মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ভুয়া ছবি ব্যবহার!
৩১ আগস্ট ২০১৮মিয়ানমার সেনাবাহিনীর জনসংযোগ বিভাগ গত জুলাই মাসে বইটি প্রকাশ করে৷ এতে আটটি ঐতিহাসিক ছবি ব্যবহার করা হয়, যার মধ্যে অন্তত তিনটি ভুয়া বলে দাবি করেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স৷ এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে মিয়ানমার সরকার কিংবা সেনাবাহিনীর কোনো মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি বার্তা সংস্থাটি৷ আর দেশটির তথ্য মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী সচিব উ মিয়ো মিন্ট মাউং নিজে বইটি পড়েননি বলে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি৷
১১৭ পৃষ্ঠার ঐ বইয়ের নাম ‘মিয়ানমার পলিটিক্স অ্যান্ড দ্য তাপমাতাও: পার্ট ওয়ান'৷ মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর আনুষ্ঠানিক নাম হচ্ছে তাপমাতাও৷
ভুয়া তিন ছবি
এটি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে পাকিস্তানি বাহিনীর চালানো নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ছবি৷ কিন্তু মিয়ানমার সেনাবাহিনী তাদের বইতে ছবিটি ব্যবহার করে ক্যাপশন দিয়েছে এভাবে, ‘বাঙালিরা স্থানীয় নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে'৷ উল্লেখ্য, মিয়ানমার সরকার রাখাইনের মুসলিম রোহিঙ্গাদের অবৈধ অভিবাসী বোঝাতে ‘বাঙালি' হিসেবে আখ্যায়িত করে থাকে৷
উপরের ছবিটি গেটি ইমেজের৷ ২০১৫ সালে ইয়াঙ্গনে তোলা এই ছবিতে রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি অভিবাসীদের দেখা যাচ্ছে৷ তাঁদের বহন করা নৌকাটি মিয়ানমার নৌবাহিনী আটক করেছিল৷ ঐ বছর মিয়ানমার থেকে অনেকে নৌকায় করে থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমিয়েছিল৷ মিয়ানমার সেনাবাহিনী এই ছবিটি উলটে দিয়ে এবং রং পরিবর্তন করে সাদা-কালো হিসেবে তাদের বইতে প্রকাশ করেছে৷ এই ছবির মাধ্যমে মিয়ানমার সেনাবাহিনী প্রমাণ করতে চেয়েছে যে, এভাবে ‘বাঙালি'রা মিয়ানমারে প্রবেশ করেছিল৷
প্রথম ছবিটি পুলিৎজার কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইট থেকে নেয়া৷ ১৯৯৬ সালে রুয়ান্ডায় সহিংসতা চলার সময় অনেক হুতু শরণার্থী পালিয়ে যান৷ ছবিটি পুলিৎজার পুরস্কার জিতেছিল৷ মিয়ানমার সেনাবাহিনী এই ছবিটি সাদা-কালো করে তাদের বইতে প্রকাশ করে৷ ছবির মানুষগুলোকে বইতে বাঙালি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে৷ মিয়ানমারে ঔপনিবেশিক শাসন চলার সময় তাঁরা এভাবে মিয়ানমারে প্রবেশ করে বলে বইতে দাবি করা হয়৷
জেডএইচ/এসিবি (রয়টার্স)