মৃত্যুলীলা সত্ত্বেও স্পেনে আশার আলো
২৮ মার্চ ২০২০ইউরোপে ইটালির পর স্পেনই করোনা সংকটের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷ শুক্রবারও সংক্রমণের গতি থামার কোনো লক্ষণ দেখা যায় নি৷ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সূত্র অনুযায়ী আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ৬৪,০০০ ছাড়িয়ে গেছে, মৃতের সংখ্যা ৪,৮০০-রও বেশি৷
এমন মারাত্মক পরিস্থিতি সত্ত্বেও স্পেনের প্রশাসনের স্বাস্থ্যখাতে জরুরি অবস্থার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফার্নান্দো সিমন কিছুটা আশার আলো দেখছেন৷ তিনি বলেন, সংক্রমণ বৃদ্ধির ১৪ শতাংশ হার সাম্প্রতিক দিনগুলির তুলনায় সবচেয়ে কম৷ স্পেন মহামারির উচ্চতম মাত্রা ছুঁতে চলেছে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন৷ তারপর সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার কমে যেতে পারে৷ সেক্ষেত্রে পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি হবে৷ করোনায় আক্রান্ত যে সব মানুষ চিকিৎসার শেষে সুস্থ হয়ে উঠেছেন, তাদের সংখ্যাও বাড়ছে৷ বৃহস্পতিবার ৪,০০০ এমন মানুষের আরোগ্যের খবর পাওয়া গিয়েছিল৷ শুক্রবার সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০,০০০৷
সার্বিকভাবে কিছুটা উন্নতি সত্ত্বেও রাজধানী মাদ্রিদ ও আশেপাশের এলাকার পরিস্থিতি বিশেষজ্ঞদের দুশ্চিন্তা দূর করতে পারছে না৷ সেখানকার হাসপাতালগুলি রোগীদের ঠিকমতো চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারছে না৷ প্রায় ১,৩০০ মানুষ গুরুতর অবস্থায় আইসিইউ-তে রয়েছেন৷ এক বাণিজ্যমেলা প্রাঙ্গনে ৫,০০০ শয্যার অস্থায়ী হাসপাতাল গড়ে তুলেও চাহিদা মেটানো সম্ভব হচ্ছে না৷
স্পেনে ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে করোনা ভাইরাস সংক্রমণও বর্তমান সংকটকে আরও কঠিন করে তুলছে৷ অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশানালের হিসেব অনুযায়ী মোট ৯,৪৪৪ স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন৷ বিশ্বের অন্য কোনো দেশে এমন অবস্থা দেখা যায় নি৷ ফলে স্পেনে রোগীদের সেবার কাজ কঠিন হয়ে উঠেছে৷ অনেক স্বাস্থ্যকর্মী বার বার জানিয়েছেন, যে তাঁদের হাতে সংক্রমণ থেকে দূরে থাকতে মাস্ক, গ্লাভস বা গাউনের মতো ন্যূনতম সরঞ্জাম নেই৷ পরিস্থিতির উন্নতির জন্য অ্যামনেস্টি কর্তৃপক্ষের উপর চাপ বাড়াচ্ছে৷
শুক্রবার স্পেনের সংসদ সরকারের প্রস্তাব অনুযায়ী জরুরি অবস্থার মেয়াদ আরও দুই সপ্তাহের জন্য বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ উল্লেখ্য, গত ১৫ই মার্চ থেকে গোটা দেশে কড়া হাতে লকডাউন কার্যকর করা হচ্ছে৷ স্পেনের মন্ত্রিসভা শুক্রবার কর্মী ছাঁটাই বন্ধ করতে পদক্ষেপ নিয়েছে৷ শ্রমমন্ত্রী ইয়োলান্দা দিয়াস বলেন, এমন স্বাস্থ্য সংকটের ফায়দা তুলে কেউ এ দেশে কর্মী ছাঁটাই করতে পারবে না৷
এসবি/এসিবি (ডিপিএ, রয়টার্স, এপি)