মুফতি হারুনের তথ্য
১১ অক্টোবর ২০১৩চট্টগ্রামের লালখান বাজারের জমিয়াতুল উলুম আল মাদ্রাসায় সোমবার বিস্ফোরণের দিন রাতেই আহত অবস্থায় গ্রেপ্তার করা হয় নুরুন্নবীকে৷ তাকে এখন পুলিশ পাহারায় চিকিত্সা দেয়া হচ্ছে৷ পুলিশ কমিশনার শফিকুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে জানান, এই নুরুন্নবী বোমা এবং গ্রেনেড তৈরির কারিগর৷ সে মাদ্রাসার ছাত্র নয়, একজন ডিপ্লোমা প্রকৌশলী৷ মাদ্রাসার ছাত্র না হয়েও সে দীর্ঘদিন ধরে মুফতি ইজাহারের মাদ্রাসায় থাকত৷ তার কাজই ছিল বোমা গ্রেনেড তৈরি করা এবং নতুনদের প্রশিক্ষণ দেয়া৷ পুলিশ কমিশনার জানান, ঘটনার দিন একটি কালো ব্যাগে করে মাদ্রাসায় বিস্ফোরক আনা হয়েছিল৷ আর তা থেকেই বিস্ফোরণ ঘটে৷
মুফতি ইজাহার মাদ্রাসা পরিচালনা ছাড়াও হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির এবং নেজামে ইসলামের একাংশের চেয়ারম্যান৷ তার ছেলে মুফতি হারুনকে গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে৷ পুলিশ কমিশনার আরও জানান, জামায়াতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ আছে তাদের৷ গত এক বছরে চট্টগ্রামে পুলিশের ওপর একাধিকবার বোমা হামলা চালানো হয়৷ মুফতি হারুন স্বীকার করেছে, এই বোমার একাংশ তাদের মাদ্রাসা থেকেই সরবরাহ করা হয়েছে৷ হারুন ও তার বাবা মাদ্রাসা কমপ্লেক্সে থাকে৷ বোমার কারিগর নুরুন্নবী তাদের সঙ্গেই থাকতেন৷ সোমবারও তারা বোমা এবং গ্রেনেড তৈরি করছিল পুলিশের ওপর হামলা চালাতে৷
এদিকে বিস্ফোরণের পর পরই মুফতি ইজাহার সাংবাদিকদের কাছে বিস্ফোরণের কারণ হিসেবে কম্পিউটারের ইউপিএস বিস্ফোরণ বলে প্রচার চালায়৷ আর ফায়ার সার্ভিসকে আগুনের কথা বলে আলামত নষ্টের চেষ্টা চালায়৷ আহত ৫ ছাত্রকে সেই অজ্ঞাত স্থানে পাঠায়, যাতে আসল ঘটনা প্রকাশ না পায়৷ তবে পরে ঘটনা প্রকাশ পেতে শুরু করলে মুফতি ইজাহার পালিয়ে যায়৷ পুলিশ কমিশনার জানান, এই মুফতি ইজাহার একজন আফগানিস্তান ফেরত ‘মুজাহিদ'৷ সে এবং তার ছেলের বিরুদ্ধে এর আগেও জঙ্গি তত্পরতার মামলা আছে৷
বিস্ফোরণের ঘটনায় আহত মাদ্রাসা ছাত্রদের মধ্যে পর্যন্ত ২ জন মারা গেছেন৷ আর দু'জনের অবস্থা গুরুতর৷ বৃহস্পতিবার সাখাওয়াত হোসেন নামে নামে আরো একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ সেও আহত অবস্থায় পালিয়েছিল৷ চট্টগ্রামের সাংবাদিক নাসির উদ্দিন তোতা ডয়চে ভেলেকে জানান, মুফতি ইজাহারের বিরুদ্ধে জঙ্গি তত্পরতার অভিযোগ দীর্ঘদিনের৷ সে লালখান বাজারের জমিয়াতুল উলুম আল মাদ্রাসাকে কেন্দ্র করে এই তত্পরতা চালিয়ে আসছিল৷ তার কাছে অনেক অপরিচিত লোকের আনাগোনা ছিল৷ আর তার অনুমতি ছাড়া বাইরের কোনো লোক – এমনকি সাংবাদিকরাও মাদ্রাসার ভিতরে ঢুকতে পারতনা৷
এদিকে বিস্ফোরণের পর চার দিন চলে গেলেও এখনো এ নিয়ে হেফাজতে ইসলাম কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি৷