মুম্বই হামলা
২৫ জুন ২০১২৩০ বছর বয়েসি হামজা আদতে ভারতীয়৷ পরবর্তীকালে সে সিমি বা ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের সঙ্গে যোগসাজশ করে পাকিস্তানে চলে যায়৷ সেখানে সে কুখ্যাত পাকিস্তান-ভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়বার সক্রিয় সদস্য হয়ে ওঠে৷ বিস্ফোরক লাগানো থেকে শুরু করে জঙ্গিদের অস্ত্র প্রশিক্ষণ সবকিছুতেই পারদর্শী ছিল ২০০৮ সালের মুম্বই হামলার জঙ্গিদের অন্যতম পাকিস্তানি হ্যান্ডলার আবু হামজা৷
লস্করের ছত্রছায়ায় সন্ত্রাসের সবকিছুতে সিদ্ধহস্ত হয়ে ওঠে সে৷ করাচি ও পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে হামজা নাকি বেশ কয়েকটি জঙ্গি ক্যাম্প চালাতো৷ এছাড়া পাকিস্তানেও বেশ কয়কেটি সন্ত্রাসমূলক কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত ছিল সে৷ ২০০৮ সালে মুম্বই হামলার ঠিক আগে ঔরঙ্গাবাদে প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র, বিস্ফোরক ও আরডিএক্স উদ্ধার হয়৷ সেই সময়ও উঠে এসেছিল হামজা ওরফে সৈয়দ জাবিউদ্দিনের নাম৷ কিন্তু তখন হামজার টিকি ছুঁতে পারেননি গোয়েন্দারা৷
শোনা যায়, ভারতীয় হওয়ায় তার ওপর জঙ্গিদের হিন্দির পাঠ শেখানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল৷ ২৬/১১ হামলার আগে কাসভ ও তার সঙ্গীদের হিন্দি শিখিয়েছিল এই হামজাই৷ এমনকি, হামলার সময় কাসভদের প্রয়োজনীয় নির্দেশও দিয়েছিল এই প্রধান চক্রী৷ শুধু তাই নয়, মুম্বই হামলার অপারেটর হিসেবেও কাজ করেছিল হামজা৷
গোয়েন্দা বিভাগের সূত্র অনুযায়ী, বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন নামে পরিচিত ছিল হামজা৷ সৈয়দ জাবিউদ্দিন, জাবি আনসারি, রিয়াসাত আলি, আবার কখনও বা আবু জিন্দাল নাম নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় আত্মগোপন করে বেড়াতো এই জঙ্গি৷
প্রথমে এই নামের গণ্ডগোলের কারণে হামজাকে চিহ্নিত করতে পারছিলেন না গোয়েন্দারা৷ বহুদিন ধরেই তারা ধন্দে ছিলেন যে, ফোনে কাসভদের কে নির্দেশ দিচ্ছে! ফলে কাসভদের সঙ্গে তাদের পাকিস্তানি এজেন্টদের কথোপকথনের অডিও টেপ পরীক্ষা করেন গোয়েন্দারা৷ সেখানে হামজার গলার স্বরের সঙ্গে জিন্দালের গলার স্বর মিলিয়ে দেখার পর, তারা নিশ্চিত হন যে আবু জিন্দাল ও আবু হামজা একই ব্যক্তি৷ শেষে আবু ধাবি থেকে দিল্লি আসার পথে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়৷
জানা গেছে, আদালত তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে৷ পুলিশের দাবি, আবু হামজা ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশসহ নানা দেশে বিভিন্ন নামে নাশকতামূলক নেটওয়ার্ক তৈরি করার কাজ করতো৷ তাই তার গ্রেপ্তারিতে এই মুম্বই হামলার অনেক জট খুলবে বলে মনে করা হচ্ছে৷
ডিজি / জেডএইচ (রয়টার্স, পিটিআই)