রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির বর্ষপূর্তি
২৪শে এপ্রিল, ২০১৩৷ সাভার বাসস্ট্যান্ডের কাছের সুউচ্চ ভবন ‘রানা প্লাজা’ ধসে পড়ল বিকট শব্দে৷ ধসের আশঙ্কাকে আমলে না নেয়ার পরিণাম ১,১৩৫ জন পোশাক শ্রমিক, করুণ মৃত্যু৷ আহত এক হাজারেরও বেশি মানুষের এখনো দিন কাটে আতঙ্কে৷
বাঁচা আর বাঁচানোর লড়াই
ভবন মালিক সোহেল রানার অর্থলিপ্সার নির্মম শিকার পোশাক শ্রমিকদের বাঁচানোর জন্য সরকারি উদ্যোগের অপেক্ষায় বসে থাকেননি সাধারণ মানুষ৷ দূর দূরান্ত থেকে ছুটে এসে একরকম খালি হাতেই অনেকে নেমে পড়েন উদ্ধার কাজে৷ নিজেদের প্রাণ বাজি রেখে বহু পোশাক শ্রমিককে মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরিয়ে আনেন তাঁরা৷
অসহায়ত্ব
আধুনিক যন্ত্রপাতি ও সুযোগ-সুবিধার অভাব থাকলেও, ঘটনাস্থলে উদ্ধারকর্মীর কমতি ছিল না৷ তবুও অনেকেই চলে গেছেন স্বজনদের কাঁদিয়ে৷ এ ছবির মতো অবস্থাতেও উদ্ধার করতে হয়েছে অনেক মৃতদেহ৷ ৮০০-রও বেশি মৃতদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা গেলেও, অনেকের পরিচয় আজও জানা যায়নি৷ কিছু লাশ শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে৷ কিন্তু ৮৭ জনের জন্য নতুন করে নমুনা চাওয়ার উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার৷
রেশমার ফেরা
রানা প্লাজা ধসের ১৭তম দিনে ঘটে বিস্ময়কর এক ঘটনা৷ ধ্বংসস্তূপের নীচ থেকে আর কাউকে জীবন্ত উদ্ধার করা সম্ভব নয় ভেবে সাধারণ উদ্ধারকারীদের অনেকে যখন ঘরে ফিরছেন, তখনই প্রায় সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয় ২২ বছর বয়সি পোশাক শ্রমিক রেশমাকে৷
এখনো কাঁদে প্রাণ
ধসের পর ক্ষতিগ্রস্থদের সহায়তায় এগিয়ে আসেন অনেকে৷ বিজিএমইএ ক্ষতিপূরণ হিসেবে দিয়েছে মাত্র ১৪ কোটি টাকা৷ প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ১২৭ কোটি টাকা জমা হয়েছে ঠিকই, তবে বিতরণ করা হয়েছে ২২ কোটি টাকা৷ ভবন ধসের বর্ষপূর্তিতে ক্ষতিগ্রস্তদের মুখে শোনা গেছে হতাশা আর ক্ষোভের কথা৷ পপি বেগমকে কেড়ে নিয়েছে রানা প্লাজা৷ ঢাকার জুরাইন কবরস্থানে তাঁর কবর জিয়ারত করতে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন বোন রোজিনা৷
মায়ের কান্না
জুরাইন কবরস্থানে রশিদা খাতুনের কবরের পাশে সফুরা খাতুন৷ ভবন ধসের প্রায় দশ মাস পর, ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে তিনি পেয়েছিলেন সন্তানের লাশ খুঁজে পাওয়ার সান্ত্বনা৷
রানা প্লাজায় আহাজারি
রানা প্লাজার সামনের স্মৃতি স্তম্ভে শ্রদ্ধা জানাতে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন নিহতদের স্বজনরা৷
ছবি আর স্মৃতি
জুরাইন কবরস্থানে নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করতে মূলত তাঁদের পরিবারের সদস্যরাই এসেছিলেন৷ রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির বর্ষপূর্তিতে আয়োজন ছিল অনেক, তবে জুরাইন কবরস্থানে ভিড় ছিল না তেমন৷ সেখানে এভাবেই হারানো স্বজনের ছবি হাতে তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করছিলেন এক নারী৷
প্রদর্শনী
রানা প্লাজা ধসের ছবি নিয়ে ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে অনুষ্ঠিত হয়েছে আলোকচিত্র প্রদর্শনী৷ বাংলাদেশ ও দেশের বাইরের বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত ৬০ জন আলোকচিত্র সাংবাদিকের তোলা ছবি স্থান পেয়েছে এই প্রদর্শনীতে৷
ফুলের জলসা
রানা প্লাজা ধসে নিহতদের ফুলেল শ্রদ্ধা জানিয়েছে বেশ কিছু শ্রমিক সংগঠন৷
মোনাজাত
জুরাইন কবরস্থানে নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করে মোনাজাত৷