রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা
৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ইউক্রেনের সরকার ও রুশপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মধ্যে অস্ত্রবিরতি পুরোপুরি অটুট না থাকলেও কোনো বড় ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি৷ শুক্রবার সন্ধ্যায় দুই পক্ষ এই বোঝাপড়ায় এসেছিল৷ এর আওতায় বন্দি বিনিময়ও হবার কথা৷ সোমবারই কিছু বন্দি বিনিময় শুরু হয়েছে বলে ইউক্রেন জানিয়েছে৷ ইউরোপীয় নিরাপত্তা ও সহযোগিতা সংস্থা ওএসসিই এই অস্ত্রবিরতির উপর নজর রাখছে৷ তবে দ্রুত কোনো রাজনৈতিক সমাধানসূত্রে পৌঁছাতে না পারলে দুই পক্ষের মধ্যে আবার সংঘাতের আশঙ্কা করছে ওএসসিই-র বর্তমান সভাপতি দেশ সুইজারল্যান্ড৷ বিচ্ছিন্নতাবাদীরা হয় সম্পূর্ণ স্বাধীনতা, অথবা রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হতে চায়৷ অন্যদিকে ইউক্রেনের সরকার দেশের অখণ্ডতা নিয়ে কোনোরকম আপোশ করতে প্রস্তুত নয়৷
দুই পক্ষের মধ্যে সাময়িক শান্তি সত্ত্বেও এই সংকটের জন্য রাশিয়ার দায় ভুলতে রাজি নয় পশ্চিমা বিশ্ব৷ তাই সোমবার রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন এক দফা নিষেধাজ্ঞা চাপানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন৷ রাশিয়ার রসনেফট, ট্রান্সনেফট ও গাসপ্রমের পেট্রোলিয়াম ইউনিটের মতো তিন বিশাল পেট্রোলিয়াম উৎপাদনকারী ও পাইপলাইন কোম্পানির বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের ঘোষণা করা হয়েছে৷ উল্লেখ্য, এই তিনটি কোম্পানির ৫০ শতাংশের বেশি মালিকানা রুশ রাষ্ট্রের হাতে৷ নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতায় তারা ইউরোপের বাজার থেকে মূলধন বা ঋণ পাবে না৷ তবে গ্যাস উৎপাদনকারীদের এখনো এই শাস্তিমূলক পদক্ষেপের বাইরে রাখা হয়েছে৷ মনে রাখতে হবে, ইউরোপের অনেক দেশ এখনো রাশিয়া থেকে গ্যাস আমদানির উপর অত্যন্ত নির্ভরশীল৷
ইইউ নেতৃত্ব অবশ্য একই সঙ্গে জানিয়েছে যে, রাশিয়া ইউক্রেন সংকট সমাধানের লক্ষ্যে গঠনমূলক ভূমিকা নিলে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া সম্ভব৷ রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন ও ইউক্রেনের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মদতকারীদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট নিষেধাজ্ঞার ফলে তারা সবাই চাপের মুখে পড়বে বলে অনুমান করছেন পর্যবেক্ষকরা৷ রুশ প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেভ অবশ্য আরও পালটা নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়েছেন৷ এর আওতায় অ্যামেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলির জন্য রুশ আকাশসীমা বন্ধ করা হতে পারে বলে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন৷
রাশিয়ার উপর চাপ বাড়াতে ইউক্রেনের নৌবাহিনী ন্যাটোর সঙ্গে কৃষ্ণসাগরে তিন দিনের সামরিক মহড়া শুরু করেছে৷ মার্কিন নেতৃত্বে ন্যাটোর এই যৌথ অভিযানের লক্ষ্য সংকটপূর্ণ এলাকায় নিরাপত্তার গ্যারেন্টি দেওয়া৷ তবে ক্রাইমিয়া রাশিয়ার দখলে চলে যাওয়ায় দক্ষিণ পশ্চিম উপকূলে এই মহড়া চালানো হচ্ছে৷ উল্লেখ্য, এর আগেও ইউক্রেন ও ন্যাটো এমন মহড়া চালিয়েছে৷ তবে প্রতিবারই রাশিয়া এর বিরোধিতা করেছে৷
এসবি/ডিজি (রয়টার্স, এএফপি)