রাশিয়ায় গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে মার্কিন সাংবাদিক আটক
৩১ মার্চ ২০২৩গার্শকোভিচ সোভিয়েত-পরবর্তী রাশিয়ায় গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া প্রথম বিদেশি সাংবাদিক বলে মনে করা হচ্ছে৷ ৩১ বছর বয়সি গার্শকোভিচ যখন শিশু ছিলেন তখন তার পরিবার রাশিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্রে চলে গিয়েছিল৷ গার্শকোভিচ পুরোপুরি রুশ ভাষায় পারদর্শী৷ গতবছরের শুরুর দিকে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে যোগ দেয়ার আগে তিনি মস্কোতে এএফপির হয়ে কাজ করেছেন৷ এছাড়া ইংরেজি ভাষার সংবাদভিত্তিক ওয়েবসাইট দ্য মস্কো টাইমসেও কাজ করেছেন গার্শকোভিচ৷
মস্কো থেকে প্রায় ১,৮০০ কিলোমিটার দূরের শহর ইয়েকাতেরিনবার্গ থেকে তাকে আটক করে মস্কো নিয়ে যাওয়া হয়েছে৷ ২৯ মে শুনানির আগ পর্যন্ত তাকে সেখানেই রাখা হবে৷
রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স বলেছে, গার্শকোভিচ রাশিয়ার ভাগনার গ্রুপ নিয়ে অনুসন্ধান করছিলেন৷ ইউক্রেন যুদ্ধে এই বাহিনী রাশিয়ার হয়ে লড়ছে৷
তবে রাশিয়ার নিরাপত্তা বাহিনী ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিস এফএসবি বলছে, গার্শকোভিচকে রুশ সামরিক বাহিনীর ‘গোপন তথ্য নেয়ার চেষ্টার সময়' গ্রেপ্তার করা হয়৷ ক্রেমলিন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, গার্শকোভিচকে ‘হাতেনাতে ধরা' হয়েছে৷
রাশিয়ার নিরাপত্তা বাহিনীর একটি সূত্র রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা তাসকে জানিয়েছে, গার্শকোভিচ যে ফাইল নেয়ার চেষ্টা করেছিলেন সেগুলো ‘টপ সিক্রেট' ছিল৷ আর গার্শকোভিচ বলেছেন, তিনি গুপ্তচরবৃত্তি করছিলেন না৷
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল বলেছে, তারা গার্শকোভিচের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন৷ গার্শকোভিচ ‘মার্কিন সরকারের স্বার্থে গুপ্তচরবৃত্তি করছিলেন' বলে রাশিয়ার এফএসবি যে অভিযোগ করেছে সেটিও প্রত্যাখ্যান করেছে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল৷
অপরাধ প্রমাণিত হলে গার্শকোভিচের সর্বোচ্চ ২০ বছরের জেল হতে পারে৷
হোয়াইট হাউস গার্শকোভিচকে আটকের ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে৷ মার্কিন নাগরিকদের রাশিয়ায় না যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে৷ আর যারা এখন রাশিয়ায় আছেন তাদেরকে নিজেদের নিরাপত্তার জন্য রাশিয়া ত্যাগের পরামর্শ দিয়েছে হোয়াইট হাউস৷ গার্শকোভিচের বিরুদ্ধে আনা গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ হাস্যকর বলে মন্তব্য করেছেন হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র ক্যারিন জ্যঁ-পিয়ের৷
ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়ায় গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ‘ক্রমাগত উপেক্ষা'র সমালোচনা করেছে৷
পশ্চিমা সাংবাদিকরা ক্রমাগত রাশিয়ায় বাধার মুখে পড়ছেন৷ মস্কো ও সেন্ট পিটার্সবার্গের মতো বড় শহরের বাইরে কাজ করতে গেলে পশ্চিমা সাংবাদিকদের পিছু নেয়া হয় বলে অভিযোগ করেন পশ্চিমা গণমাধ্যমের কর্মীরা৷
অনেক রুশ নাগরিকও পশ্চিমা গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা ভয় পান কারণ ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর কঠোর সেন্সরশিপ আইন বাস্তবায়ন করা হচ্ছে৷
গার্শকোভিচকে আটক করে মস্কো পশ্চিমা বিশ্বে আটক থাকা তাদের কোনো বন্দির বিনিময় করতে চায় বলে অনেকে মনে করছেন৷ গত একবছরে মস্কো ও ওয়াশিংটনের মধ্যে এমন বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বন্দি বিনিময় হয়েছে৷
রাশিয়ায় এখনও বেশ কয়েকজন মার্কিন নাগরিক বন্দি আছেন৷
রাশিয়ার সাংবাদিকদের বিরুদ্ধেও গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ এনে তাদের গ্রেপ্তার করছে রাশিয়া৷ গতবছর ইভান স্যাফরোনভ নামের একজন শীর্ষস্থানীয় রুশ সাংবাদিককে রাষ্ট্রদ্রোহিতার দায়ে ২২ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়৷
জেডএইচ/এসিবি