1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রামমন্দির ট্রাস্টের ঘোষণা, জমি মসজিদকেও

৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০

অযোধ্যায় রাম মন্দির বানানোর জন্য ট্রাস্ট গঠন করল নরেন্দ্র মোদী সরকার৷ এর পাশাপাশি উত্তর প্রদেশ সরকারও ঘোষণা করেছে, অযোধ্যা জেলার ধন্নিপুর গ্রামে পাঁচ একর জমি মসজিদ বানানোর জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে৷  

https://p.dw.com/p/3XIi8
ফাইল ছবিছবি: Reuters/A. Hussain

অযোধ্যায় রাম মন্দির বানানোর প্রক্রিয়া শুরু করে দিল নরেন্দ্র মোদী সরকার৷ মসজিদ বানানোর জন্যও জমি বরাদ্দ করা হল৷ বুধবার সংসদে প্রধানমন্ত্রী মোদী ঘোষণা করেন, রামমন্দির বানানোর জন্য পনেরো সদস্যের ট্রাস্ট গঠন করেছে সরকার। তার নাম দেওয়া হয়েছে 'শ্রী রাম জন্মভূমি তীর্থযাত্রা ট্রাস্ট'৷ এই ট্রাস্ট তৈরির জন্য সুপ্রিম কোর্ট তিন মাস সময় দিয়েছিল৷ আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি সেই সময়সীমা শেষ হওয়ার কথা ছিল৷ তার চার দিন আগে নরেন্দ্র মোদী এই ট্রাস্ট গঠন করলেন৷ ঘটনাচক্রে তিন দিন পরে দিল্লির বিধানসভা নির্বাচন৷

বিরোধীদের অভিযোগ, ধর্মীয় মেরুকরণ করে অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে হারানোর মরিয়া চেষ্টা করছে বিজেপি। রাম মন্দির নিয়ে ট্রাস্ট ঘোষণার দিনও তাই এমন ভাবে রাখা হয়েছে, যাতে দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে এর প্রভাব পড়ে৷ দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল অবশ্য কোনওরকম বিতর্কের মধ্য়ে না গিয়ে ট্রাস্ট গঠনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন৷ তিনি বলেছেন, ''এই সময়ে ঘোষণা করা নিয়েও আমার কোনও আপত্তি নেই৷  চাইলে কাল বা পরশুও কেন্দ্রীয় সরকার বড় কোনও ঘোষণা করতেই পারে৷'' নির্বাচন কমিশনের যুক্তি, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সরকার এই ঘোষণা করেছে। এতে নির্বাচনী বিধি ভঙ্গ হয়নি৷ বিজেপির মুখপাত্র সুদেশ বর্মা ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ''রামলালা বা রামমন্দির তো ভোটের বিষয় নয়৷ একটা সময়সীমার মধ্য়ে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতে হত। সরকার সেটাই করেছে৷''

ট্রাস্টে কোন পনেরোজন সদস্য থাকবেন তা জানাননি প্রধানমন্ত্রী৷ পরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়েছেন, ট্রাস্টের ১৫ জন সদস্যের মধ্যে একজন দলিতকে রাখতেই হবে৷ সামাজিক সৌহার্দ্যের জন্য এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী৷

প্রধানমন্ত্রী লোকসভায় জানিয়েছিলেন, মসজিদের জন্য সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডকে পাঁচ একর জমি দেওয়ার জন্য উত্তর প্রদেশ সরকারকে বলা হয়েছে, তারা জমি দিতে সম্মত হয়েছে। এর কিছুক্ষণ পরেই উত্তর প্রদেশ সরকারের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে অযোধ্যায় জেলা সদর অফিস থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরে সোহাবলের ধন্নিপুর গ্রামে সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডকে পাঁচ একর জমি দেওয়া হবে৷ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ আসার পর বিশ্ব হিন্দু পরিষদের দাবি ছিল, অযোধ্যার চৌহদ্দিতে মসজিদ বানানোর জমি দেওয়া যাবে না৷ যেখানে মসজিদ বানানোর জমি দেওয়া হয়েছে, সেই ধন্নিপুর রাম মন্দির পরিসর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে৷ 

তবে মুসলিম নেতারা দাবি করেছেন, তারা ওই জমিতে মসজিদ বানাতে চান না৷ মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের সদস্য কাশিম রসুল ইলিয়াস ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ''আমরা সুপ্রিম কোর্টে নিজেদের দাবি জানাতে গিয়েছিলাম৷ আমাদের দাবি খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। তাই আমাদের মসজিদের জন্য আলাদা জমি চাই না৷ উত্তর প্রদেশের সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড রাজ্য সরকারের অধীনে৷ ওরা কী করবে তা বলতে পারছি না৷'' এআইএমআইএম নেতা আসাদুদ্দিন ওয়েইসিও বলেছেন, ''আমি সরকারের দেওয়া  জমিতে মসজিদ বানানোর বিপক্ষে।'' বিজেপির তরফে সুদেশ বর্মার যুক্তি, ''সরকার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ পালন করেছে৷ সুপ্রিম কোর্ট মসজিদ বানানোর জন্য পাঁচ একর জমি দিতে বলেছিল৷ সরকার দিচ্ছে৷ এর বাইরে কে কী বললেন, সেটা আমাদের কাছে অর্থহীন৷''

প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, এই ট্রাস্ট স্বাধীনভাবে রাম মন্দির নির্মাণ করবে৷ বিজেপি সূত্র জানাচ্ছে, ট্রাস্টের সদস্যদের নাম ঘোষণার পর শিলান্যাসের দিন স্থির হবে। তারপর রাম মন্দির কবে থেকে তৈরি হবে, কীভাবে তৈরি হবে, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ রামমন্দির বানানোর জন্য যে পাথর কাটার কাজ করছে, তার কী হবে, সেই সব প্রশ্নের জবাব পাওয়া যাবে৷ 

জিএইচ/এসজি (পিআইবি)