রাশিয়ার কারণে সিরিয়ায় সংকট বাড়বে?
১১ মে ২০২২ইইউর আয়োজনে যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার দাতাদের ষষ্ঠ সম্মেলন হয়ে গেল৷ সেখানে ইইউর বিদেশ নীতি বিভাগের প্রধান ইয়োসেপ বোরেল সিরিয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন৷ যুদ্ধের কারণে সিরিয়ার নব্বই ভাগ মানুষই এখন দারিদ্র্যক্লিষ্ট জীবন যাপনে বাধ্য হচ্ছে৷ বোরেলের আশঙ্কা, ইউক্রেনের দিকে সবার মনযোগ চলে যাওয়ায় সিরিয়ার সংকটের বিষয়টি আড়ালে চলে যেতে পারে এবং সেরকম হলে তার ফলাফল সিরিয়ার জন্য খুব ভয়াবহ হবে৷
তিনি বলেন, ‘‘রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাবে খাদ্য এবং জ্বালানির দাম আরো বাড়বে৷ ফলে সিরিয়ার পরিস্থিতি আরো খারাপ হবে৷''
রাশিয়াকে দূরে রেখে সিরিয়া-সংকট মোকাবেলা সম্ভব?
সিরিয়ার দাতাদের ষষ্ঠ সম্মেলনে ৫৫টি দেশ এবং জাতিসংঘ, ইইউসহ মোট ২২টি আন্তর্জাতিক সংস্থা অংশ নেয়৷ কিন্তু রাশিয়াকে এবার আমন্ত্রণই জানানো হয়নি৷ সিরিয়ার ‘মিত্র দেশ' রাশিয়ার অনুপস্থিতিতেই সিরিয়া এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর জন্য অর্থ সহায়তা গত বছরের ৬.৪ বিলিয়ন ডলার থেকে বাড়িয়ে ৬.৭ বিলিয়ন ডলার করা হয়৷
মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বোরেল আরো বলেন, এবারের সম্মেলন থেকে রাশিয়া এবং সিরিয়াকে একটি বার্তাই দেয়া হলো আর তা হলো- সিরিয়ায় যথেষ্ট গ্রহণযোগ্য রাজনৈতিক সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত দেশ দুটোর বিরুদ্ধের নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হবে না, পারস্পরিক সম্পর্কেরও উন্নতি হবে না৷
কিন্তু রাশিয়ার সঙ্গে দূরত্ব বজায় রেখে সিরিয়া, বিশেষ করে সিরিয়ার পূর্ব-পশ্চিমাঞ্চলে মানবিক সহায়তা পাঠানো কার্যত অসম্ভব৷ ২০১৪ সালে চারটি চ্যানেল দিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করে সিরিয়ায় মানবিক সহায়তা পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছিল জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ৷ কিন্তু রাশিয়া এবং চীন ভেটো দেয়ায় চারটির মধ্যে তিনটি চ্যানেলই পরে আর কাজে লাগানো যায়নি৷
ইডলিব সংলগ্ন বাব-আল-হাওয়া ছিল সহায়তা পৌঁছানোর একমাত্র পথ৷ রাশিয়া ‘নরম' হওয়ায় গত বছর এই চ্যানেল উন্মুক্ত করা গেলেও জুলাইয়ে পুটিনের দেশ বেঁকে বসলে সেই পথও বন্ধ হয়ে যেতে পারে৷ সেক্ষেত্রে ভয়াবহ সংকটে পড়তে পারে প্রায় চল্লিশ লাখ মানুষের জীবন৷
ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে নিষেধাজ্ঞার ভয়াবহ চাপে থাকা রাশিয়া কি সিরিয়ার মানুষদের কাছে ত্রাণ পৌঁছানোয় বাধা হয়ে দাঁড়াবে৷ ইইউর পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রধান বোরেল তা মনে করেন না, তিনি বলেন, ‘‘আমার মনে হয় রাশিয়া তা করবে না৷ তাদের তা করা উচিত নয়৷''
প্রিয়াঙ্কা শংকর/এসিবি