রাশিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা বাল্টিক দেশগুলির
৮ সেপ্টেম্বর ২০২২লাটভিয়া, এস্টোনিয়া এবং লিথুয়ানিয়া বুধবার জানিয়েছে, রাশিয়ার নাগরিকদের ভিসা দেয়া এবং দেশে ঢুকতে দেয়া নিয়ে আরো কড়াকড়ি করা হবে। এর আগে রাশিয়ার নাগরিকদের ভিসা দেওয়ার ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
লাটভিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, শেনগেন ভিসা থাকলেও রাশিয়া এবং বেলারুশ থেকে সকলকে বাল্টিক দেশগুলিতে ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে অসহায় ব্যক্তি বা পরিবার, ট্রাকচালক এবং কূটনীতিকদের যাতায়াত করতে দেয়া হবে।
এদিন লিথুয়ানিয়ায় একটি কনফারেন্সে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। সেখানে তিনি জানান, গত কিছুদিনে রাশিয়া থেকে সীমান্ত পার করার প্রবণতা কয়েক গুণ বেড়ে গেছে। পরিস্থিতি সামলানোই মুশকিল হয়ে যাচ্ছে। ফলে এই নিয়ম চালু করা অত্যন্ত প্রয়োজন।
সম্প্রতি ইইউ ভিসা দেয়ার ক্ষেত্রে রাশিয়ার উপর একই নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে। বস্তুত, ইইউ-কেই বাল্টিক দেশগুলি অনুসরণ করল বলে মনে করা হচ্ছে। রাশিয়ার সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভিসা চুক্তি ছিল। ২০০৭ সালের সেই চুক্তি ভেঙে দিয়েছে ইইউ। এর ফলে রাশিয়ার নাগরিকদের কাছে শেনগেন ভিসা পাওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পুটিনের বক্তব্য
সম্প্রতি এক সভায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন জানিয়েছেন, পশ্চিমের নিষেধাজ্ঞার জেরে বেশ কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিয়েছে। ইস্টার্ন ইউরোপিয়ান ফোরামে বক্তৃতা করার সময় তিনি এই কথা বলেন। তবে ঠিক কোন কোন ক্ষেত্রে ক্ষতি হচ্ছে, তা তিনি স্পষ্ট করে বলেননি।
বরং পশ্চিমা বিশ্বকে একহাত নিয়ে পুটিন বলেছেন, পশ্চিম যেভাবে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, তা অবৈধ এবং অনৈতিক। রাশিয়া কখনোই তা মেনে নিতে পারেনি। তবে রাশিয়াও এর জবাব দেবে বলে পুটিন জানিয়েছেন। বস্তুত, ইউক্রেন যুদ্ধ ছয়মাস পার করে গেছে। গত কয়েকমাসে একাধিক নিষেধাজ্ঞার প্যাকেজ জারি হয়েছে রাশিয়ার উপর। এরপর সাম্প্রতিক ভিসা ব্যানের ঘটনা ঘটল।
ক্রাইমিয়া নিয়ে ইউক্রেনের দাবি
ইউক্রেনের সেনা প্রধান এক সংবাদমাধ্যমে লিখেছেন, ক্রাইমিয়ায় ইউক্রেন আক্রমণ চালিয়েছে। তার লেখায় বলা হয়েছে, ইউক্রেন থেকে মিসাইল হামলা চালানো হয়েছে ক্রাইমিয়ায়। সেখানে রাশিয়ার সেনাঘাঁটিগুলি ধ্বংস করার চেষ্টা করা হয়েছে।
ঘটনা হলো, ইউক্রেন আগে এবিষয়টি স্বীকার করেনি। ক্রাইমিয়ায় একাধিক বিস্ফোরণ হলেও ইউক্রেন জানিয়েছে, এর সঙ্গে তারা যুক্ত নয়। অন্যদিকে, রাশিয়া বলেছে, দুর্ঘটনার ফলেই এমনটা হয়েছে। বস্তুত, রাশিয়া সে সময় হুমকি দিয়েছিল, ইউক্রেন আক্রমণ চালালে তারা ফের কিয়েভ আক্রমণ করবে।
ক্রাইমিয়ায় রাশিয়ার সেনার একটি বিমানঘাঁটিতে বিস্ফোরণ হয়েছিল কিছুদিন আগেই। তাতে রাশিয়ার বিপুল ক্ষতি হয়েছিল। একজন নিহত হন।
ট্রাস-বাইডেন কথা
যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী প্রথম ফোন করেছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভালিদিমির জেলেনস্কিকে। বুধবার তিনি ফোন করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে। লিজ ট্রাস এবং বাইডেন যৌথভাবে জানিয়েছেন, তারা ইউক্রেনের পাশে আছেন। ট্রাস বলেছেন, ইউক্রেনকে সবরকম সাহায্য দেওয়া হবে।
এর আগে বরিস জনসন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ইউক্রেনের জন্য একাধিক সামরিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছিলেন তিনি। পাশাপাশি ইউক্রেনের জন্য বেসামরিক সাহায্যও লাগাতার পাঠিয়ে গেছে যুক্তরাজ্য।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, ডিপিএ, এএফপি)