মামলার বিষয়ে আলোচনার জন্য পুরনো ঢাকার আদালত পাড়ার আইনজীবীর সহকারী শাহ আলমের চেম্বারে যান৷ আলমের সঙ্গে কথা বলে বেলা ১১টার দিকে তাঁরা দু'জন চেম্বার থেকে বের হন৷ তখন ৮/১০ জন লোক তাঁর স্বামীকে জোর করে ইংলিশ রোডের দিকে নিয়ে যায়৷ তাঁদের চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসেন এবং অপহরণকারীদের সঙ্গে তখন স্থানীয় লোকজনের হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে৷ কিন্তু এক পর্যায়ে সেন্টুকে টেনেহিঁচড়ে রাস্তার মুখে সাদা রঙের মাইক্রোবাসে তোলা হয়৷ মাইক্রোবাসটিতে কালো কাচ লাগানো ছিল৷ উপস্থিত লোকজন মাইক্রোবাসটি আটকানোর চেষ্টা করে বিফল হন৷
রহমত উল্লাহ সেন্টুর স্ত্রী অভিযোগ করেন, ‘‘এর কয়েক মিনিট পর র্যাবের পোশাক পরা অস্ত্রধারী তিন থেকে চারজন লোক এসে জড়ো হওয়া লোকদের লাঠিপেটা করে মাইক্রোবাসের সামনে থেকে সরিয়ে দেয়৷ এরপর র্যাবের আরেকটি গাড়ি আসে সেখানে৷ র্যাবের পোশাক পরা লোকগুলো তাঁর স্বামীকে ওই গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়৷ লাভলী আক্তার জানান, পাশেই কয়েকজন পুলিশ দায়িত্ব পালন করছিলেন৷ তখন পুলিশের সহায়তা চাইলে তাঁরা জানান যে, তাঁরা র্যাব ১০-এর সদস্য৷ পরিচয়-পত্রও দেখান তাঁরা৷ অথচ লাভলী আক্তার বলেন, ঘটনার পর তিনি র্যাব ১০-এর কার্যালয়ে গেলে তারা তাঁর স্বামীকে আটকের কথা অস্বীকার করে৷
এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় ১৬ই এপ্রিল একটি অপহরণ মামলা করেন লাভলী আক্তার৷ তাঁর অভিযোগ, ব্যবসায়িক বিরোধের জের ধরে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালের সাইফুল ইসলাম মাহমুদ ও টার্মিনালের কর্মচারী বাবুর সহায়তায় র্যাব ১০-এর সদস্যরা তাঁর স্বামীকে ধরে নিয়ে গেছে৷ এ ঘটনায় আইনজীবীর সহকারী শাহ আলমের যোগসূত্র আছে বলেও অভিযোগ তাঁর৷ অপহরণের পর একমাস পার হলেও পুলিশ বা র্যাব তাঁর স্বামীকে উদ্ধারে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ করেন লাভলি আক্তার৷ তাই স্বামীকে উদ্ধারে প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি৷
লাভলী আক্তার জানান, তাঁর স্বামী রহমত উল্লাহ সেন্টু সায়েদাবাদ-টঙ্গী রুটের তুরাগ পরিবহনের ভাইস চেয়ারম্যান৷ নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের সানারপাড়ে রড-সিমেন্টের ব্যবসা রয়েছে তাঁর৷ পরিবারসহ সানারপাড়ে নিজস্ব বাড়িতে বাস করতেন তিনি৷
এ ব্যাপারে র্যাব ১০-এর কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল খন্দকার গোলাম সারওয়ার জানান, ‘‘আমরা এ ধরণের কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি৷ অভিযোগ পেলে কথিত ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হবে৷'' কোতোয়ালি থানা পুলিশ এ ব্যাপারে একটি জিডির কথা স্বীকার করে৷ তবে তারা বলে অপহরণ নয়, নিখোঁজ হওয়ার জিডি করা হয়েছিল৷