1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

যা যা করলে পূজা আরো ‘কল্যাণকর’ হবে

১১ অক্টোবর ২০১৬

ধর্মে নির্দেশ না থাকলেও ধর্মীয় উৎসবের সঙ্গে এমন কিছু বিষয় জড়িয়ে যায়, যেসব খুব দরকারি নয়, উপকারীও নয়৷ পূজার আয়োজনেও এমন অনেক বিষয়ই চোখে পড়ে৷ সেগুলোকে যতটা সম্ভব নিয়ন্ত্রণ করে পূজাকে আরো কল্যাণকর করা কিন্তু অসম্ভব নয়৷

https://p.dw.com/p/2R2N4
Bangladesch Durga Puja Festival
ছবি: DW/M. Mamun

অপচয় কমানো
পূজায় মাত্রাতিরিক্ত ব্যয়ের কথা ধর্মগ্রন্থে লেখা নেই৷ কিন্তু নানা কারণে, নানাভাবেই হয় অপচয়৷ এ বছর বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দুর্গা প্রতিমাটি গড়া হয়েছে নোয়াখালীর চৌমুহনী সর্বজনীন বিজয়া দুর্গা মন্দিরে৷ সাততলা ভবনের সমান উঁচু মূর্তিটি বানাতে খরচ হয়েছে ৩৫ লক্ষ টাকা৷ দুর্গা পূজায় লক্ষ্মী, সরস্বতী, গণেশ, কার্তিক আর অসূরেরও মূর্তি লাগে৷ একটির তুলনায় অন্যটি খুব ছোট বা বড় হলেও চলে না৷ তাই চৌমুহনীর ওই পূজায় দুর্গা হয়েছে ৭১ ফুট উঁচু৷ লক্ষ্মী ৪৫ ফুট, সরস্বতী ৪০ ফুট, গণেশ ৩৫ ফুট আর কার্তিকের মূর্তিটি হয়েছে ৩০ ফুট উঁচু৷

এত বড় বড় মূর্তি গড়লে মিডিয়ার প্রচার আর দর্শনার্থীদের প্রশংসা নিশ্চয়ই পাওয়া যায়, কিন্তু সেই প্রচার বা প্রশংসায় কি পুণ্য বাড়ে?
এমন পূজা আয়োজনে যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় হয়েছে তার বড় একটা অংশই কি ‘অপচয়' নয়? আয়োজকরা নিশ্চয়ই জানেন, এই পূজার সময়ও বাংলাদেশের অনেক মানুষ দারিদ্র্যের কষ্ট সয়েছেন৷ ৩৫ লক্ষের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ কয়েকজনের কষ্ট লাঘবেও তো ব্যয় করা যেতো! চৌমুহনীর অপুষ্টিতে ভোগা, শিক্ষার অধিকার বঞ্চিত কোনো শিশু, দুঃস্থ মুক্তযোদ্ধা বা শিল্পী কিংবা কোনো বেকার যুবক বা যুবতীর উপকারেও তো আসতে পারতো কিছু টাকা!

সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চা
ঢাক-ঢোলের আওয়াজ ছাড়া অনেক পূজার আয়োজনই যেন অপূর্ণ থেকে যায়৷ বিশেষ করে দূর্গা পূজায় ঢাকী না থাকলে তো চলেই না৷ পুজোর সঙ্গে সংগীতেরও খুব ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক৷ ভারতের পশ্চিমবঙ্গে তো দূর্গা পূজাকে ঘিরে সাহিত্য, সংগীতাঙ্গনেও শুরু হয় উৎসব৷ বাংলাদেশে সেই তুলনায় কম হলেও পূজাকে ঘিরে সাহিত্যচর্চা এবং সংগীতের কিছু আয়োজন হতেই পারে৷ পূজার সময় দেশের প্রতিটি শহরে আয়োজন করা যেতে পারে ভক্তিমূলক গানের প্রতিযোগিতা৷ সবাই জানেন, শ্যামা সংগীত ছাড়া হিন্দুদের ভক্তিমূলক গান অনেকটা অসম্পূর্ণই থেকে যায়৷ আর প্রতিযোগিতায় শ্যামা সংগীত থাকা মানে শুধু জন্ম ও মৃত্যু বার্ষিকীর বাইরে গিয়েও কাজী নজরুল ইসলামকে শ্রদ্ধা জানানোর সুযোগ৷ নজরুল যে অনেক শ্যামা সংগীতেরও শ্রষ্টা, তাঁর অনেক শ্যামা সংগীত যে এখনো জনপ্রিয় তা কে না জানে! 

Deutsche Welle DW Ashish Chakraborty
আশীষ চক্রবর্ত্তী, ডয়চে ভেলেছবি: DW/P. Henriksen

পরিবেশবান্ধব পূজা
দুই-তিন দশক আগেও বিশেষত মাটি, বাঁশ আর রং দিয়েই মূর্তি তৈরি হতো৷ কিন্তু এখন নানা রকমের জিনিস দিয়ে তৈরি হয় মূর্তি৷ মূর্তির অনেক উপাদানই এখন পরিবেশের ক্ষতি করে৷ তাই কাগজের মণ্ড বা এই জাতীয় অন্য কোনো পরিবেশবান্ধব উপাদান দিয়েও তৈরি করা যেতে পারে মূর্তি৷ এতে খরচ কমবে, পরিবেশও বাঁচবে৷ ভারতের মুম্বাইতে ইতিমধ্যে কাগজের মন্ড দিয়ে তৈরি মূর্তি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে৷ মুম্বাইয়ের নায়িকা শিল্পা শেঠীও নিজের বাড়িতে কাগজের মন্ড দিয়ে তৈরি মূর্তি দিয়েই গণেশ পূজা করেছেন৷ আজকাল অনেক জায়গায় মূর্তিতে ঘরে তৈরি রংয়ের ব্যবহারও ফিরে এসেছে৷ এর ফলে সীসার ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বাঁচছে সবাই৷

নদী রক্ষা
প্রতিমা বিসর্জনের ফলে নদীর পানির ক্ষতি এড়াতে ভারতে ইতিমধ্যে ব্যবস্থা নেয়া শুরু হয়েছে৷ কোথাও কোথাও সব ধরণের মূর্তি নদীতে বিসর্জন দেয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞাও জারি হয়েছে৷ তাই অনেক মূর্তিই শুধু বায়ো-ডিগ্রেডেবেল মেটিরিয়াল, অর্থাৎ পচনশীল উপকরণ দিয়েই তৈরি করা হচ্ছে৷ এমন মূর্তি নদীতে বিসর্জন দিলে কয়েকদিনের মধ্যেই প্রতিমা পানিতে মিশে যায়৷ সব জায়গাতেই এমন মূর্তির চল বাড়ানো যেতে পারে৷

আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য