রোহিঙ্গাদের দূরে রেখেই এগোচ্ছে মিয়ানমার
২৩ জুলাই ২০১৫গত কিছু দিনে আর রোহিঙ্গা বা বাংলাদেশি অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বহন করে নেয়া কোনো জলযান সংবাদ শিরোনামে আসেনি৷ এ নিয়ে তাই লেখালেখিও হচ্ছে না ফেসবুক-টুইটারে৷ মিয়ানমার সরকারও যেন অন্যদিক থেকে দৃষ্টি ফিরিয়ে হাত দিয়েছে দেশ গোছানোর কাজে৷
গত কয়েকদিনে মিয়ানমার সম্পর্কে একটাই খবর বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে এসেছে৷ ১৫৫ জন বাংলাদেশিকে বঙ্গোপসাগর থেকে উদ্ধার করে ফেরত পাঠানোর খবর৷ মানবপাচারকারীদের খপ্পরে পড়ে মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে সাগরে পাড়ি দেয়া মানুষগুলোকে প্রায় একমাস আগে উদ্ধার করেছিল মিয়ানমারের নৌ-বাহিনী৷ নারী ও শিশুসহ ১৫৫ জন বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানোর খবরটি টুইটারেও আছে৷
আরো আছে মিয়ানমার নিয়ে ভারতের উদ্বেগের খবর৷ মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে অনেক অস্ত্র ঢুকছে ভারতে৷ অবৈধ অস্ত্র প্রবেশ রুখতে ভারতের সেনাবাহিনী মিয়ানমার সীমান্তে অভিযান চালাতে পারে – এমন একটি খবর এসেছে সে দেশের একটি পত্রিকায়৷
আরেকজন টুইট করেছেন নিউ ইয়র্ক টাইমসের একটি প্রতিবেদন৷ প্রতিবেদনটি মানবপাচার বিষয়ক, তাই শিরোনামও ‘আ বাংলাদেশি টাউন ইন হিউম্যান ট্রাফিকিংস গ্রিপ', অর্থাৎ মানবপাচারের থাবায় বাংলাদেশের একটি শহর৷ বাংলাদেশের শাহ পরীর দ্বীপ নিয়ে লেখা ফিচারধর্মী এই প্রতিবেদন পড়লেই বুঝতে পারবেন মিয়ানমার থেকে কত রোহিঙ্গা ঢুকে পড়েছে বাংলাদেশে, কীভাবে তারা মিশে যাচ্ছে মূল স্রোতে, কীভাবে মানবপাচারকারীদের থাবা এসে পড়ছে তাদের ওপর৷
মিয়ানমার সরকার সবসময়ই বলে আসছে রোহিঙ্গাদের দায়িত্ব তারা নেবে না, সরকারের দেয়া শর্ত এবং পরিচয় মেনে যারা যাবে, তাদেরই শুধু স্বাগত জানাবে মিয়ানমার৷ মিয়ানমারে শান্তিতে বসবাসের নিশ্চয়তাও পাচ্ছে না রোহিঙ্গারা৷ অনেক রোহিঙ্গাই ঘরছাড়া৷ তাদের অনেকেই এখনো মিয়ানমারে৷ জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর-র ডেপুটি কমিশনার সম্প্রতি ঘরছাড়া মানুষগুলোর অবস্থা দেখতে মিয়ানমারে গিয়েছিলেন৷ পাঁচ দিনের সফরে তিনি রাজধানী নেপিদো, ইয়াংগুন এবং রাখাইন রাজ্য পরিদর্শন করেছেন৷ সফর শেষে তিনি বলেছেন, মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুতদের সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ অনেক বেশি জোরদার করা দরকার৷
কিন্তু মিয়ানমার সরকার সে বিষয়ে কিছু না করে, রোহিঙ্গা ইস্যু থেকে দৃষ্টি সরিয়ে মনযোগ দিয়েছে দেশের অন্য অভ্যন্তরীণ বিষয়ে৷
সংকলন: আশীষ চক্রবর্ত্তী
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ