1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থান, সু চি আটক

১ ফেব্রুয়ারি ২০২১

মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থান, আটক অং সান সু চি সহ ক্ষমতাসীন দলের নেতারা। সেনার দাবি, তারা এক বছরের জন্য শাসন করবে।

https://p.dw.com/p/3oeV3
মিয়ানমারে আটক অং সান সুচি।ছবি: Franck Robichon/REUTERS

মিয়ানমারে সোমবারই পার্লামেন্টের অধিবেশন হওয়ার কথা ছিল। নভেম্বরের নির্বাচনের পর এই প্রথম পার্লামেন্টের অধিবেশন হচ্ছিল। কিন্তু তার আগেই অং সান সু চি, প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট এবং ক্ষমতাসীন ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি(এনএলডি)-র সব প্রধান নেতাকে আটক করা হয়েছে। বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদেরও আটক করে অজানা জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। দেশের গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলির রাস্তায় সেনা নেমেছে। সরকারি টিভি-তে সম্প্রচার বন্ধ। ইন্টারনেট পরিষেবার অবস্থাও খারাপ। রাত তিনটের পর থেকে তা ভালো করে কাজ করছে না।

সেনা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভোটে জালিয়াতির অপরাধে রাজনীতিকদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সেনা-নিয়ন্ত্রিত টিভি-তে সামরিক কর্মকর্তারা বলেছেন, এক বছরের জন্য সেনা দেশের শাসনভার নেবে। সেনার কম্যান্ডার-ইন-চিফ জেনারেল মিন অং হ্লেইং নতুন শাসক হবেন। সারা দেশে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।

এর আগে সুচির দলের মুখপাত্র জানিয়েছিলেন, সু চি, উইন মিন্ট সহ এনএলডি নেতাদের আটক করা হয়েছে। তিনি জানিয়েছিলেন, পরিস্থিতি দেখে মনে হয়েছে, আবার সেনা অভ্যুত্থান হয়েছে। তবে মানুষ যেন শান্ত থাকেন। তিনি এই কথা বলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আরো অনেক নেতাকে আটক করা হয়। এরপর সেই মুখপাত্রকেও ফোনে পাওয়া যায়নি।

সম্প্রতি সেনার সঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের বিরোধ বাড়ছিল। গত নভেম্বরের নির্বাচনে সু চির দল সরকার গঠনের মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়। তাদের বিরুদ্ধে ভোটে জালিয়াতির অভিযোগ ওঠে। সেনার তরফ থেকেও জানানো হয়েছিল, ভোটে জালিয়াতির বিষয়টির আগে ফয়সালা হওয়া দরকার। মিয়ানমার আগে দীর্ঘদিন সেনাশাসনে ছিল। সু চিও বহুদিন গৃহবন্দি ছিলেন।

অ্যামেরিকার হুমকি

হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জানিয়েছেন, দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণকে বানচাল করে বার্মিজ মিলিটারি যে অং সান সু চি সহ কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার করেছে, তাতে অ্যামেরিকা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। অ্যামেরিকা সাম্প্রতিক নির্বাচনকে প্রভাবিত করার যে কোনোরকম চেষ্টার বিরোধী। যদি সবকিছু আবার আগের অবস্থায় ফিরে না যায়, তাহলে অ্যামেরিকা দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।

অস্ট্রেলিয়ার বিদেশমন্ত্রীর আবেদন, সু চি সহ অন্য নেতাদের যেন অবিলম্বে মুক্তি দেয়া হয়। সেনাবাহনী যেন আইনের শাসন মেনে চলে।

'তীব্র প্রতিক্রিয়া হবে'

অং সান সু চি ১৯৮৮ সালে সামরিক শাসকদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে অন্যতম ভূমিকা নেন। তারপরই তাঁকে গৃহবন্দি করা হয়। ২০১০ সালে তিনি মুক্তি পান। ২০১১ সালে এনএলডি রাজনৈতিক দল হিসাবে নথিভুক্ত হয় ও উপনির্বাচনে অংশ নেয়। তারপর আবার সেনা অভ্যুত্থান হলো। 

সিঙ্গাপুরের সাউথইস্ট এশিয়ান স্টাডিজের মিয়ানমার প্রোগ্রামের অ্যাসোসিয়েট ফেলো রোমেইন কেইলড ডিডাব্লিউকে বলেছেন, গণতন্ত্রে ফেরার দশ বছরের মধ্যে মিয়ানমার আবার ধাক্কা খেল। তাঁর মতে, এর প্রতিক্রিয়া বিশাল হবে। ১৯৮৮ সালে সেনা ছাত্রবিক্ষোভ দমানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু সেই সময়ের সঙ্গে এই সময়ের অনেক তফাত। এখন শক্তিশালী সামাজিক মাধ্যম আছে, অ্যামেরিকায় নতুন প্রশাসন এসেছে, চীনের পরিকাঠামো তৈরির উচ্চাকাঙ্খা আছে। তাই সেনার এই প্রয়াসের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়াও তীব্র হতে বাধ্য। 

জিএইচ/এসজি(এপি, এএফপি, রয়টার্স)