1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

যে সফরে মমতা দূরে, তিস্তা চুক্তিও দূরে

২ অক্টোবর ২০১৯

প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে তিস্তার পানিবণ্টন ইস্যুই প্রাধান্য পাবে৷ বাংলাদেশ সরকার মনে করে, তিস্তার পানি নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সদিচ্ছার ঘাটতি নেই৷

https://p.dw.com/p/3QeKC
Bangladesch PK Premierministerin Sheikh Hasina
ছবি: PID

কিন্তু প্রশ্ন হলো, মমতা ব্যানার্জিকে এবার তিনি রাজি করাতে পারবেন কিনা৷

বৃহস্পতিবার চার দিনের সফরে ভারতে যাচ্ছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ এটা দ্বিপাক্ষিক সফর নয়৷ শেখ হাসিনা ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম (ডাব্লিউইএফ)-এর ভারতীয় শাখা ইন্ডিয়ান ইকোনমিক ফোরাম-২০১৯ এ যোগ দিতে যাচ্ছেন৷ তবে এই সফরে ভারতের সাথে দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে আলোচনা হবে৷ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সাথে শেখ হাসিনার বৈঠক হবে ৫ অক্টোবর৷ ওইদিন বিকালে ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন তিনি৷

দ্বিতীয় মেয়াদে মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর শেখ হাসিনার এটাই প্রথম ভারত সফর৷ ভারতে বাংলাদেশের হাই কমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী এরইমধ্যে সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘‘তিস্তা ও রোহিঙ্গা ইস্যুসহ স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সব বিষয়ে দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে বিস্তারিত আলোচনা হবে৷ তবে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের আগে আমরা কোনো ধারণা পোষণ করতে পারছি না৷'' ভারতের সাথে বাংলাদেশের শিল্প-বাণিজ্য, যোগাযোগসহ ৮-১০টি বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে৷
জানা গেছে, মোদীর সাথে শেখ হাসিনার বৈঠকে ৭টি অভিন্ন নদীর পানিবণ্টনসংক্রান্ত কমিটি গঠন, গঙ্গা ব্যারাজ ফিজিবিলিটি স্টাডির জন্য যৌথ কমিটি গঠন এবং আবহাওয়া পূর্বাভাস সংক্রান্ত সহযোগিতা প্রাধান্য পাবে৷ তাই তিস্তা ইস্যুটিই সামনে থাকছে৷

'তিস্তা নিয়ে কিছু হওয়ার সম্ভাবনা আমি দেখছি না'

১৯৮৭ সালের পর থেকে তিস্তার পানি নিয়ে ভারতের সাথে কোনো চুক্তি নেই বাংলাদেশের৷ একতরফাভাবে তিস্তার পানি প্রত্যাহার করে নিচ্ছে ভারত৷ ফলে বাংলাদেশের তিস্তা অববাহিকায় পানিসংকট চলছে৷ ২০১১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ভারতের তখনকার প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং-এর ঢাকা সফরে তিস্তা পানি চুক্তি সই হওয়ার কথা ছিল৷ পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিরও তখন ঢাকা আসার কথা ছিল৷ কিন্তু মমতা শেষ পর্যন্ত আসেননি৷ তিস্তা চুক্তিও হয়নি৷ ২০১৫ সালে মমতা একাই ঢাকায় এসেছিলেন৷ আর ঢাকায় বসেই তিনি তিস্তার পানি দেয়া যাবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন৷ তার কথা, তিস্তায় দেয়ার মতো পানি নেই৷ পরিবর্তে তিনি তোর্সা নদীর পানিবণ্টনের প্রস্তাব দেন৷

মোদী সরকার প্রথম দফায় ক্ষমতায় এসেই বাংলাদেশের সঙ্গে তিস্তা চুক্তির ব্যাপারে আন্তরিকতা দেখায়৷ কিন্তু ভারতের আইন অনুযায়ী, কেন্দ্র সিদ্ধান্ত নিলেই হবে না৷ রাজ্যের অনুমোদন লাগবে৷ এবার দ্বিতীয় দফায় মোদী সরকার আরো শক্তিশালী এবং মমতা ব্যানার্জি আগের চেয়ে দুর্বল বলে মনে করা হচ্ছে৷ তাহলে এবার কি চিস্তার পানি পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

'মোদী সরকার আন্তরিকভাবে তিস্তার পানি দিতে চায় বলে মনে হয় না'

আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিশ্লেষক অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী একটি আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে যাচ্ছেন ভারতে৷ সেখানে সাইড লাইনে ভারতের সাথে বসবেন৷ এটা কোনো সামিট মিটিং না৷ সামিট মিটিং হলে আমরা বলতে পারতাম কিছু হবে৷ তিস্তা নিয়ে কিছু হওয়ার সম্ভাবনা আমি দেখছি না৷ এজন্যই তো ওরা এখন অভিন্ন সাতটি নদীর কথা বলছে৷ আর মমতা ব্যানার্জিকে তো রাজি করাতে হবে৷ তিস্তায় পানি আনতে হলে সিকিম থেকে আনতে হবে৷ আর সিকিম থেকে দিল্লি পানি আনবে না৷ এখানে নানা ধরনের রাজনীতি আছে৷''

তিনি আরো বলেন, ‘‘আমি মনে করি, এবার যদি রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে দিল্লি বড় আকারে সাপোর্ট দেয়, দিল্লি মিয়ানমারকে যদি আরো চাপ দেয় তাহলে সেটাই শুনতে আমরা পছন্দ করব৷''

অন্যদিকে সাবেক রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল (অব.) শহীদুল হক বলেন, ‘‘মমতা ব্যানার্জি রাজনৈকিভাবে দুর্বল হয়ে গেছে মনে করা ঠিক না৷ আসামে এনআরসি করে শেষ পর্যন্ত হিন্দুরাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷ এটা মোদী সরকারের জন্য বুমেরাং হয়েছে৷ তাই চাপে ফেলে মমতার কাছে থেকে তিস্তার পানি আনা সম্ভব হবে বলে আমার মনে হয় না৷ আর মোদী সরকার আন্তরিকভাবে তিস্তার পানি দিতে চায় বলে আমার মনে হয় না৷ ভারতীয় পত্রপত্রিকায় নেতাদের বক্তব্য দেখে তাই বোঝা যায়৷ এদিকে বিহারে সমস্যা হচ্ছে, তিস্তা ব্যারাজের কারণে৷ তাই আমি কোনা আশা দেখছি না তিস্তা নিয়ে৷''
 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য