মুম্বই হামলায় অভিযুক্ত পাকিস্তানিদের বিচারের দাবি জানাল ভারত
২৬ নভেম্বর ২০১১হামলাকারীদের একজন আজমল কাসভ বন্দি রয়েছে ভারতে৷
২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর তারিখে এই দশজন জঙ্গি একসঙ্গে হামলা চালায় মুম্বই শহরের পাঁচতারা হোটেল তাজমহল প্যালেস অ্যান্ড টাওয়ারে, ছত্রপতি শিবাজি রেলওয়ে স্টেশন চত্বরে, লেওপোল্ড ক্যাফেতে, শিশু ও মহিলাদের হাসপাতাল কামায়, ইহুদিদের একটি কম্যুনিটি সেন্টার নরিম্যান হাউজে, মেট্রো সিনেমাহলে এবং সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের পিছনের দিকেও বিস্ফোরণ ঘটায় ওই জঙ্গিরা৷ মুম্বই বন্দর এলাকার মাজাগাঁওতে ঘটায় বিস্ফোরণ৷ তবে সবচেয়ে বড়মাপের হামলা তারা চালায় রেলওয়ে স্টেশনে এবং হোটেলে৷ যেখানে নির্বিচারে সাধারণ মানুষদের হত্যা করেছিল এই উগ্র ইসলামপন্থী পাকিস্তানি জঙ্গিরা৷ মোট ১৬৬ জনের মৃত্যু হয় তিনদিনের এই জঙ্গি হামলায়৷ আহতের সংখ্যা ছিল ৩০৮ জন৷
পাকিস্তান ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন লশকর এ তৈবার পাঠানো এই আত্মঘাতী জঙ্গি দলে ছিল মোট দশজন সশস্ত্র যুবক৷ ভারতের ন্যাশনাল সিকিওরিটি গার্ড বা এনএসজি-র উদ্যোগে এই জঙ্গিদের খতম করতে বিশেষ অপারেশন ব্ল্যাক টর্নাডো শুরু হয় ২৬ নভেম্বর থেকে৷ হোটেলটিকে দখল করে রাখা জঙ্গিদের মধ্যে নয়জন নিহত হয় এই অপারেশনে৷ একমাত্র জীবিত জঙ্গি আজমল কাসভ ধরা পড়ে যায়৷ ভারতীয় আদালতে তার বিচারে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করা হলেও, এখনও তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়নি৷
গোটা বিশ্ব থেকে এই নারকীয় হামলার তীব্র নিন্দা শোনা গেছে৷ ভারতের তরফে এই হামলার নেপথ্যে থাকা লশকর নেতাদের নাম পরিচয় পাকিস্তানের কাছে দেওয়া হলেও এ পর্যন্ত তাদের কোনরকম বিচার করেনি পাকিস্তান৷ ভারতের পরারষ্ট্রমন্ত্রী এস এম কৃষ্ণা শনিবার সকালে নতুন দিল্লিতে সাংবাদিকদের জানান, আরও একবার পাকিস্তানের প্রতি ভারতের তরফ থেকে মুম্বই হামলার নেপথ্যের ষড়যন্ত্রকারীদের দ্রুত বিচারের দাবি জানানো হচ্ছে৷ পাকিস্তানের কাছে সেই ব্যক্তিদের নাম পরিচয় এবং তাদের বিরুদ্ধে যথেষ্ট প্রমাণ সহ যাবতীয় তথ্য পাঠিয়ে দেওয়া হলেও, এ পর্যন্ত কোনরকমের উদ্যোগ দেখা যায়নি ইসলামাবাদের তরফ থেকে৷ পাকিস্তান মুম্বই হামলার নেপথ্যের ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে নয়জনকে গ্রেপ্তার করলেও তাদের বিচার এখনও শুরু করেনি, জানান কৃষ্ণা৷ মুম্বই হামলার সন্দেহভাজন প্রধান ষড়যন্ত্রকারী লশকর এ তৈবার শীর্ষ জঙ্গি জাকিউর রহমান লাখভি-র নাম উল্লেখ করে কৃষ্ণা আরও জানান, এ বিষয়ে পাকিস্তানের অবহেলা দেখে ভারত হতাশ৷
প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়
সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম