রিও ডি জানেরো: কারাগারে সুন্দরী প্রতিযোগিতা

রিও ডি জানেরোর তালাভের ব্রুস কারাগারে ক্যাটওয়াকের প্রস্তুতি নিচ্ছেন প্রতিযোগীরা৷ কঠোর নিরাপত্তাবেষ্টিত এই কারাগারে স্বেচ্ছাসেবীরা কেবল এই আয়োজন উপলক্ষ্যে ভেতরে ঢোকার সুযোগ পান এবং বন্দিদের সাজানোর দায়িত্ব নেন৷

প্রতিযোগিতা শুরু হওয়ার আগ মুহূর্ত৷ ৪৪০ জন বন্দির মধ্যে মাত্র ১০ জন চূড়ান্ত পর্বে পৌঁছেছেন৷ প্রতিযোগীরা কতটা আকর্ষণীয় সেটার পাশাপাশি তাদের আচার-আচরণ দেখেও বিচার করা হয়৷

তালাভেরা ব্রুসের বেশিরভাগ নারী মাদক সংক্রান্ত অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন৷ ব্রাজিলের আইন মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০০০ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে এই কারাগারে নারীর সংখ্যা ৬০০ ভাগ বেড়েছে৷ প্রতি বছর এই কারাগারে এই সুন্দরী প্রতিযোগিতা হয়, প্রাত্যহিক রুটিনে কিছুটা পরিবর্তন আনতেই এই আয়োজন৷

সান্ধ্যকালীন গাউন এবং সমুদ্র সৈকতে ফ্যাশন – এই দুই ক্যাটাগরিতে বিচারকরা খুব ভালোভাবে প্রতিযোগীদের নীরিক্ষণ করেন৷ চেহারা, ভঙ্গি এবং পছন্দের ভিত্তিতে তাদের বিচার করা হয়৷ প্রথম স্থান অধিকারকারী পান একটি ফ্যান, দ্বিতীয় জন একটি চুল শুকানোর যন্ত্র এবং তৃতীয় জন স্টাইলিং আয়রন৷

রেডকার্পেটে অন্য বন্দিদের সামনে ব্যক্তিত্বে সঙ্গে ক্যাটওয়াক করলে ঐ নারীদের আত্মবিশ্বাস বাড়ে বলে মনে করেন কারাগারের পরিচালকরা৷ তাঁরা বলেন, কারাগার থেকে যখন তারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যান, তখন এটা তার জীবনে প্রভাব ফেলে৷

এ বছর সুন্দরী প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়েছেন মায়ানা আলভেজ (ডানে)৷ গত বছরের বিজয়ী মিশেলে রাঙ্গেল বিজয়ীর হাতে পুরস্কার তুলে দেন৷ তিনি বলেন, ‘‘এই সময়টায় আমি যে কারাগারে বন্দি এটা মনেই হয়নি৷ মনে হয়েছিল আমার আত্মা মুক্তি পেয়েছে৷’’

বিজয়ী মায়ানার শরীরে এমন কিছু উল্কি আঁকা রয়েছে, যা আপনাকে ভাবতে বাধ্য করবে৷ মায়ানা বলেন, ‘‘আমি অবশ্যই মুক্ত হতে চাই৷ আমি যখন এখান থেকে বের হবো তখনই এই পুরস্কার গ্রহণ করবো৷’’ তিনি বলেন, তার জন্য সবচেয়ে প্রিয় মুহূর্ত হলো এই আয়োজন উপলক্ষ্যে তার মাকে এখানে আসার অনুমতি দেয়া হয়েছে৷

প্রথম পুরস্কার হয়ত বিজয়ীকে বিশেষ সম্মান বা সুযোগ সুবিধা এনে দেয়৷ কিন্তু প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীর প্রত্যেকেই কিন্তু লাভবান হয়েছেন৷ কেননা এই আয়োজন উপলক্ষ্যে প্রত্যেকেই স্বজনদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পেয়েছেন৷