মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আইসিজের সিদ্ধান্ত ২৩ জানুয়ারি
১৫ জানুয়ারি ২০২০গাম্বিয়ার বিচার মন্ত্রণালয় সোমবার এক টুইটে এ তথ্য জানিয়েছে৷ তবে বিষয়টি নিশ্চিত হতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স আইসিজের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো উত্তর পায়নি।
দুই বছর আগে সন্ত্রাস দমনের নামে মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা মুলসমান অধ্যুষিত গ্রামগুলোতে অভিযান চালায়৷ ওই অভিযানে সেনাবাহিনী গণহত্যা, ধর্ষণ এবং বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয় বলে অভিযোগ রয়েছে৷ জাতিসংঘ ওই অভিযানকে ‘জাতিগত নিধন' বলে বর্ণনা করেছে৷ মিয়ানমার সরকার শুরু থেকেই সব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে৷
ওআইসিভুক্ত পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া গত নভেম্বরে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যা প্রতিরোধ ও এর শাস্তির বিধানে ১৯৪৮ সালে স্বাক্ষরিত ‘জেনোসাইড কনভেনশন' লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে এ মামলা করে৷
গাম্বিয়া নিজে ওই কনভেনশনে স্বাক্ষরকারি দেশ এবং ১৯৫৬ সালে মিয়ানমারও স্বাক্ষর করে৷
নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরের পিস প্যালেসে গত ১০ থেকে ১২ ডিসেম্বর ওই মামলার শুনানি হয়। তাতে গাম্বিয়ার পক্ষে নেতৃত্ব দেন দেশটির বিচারমন্ত্রী আবু বকর মারি তামবাদু। অন্যদিকে ছিলেন মিয়ানমারের নোবেলজয়ী নেত্রী অং সান সুচি।
তামবাদু শুনানিতে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর বর্বরতার চিত্র তুলে ধরেন এবং গণহত্যা বন্ধের দাবি জানান। নৃশংসতার জন্য দায়ী সেনা সদস্যদের বিচার ও সহিংসতা বন্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে মিয়ানমারের উপর ‘আস্থা রাখা যায় না' মন্তব্য করে মামলার পূর্ণাঙ্গ শুনানির আগ পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশনা চান গাম্বিয়ার প্রধান কৌঁসুলি পল রিখলার।
অন্যদিকে গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে সুচি দাবি করেন, রাখাইনের পরিস্থিতি সম্পর্কে গাম্বিয়া যে চিত্র আদালতে উপস্থাপন করেছে তা ‘অসম্পূর্ণ ও বিভ্রান্তিকর'। মিয়ানমারের সামরিক বিচার কাঠামোকে কাজ করার সুযোগ দেওয়া উচিত মন্তব্য করে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালতে রোহিঙ্গা গণহত্যার মামলা বাতিল করার আর্জি জানান তিনি।
দুই পক্ষের যুক্তিতর্ক শোনার পর আইসিজের ১৭ সদস্যের বিচারক প্যানেল বিষয়টি আদেশের জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন।
আইসিজের বিচারক প্যানেলের প্রধান আবদুলকাভি আহমেদ ইউসুফ গত ১৩ ডিসেম্বর বলেন, ‘যত দ্রুত সম্ভব' এ মামলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন তারা।
গণহারে হত্যা, ধর্ষণ এবং বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়ে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে পুরোপুরি নির্মূল করাই যে ২০১৭ সালের অগাস্টে রাখাইনে সেনা অভিযানের মূল উদ্দেশ্য ছিল তা পরের বছর জাতিসংঘের স্বাধীন ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের প্রতিবেদনে উঠে আসে। প্রাণ বাঁচাতে সাড়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে আছে৷
এসএনএল/কেএম (রয়র্টাস)