বিদায় ‘গজল সম্রাট'
১৪ জুন ২০১২দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর বুধবার মারা গেলেন জনপ্রিয় গজল শিল্পী মেহদি হাসান৷ মৃত্যুকাল তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর৷ তবে অসুস্থতার কারণে গত ১০ বছর ধরে তিনি আর গান গাইতে পারেননি৷
১৯২৭ সালে তৎকালীন ভারতে জন্ম গ্রহণ করেন এই মহান শিল্পী৷ পরে ১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্ত হলে সপরিবারে মুসলিম অধ্যুষিত পাকিস্তানে পাড়ি জমান মেহদি হাসান৷ তবে কর্মজীবনের প্রথমদিকে সাইকেল দোকানে এবং গাড়ি মেরামতের কাজ করতে হয়েছে এই প্রতিভাবান শিল্পীকে৷ পরে তাঁর গানের প্রতিভা বিকশিত হলে তিনি সেসব কাজ ছেড়ে একনিষ্ঠভাবে সুরের ভূবনে মনোনিবেশ করেন৷ পাকিস্তানের ঘরে ঘরে, বাজারে ও যানবাহনে প্রায়ই শোনা যায় মেহদি হাসানের গজল৷ এছাড়া পাকিস্তানের তিন শতাধিক চলচ্চিত্রে স্থান পেয়েছে তাঁর সুর ও গান৷
এমন বড় মাপের সুরস্রষ্টার মৃত্যুতে শোকাহত ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সংগীত জগত৷ ভারতের জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী লতা মঙ্গেশকর মেহদি হাসান'কে বলতেন ‘স্রষ্টার কণ্ঠ'৷ তাঁর মৃত্যুতে মঙ্গেশকর বলেন, ‘‘তাঁর মতো শিল্পী হাজার বছরে একজনই জন্মায়৷ তাঁর প্রয়াণে সংগীত জগত এক মহান ও কিংবদন্তী শিল্পীকে হারালো৷''
মেহদি হাসানের কাছে গান শিখেছিলেন জনপ্রিয় শিল্পী তালাত আজিজ৷ তিনি বলেন, ‘‘আর কখনও দ্বিতীয় মেহদি হাসান আসবে না৷ আমি তাঁর শিষ্য ছিলাম৷ আমি তাঁর সাথে অনেক সময় কাটিয়েছি৷ আমার কাছে তিনি একজন তারকা৷ তিনি গজল জগতের এক মূল্যবান সম্পদ ছিলেন৷''
বাংলাদেশের জনপ্রিয় শিল্পী শাহনাজ রহমতউল্লাহ মেহদি হাসানের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে বলেন, ‘‘মেহদি হাসান শিল্পী হিসেবে যেমন ছিলেন রুচিশীল, মানুষ হিসেবেও তাই৷ তাঁর কথা বলা ও ব্যবহার এতটাই মার্জিত ছিল যে, তাঁর ব্যক্তিত্বের প্রভাব যে কাউকে ছাড়িয়ে যেত৷ গজলের দরবারের শাহেনশাহ ছিলেন তিনি৷ তবে তিনি গজলকে শাসন করেননি, ছড়িয়ে দিয়েছেন৷''
এএইচ / ডিজি (এপি, পিটিআই)