রাশিয়া থেকে তেল আমদানি কমাতে চায় ইউরোপ
২৫ এপ্রিল ২০২২ইউক্রেনের উপর হামলার জের ধরে রাশিয়ার উপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন৷ তার ফলে রুশ অর্থনীতি ধাক্কা খেলেও ইউরোপ থেকে মস্কোর মূল আয়ের পথ বন্ধ হয় নি৷ পেট্রোলিয়াম ও গ্যাস বিক্রি করে প্রতিদিন কোটি কোটি ইউরো পাচ্ছে ভ্লাদিমির পুটিনের সরকার ও সামরিক নেতৃত্ব৷ ইউক্রেন বার বার রাশিয়া থেকে জ্বালানি আমদানির উপর ঢালাও নিষেধাজ্ঞার ডাক দিলেও সেই প্রশ্নে ইউরোপে ঐকমত্য অর্জন করা সম্ভব হচ্ছে না৷
ইইউ-র পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রধান জোসেপ বরেল জার্মানির ‘ডি ভেল্ট' সংবাদপত্রকে বলেন, এই মুহূর্তে রাশিয়া থেকে জ্বালানি আমদানির প্রশ্নে ইইউ ঐক্যবদ্ধভাবে কোনো অবস্থানে নেই৷ আগামী মাসের শেষে ইইউ শীর্ষ সম্মেলনে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবার কথা৷ তার আগে সে বিষয়ে সিদ্ধান্তের সম্ভাবনা ক্ষীণ৷ তবে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ তেল ও গ্যাস আমদানির ক্ষেত্রে রাশিয়ার উপর নির্ভরতা কমানোর জোরালো উদ্যোগ নিচ্ছে৷ বরেল মনে করেন, কোনো এক সময়ে সেটা সম্ভব হবে৷ তার মতে, তখন রাশিয়া এমন মোটা অংকের রাজস্ব হারানোর কষ্ট টের পাবে৷
অর্থাৎ ইইউ রাশিয়ার উপর ষষ্ঠ দফায় আরও একগুচ্ছ নিষেধাজ্ঞা চাপানোর যে প্রস্তুতি চালাচ্ছে, তার মধ্যে জ্বালানি অন্তর্গত হবার সম্ভাবনা নেই৷ ‘ডি ভেল্ট' সংবাদপত্রের সূত্র অনুযায়ী, চলতি সপ্তাহে সেই প্রস্তাবের খসড়া প্রস্তুত হবার কথা৷ ইউরোপের সবচেয়ে বড় তেল সরবরাহকারী দেশ হিসেবে রাশিয়ার অবস্থান অটুট থাকবে৷ ২০২০ সালের হিসেব অনুযায়ী রাশিয়া ইউরোপকে এক-চতুর্থাংশেরও বেশি পেট্রোলিয়াম সরবরাহ করেছে৷ গত বছর পেট্রোলিয়াম ও পেট্রোপণ্য রপ্তানির কারণে রাশিয়ার এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি রাজস্ব এসেছে৷ বর্তমানে শুধু ইউরোপ থেকেই রাশিয়ার দৈনিক প্রায় ৪৫ কোটি ডলার আয় হয়৷ সেইসঙ্গে ইউরোপে গ্যাস বিক্রি করে প্রায় ৪০ কোটি ও কয়লা বিক্রি করে আড়াই কোটি রাজস্ব আসে৷
ব্রিটেনের ‘টাইমস' সংবাদপত্র অবশ্য দাবি করছে, যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়া থেকে পেট্রোলিয়াম আমদানির উপর ‘স্মার্ট' নিষেধাজ্ঞা চাপানোর উদ্যোগ নিচ্ছে৷ ইইউ কমিশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ভালদিস ডমব্রোভস্কিস-কে উদ্ধৃত করে ‘টাইমস' জানিয়েছে, যে ষষ্ঠ দফার নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই সেই পদক্ষেপ থাকতে পারে৷ তবে এখনো এই প্রস্তাবের খুঁটিনাটী বিষয়গুলি চূড়ান্ত হয় নি বলে ডমব্রোভস্কিস জানিয়েছেন৷ ধাপে ধাপে রাশিয়া থেকে পেট্রোলিয়াম আমদানি কমিয়ে আনতে নির্দিষ্ট মূল্যের বেশি অংকের উপর শুল্ক চাপানো হতে পারে বলে তিনি মনে করছেন৷ মোটকথা ইউরোপের ক্ষতি এড়িয়ে রাশিয়ার উপর সর্বোচ্চ চাপ সৃষ্টি করাই হলো এমন পদক্ষেপের লক্ষ্য৷
এসবি/কেএম (ডিপিএ, রয়টার্স)