‘জার্মানিতে অ্যাসাইলাম পাওয়া লটারির মতো'
২৮ মার্চ ২০১৭কনস্টানৎস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা গত সোমবার তাদের সমীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করেন৷ দৃশ্যত জার্মানির সারলান্ড ও ব্রেমেন রাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করলে, তা পাবার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি: যথাক্রমে ৬৯ শতাংশ ও ৫৫ দশমিক ৭ শতাংশ৷ অ্যাসাইলাম পাবার সম্ভাবনা সবচেয়ে কম বার্লিন ও স্যাক্সনিতে: এই দু'টি রাজ্যে প্রতি চারজন রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীর মধ্যে একজনের আবেদন মঞ্জুর হয়৷
সমীক্ষাটির এক রচয়িতা হলেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী গেরাল্ড শ্নাইডার৷ বিভিন্ন রাজ্যের মধ্যে এই ব্যবধান দেখে তিনি এর নাম দিয়েছেন অ্যাসাইলাম লটারি৷
উদ্বাস্তুদের রাজ্য বাছার অধিকার নেই
উদ্বাস্তুরা জার্মানির যে রাজ্যে বাস করতে চান, ঠিক সেখানে গিয়ে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদনপত্র দাখিল করার অধিকার তাদের নেই৷ ফেডারাল অভিবাসন ও উদ্বাস্তু দপ্তর বিএএমএফ বা ‘বাম্ফ' অ্যাসাইলাম দেওয়ার দায়িত্বে বটে, কিন্তু সে কাজটা সাধারণত আঞ্চলিক (অর্থাৎ রাজ্যের) ‘বাম্ফ' অফিসগুলিই সম্পন্ন করে থাকে৷
শ্নাইডার ও তাঁর যুগ্ম-লেখিকা লিজা রিডেল-এর প্রকাশিত জরিপে আরো দেখা যাচ্ছে যে, বিভিন্ন রাজ্যের অ্যাসাইলাম প্রদানের নীতি আরো একটি উপাদানের উপর নির্ভর করে: সেটি হল, আবেদনকারী কোন দেশ থেকে আসছেন, তার উপর৷ সিরিয়া থেকে আসা উদ্বাস্তুদের আবেদন গ্রাহ্য হবার হার জার্মানির ১৬টি রাজ্যে মোটামুটি এক; কিন্তু ইরাকি বা আফগানদের ক্ষেত্রে রাজ্য বিশেষে বিপুল ফারাক থাকে৷
নিম্ন স্যাক্সনি হলো উত্তর-পশ্চিম জার্মানির সবচেয়ে বড় রাজ্য; সেখানে ২০১০ সাল থেকে ২০১৫ সাল অবধি ইরাক থেকে আসা ৭৫ দশমিক ৫ শতাংশ উদ্বাস্তুর অ্যাসাইলামের আবেদন মঞ্জুর হয়েছিল৷ সেক্ষেত্রে জার্মানির পূর্বাঞ্চলের স্যাক্সনি-আনহাল্ট রাজ্যে এর মাত্র অর্ধেক ইরাকি অ্যাসাইলাম পান৷ জার্মানির বৃহত্তম রাজ্য নর্থ রাইন-ভেস্টফালিয়াতে আফগান অ্যাসাইলাম প্রার্থীদের ৩৪ দশমিক ৪ শতাংশ জার্মানিতে থাকার অধিকার পান৷ ব্রান্ডেনবুর্গে এই অনুপাত ছিল মাত্র ১০ শতাংশ৷
অ্যাসাইলামের আবেদন নামঞ্জুর হলে জার্মানি ত্যাগ বা জার্মানি থেকে বহিষ্কারের ক্ষেত্রেও বিভিন্ন রাজ্যের নীতি আলাদা৷ সম্প্রতি আফগানিস্তানকে ‘‘নিরাপদ'' দেশ হিসেবে বিবেচনা করা হবে কিনা এবং সেখানে উদ্বাস্তুদের ফেরত পাঠানো যাবে কিনা, তা নিয়ে বিতর্ক চলেছে৷
স্থানীয় মনোভাবের প্রভাব?
‘বাম্ফ'-এর আঞ্চলিক অফিসের কর্মকর্তাদের উপর স্থানীয় মানুষজনের উদ্বাস্তু সংক্রান্ত মনোভাবের প্রভাব পড়ে, বলে শ্নাইডার ও রিডেলের ধারণা৷ যে রাজ্যে বহিরাগত বিদ্বেষ ও বিদেশিদের আবাস ইত্যাদির উপর আক্রমণ যত বেশি, সে রাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন নাকচ হওয়ার সম্ভাবনাও তত বেশি – দেখেন তারা৷
এসি/ডিজি (এএফপি, কেএনএ)