1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ব‌িজেপির জন্য মুকুল রায় কতটা গুরুত্বপূর্ণ?‌

শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা
৬ নভেম্বর ২০১৭

তৃণমূল কংগ্রেসের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ নেতা মুকুল রায়ের বিজেপিতে যোগ দেওয়া কতটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে রাজ্য রাজনীতিতে?‌ নিজেদের অবস্থান থেকে বিশ্লেষণ করলেন রাজ্য নেতারা৷

https://p.dw.com/p/2n5RO
Indien Politiker Lalu Prasad Yadav
ছবি: picture-alliance/NurPhoto/D. Chakraborty

মুকুল রায় তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিজেপির নেতৃত্বের এক বড় অংশ নাকি খুশি নয়৷ সেই অখুশির মনোভাব খুঁচিয়ে তুলতেই এখন তৎপর সংবাদমাধ্যম৷ বিশেষ করে নাম উঠে আসছে বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের নাম৷ রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত যে নেতা পশ্চিমবঙ্গে বিজেপিকে চাঙ্গা করে তোলার ভার পেয়েছেন৷ দিলীপ ঘোষ যখন এই দায়িত্বে এসেছিলেন, তখনও শোনা গিয়েছিল, অপসারিত বিজেপি রাজ্য সভাপতি রাহুল সিনহা এবং তাঁর অনুগতরা খুশি নন৷

Dilip Ghosh BJP - MP3-Stereo

এবারও শোনা যাচ্ছে দিলীপবাবু অখুশি, কারণ সংগঠক হিসেবে হয়ত তাঁর গুরুত্ব কমে যাবে যদি মুকুলকে কোনো সাংগঠনিক দায়িত্বে আনা হয়৷ রবিবারই ঝাড়গ্রামের এক জনসভায় দিলীপ ঘোষ রসিকতা করেছেন, যে খাওয়ার সময় যেমন একাধিক পদ থাকে, শাকভাজা থেকে চাটনি, তেমন রাজনৈতিক দলেরও একাধিক স্তরে বিভিন্ন নেতারা দায়িত্বে থাকেন৷ ধরে নিন না,যে মুকুল রায় হলেন শেষপাতের সেই চাটনি!‌ এমনই নাকি বলেছেন দিলীপ ঘোষ৷ 

কিন্তু লোকপ্রিয়তার খাতিরে রাজনৈতিক নেতাদের জনসভার বক্তব্য হয় একরকম, আর মূল রাজনৈতিক ভাবনা থাকে আরেক রকম৷ পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির সভাপতি ডয়চে ভেলেকে স্পষ্টই জানালেন, সাংগঠনিকভাবে মুকুলবাবুর আসায় দলের অবশ্যই লাভ হবে৷ কারণ পশ্চিমবঙ্গে আবার একটা রাজনৈতিক পরিবর্তনের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, বিজেপি ক্রমশ শক্তিশালী হচ্ছে৷ তৃণমূল কংগ্রেস ব্যক্তিকেন্দ্রিক দল, আর বিজেপি সংগঠনভিত্তিক৷ একেবারে বুথ স্তর থেকে প্রচার, সাংগঠনিক কাজ শুরু হয়েছে যার ফল দেখা যাবে রাজ্যের আগামী উপনির্বাচনে এবং পঞ্চায়েত ভোটে৷ এই পরিস্থিতিতে মুকুল রায়ের দলে আসাটা নিশ্চিতভাবেই বিজেপির জন্য ভালো৷

Md. Selim CPIM - MP3-Stereo

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে শোনা যাচ্ছে, বামপন্থিরা মুকুল রায়ের বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় খুশি৷ বাম সাংসদ মহম্মদ সেলিম সোমবার দিল্লি যাওয়ার পথে বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে ডয়চে ভেলেকে জানালেন, তাঁরা খুশি না হলেও অন্তত নিশ্চিন্ত যে, বিজেপি এবং তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে আদতে যে কোনো ফারাক নেই, এই দলবদলে সেটা প্রমাণ হলো৷ এবং অভিজ্ঞ রাজনীতিক মহম্মদ সেলিমের ধারণা, সারদা, নারদা, ইত্যাদি বহুবিধ দুর্নীতির হাত থেকে পুরনো দলকে বাঁচাতেই মুকুল রায়ের নতুন দলে যাওয়া৷ বিজেপির ভিতর থেকে তিনি যেটা করবেন, সিবিআই-এর মতো কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাত থেকে তৃণমূল কংগ্রেস এবং তার নেতা-নেত্রীদের বাঁচাবেন৷ তদন্তের ধার এবং ভার ক্রমশ কমবে৷

Pradip Bhattacharya INC - MP3-Stereo

একেবারে একই সন্দেহ পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি, সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্যের৷ তিনিও এদিন দিল্লির পথে রওনা হলেন৷ বিমানে বসেই প্রদীপবাবু ডয়চে ভেলেকে পরিষ্কার বললেন, মুকুল রায় নেত্রীর ওপর রেগে গিয়ে বিজেপিতে যোগ দিলেন, বিষয়টা এত সোজা নয়৷ বরং তাঁর দৃঢ় ধারণা, তৃণমূলকে বাঁচানোর দায়িত্ব দিয়েই মুকুল রায়কে বিজেপিতে পাঠানো হলো৷ কাজেই মুকুল রায় না থাকায় তৃণমূলের কতটা ক্ষতি হবে, বা বিজেপির কত লাভ হবে, সে প্রশ্নই এখানে ওঠে না৷ রাজ্য রাজনীতিতেও তাই বিরাট কোনো পরিবর্তন হবে, এমনটা মোটেই মনে করছেন না প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি৷