যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে জার্মানির ব্যবস্থা?
১ আগস্ট ২০১৭জার্মান অর্থনীতি মন্ত্রী ব্রিগিটে সুইপ্রিসের মতে, রাশিয়ার বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সর্বাধুনিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থার ফলে একাধিক জার্মান শিল্পসংস্থা প্রভাবিত হবে৷ সোমবার সুইপ্রিস পুনরায় বলেন যে, ইউরোপীয় শিল্পসংস্থাগুলিকে পরোক্ষভাবে শাস্তিদানের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গ করছে৷
‘‘জার্মান কোম্পানিরা অপর একটি দেশে ব্যবসা করছে বলে মার্কিনিরা তাদের শাস্তি দিতে পারে না’’, সুইপ্রিস জার্মান ‘ফুংকে’ মিডিয়া গোষ্ঠীর একটি সাক্ষাৎকারে বলেন৷ ‘‘অবশ্যই আমরা কোনো বাণিজ্যিক সংঘাত কামনা করি না’’৷ এরসঙ্গে সুইপ্রিস যোগ করেন ও স্মরণ করিয়ে দেন যে, জার্মান সরকার মার্কিনিদের প্রতি ‘‘শাস্তিমূলক ব্যবস্থার ক্ষেত্রে একটি সমন্বয়কৃত পন্থা থেকে বিচ্যুত না হওয়ার’’ আহ্বান জানিয়েছেন৷
সে আহ্বানে দৃশ্যত বিশেষ কাজ হয়নি, যেহেতু গত সপ্তাহে মার্কিন কংগ্রেস বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতায় রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা অনুমোদন করে৷ বিলটির একটি অনুচ্ছেদে যে সব কোম্পানি মস্কোকে গ্যাস রপ্তানির জন্য পাইপলাইন নির্মাণের কাজে সাহায্য করবে, তাদের উপর অর্থদণ্ড ও অপরাপর বাধানিষেধ আরোপ করা সম্ভব হবে৷ অর্থাৎ নীতিগতভাবে যে সব ইউরোপীয় জ্বালানি সংস্থা রুশ জ্বালানি সংস্থাদের সঙ্গে সহযোগিতা করছে, তাদের কড়া দণ্ড দেওয়া যেতে পারে৷ অন্যদিকে মৌলিক জ্বালানি রপ্তানির জন্য ইউরোপ রাশিয়ার উপরেই সর্বাধিক নির্ভর করে থাকে, ইউরোপীয় কমিশনের পরিসংখ্যান কার্যালয় ইউরোস্ট্যাট-এর বিবরণ থেকে যা স্পষ্ট বোঝা যায়৷
জ্বালানি ক্ষেত্রে রুশ-ইউরোপীয় সহযোগিতা প্রসঙ্গে প্রথমেই যে প্রকল্পটির নাম উঠে থাকে, সেটি হলো ‘নর্ড স্ট্রিম ২’ পাইপলাইন প্রকল্প, যা রাশিয়া থেকে প্রাকৃতিক গ্যাস বালটিক সাগর হয়ে সরাসরি জার্মানিতে নিয়ে আসবে৷ প্রকল্পটির রুশি তরফে রয়েছে মূলত গাজপ্রম সংস্থা, ইউরোপীয় তরফে জার্মানির ভিন্টারশাল ও অস্ট্রিয়ার ওএমভি-র মতো সংস্থা৷
ইউরোপ পালটা ব্যবস্থা নিতে তৈরি
জার্মানির অর্থনীতি মন্ত্রী ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতি ওয়াশিংটনের সর্বাধুনিক পদক্ষেপের বিরুদ্ধে পালটা ব্যবস্থা নিয়ে ভাবনা-চিন্তা শুরু করার আহ্বান জানিয়েছেন৷ ‘‘ইউরোপ স্বল্প মেয়াদে এর জবাব দিতে প্রস্তুত, প্রয়োজনে অপরাপর ক্ষেত্রেও’’, বলেছেন সুইপ্রিস৷ অপরদিকে প্রসঙ্গটি নিয়ে সোমবার অবধি ইউরোপীয় ইউনিয়নের তরফ থেকে কোনোরকম মন্তব্য শোনা যায়নি৷
রাশিয়ার তরফ থেকে রবিবারেই প্রতিক্রিয়া আসে: ক্রেমলিন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে রাশিয়ায় তাদের কূটনৈতিক কর্মীসংখ্যা ৬০ শতাংশ হ্রাস করার নির্দেশ দেয়৷ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন দৃশ্যত ভেবেচিন্তেই সরাসরি মার্কিন কূটনীতিকদের বহিষ্কার না করে, মার্কিন দূতাবাস ও বাণিজ্য দূতাবাসগুলির – মার্কিন এবং রুশ – কর্মীসংখ্যা হ্রাসের নির্দেশ দিয়েছেন, আন্তর্জাতিক কূটনীতির পরিভাষায় যার অর্থ দাঁড়ায়, পুটিন দৃঢ়তা প্রদর্শন করতে চাইছেন বটে, তবে রাশিয়ায় মার্কিন বিনিয়োগ বা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত সুসম্পর্কের হানি না ঘটিয়ে৷
এসি/ডিজি (রয়টার্স, ডিপিএ)