মিশরে সরকার ও বিরোধী সমর্থকরা মুখোমুখি
৫ ডিসেম্বর ২০১২বুধবার বিরোধীদলগুলো জানিয়েছে, তারা আবার প্রসিডেন্ট প্রাসাদের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ জানাবে৷ ওদিকে ক্ষমতাসীন দল মুসলিম ব্রাদারহুড বলে দিয়েছে, তাদের সমর্থকরাও থাকবে সেখানে৷ দেশটির পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যাবার ইঙ্গিত দিয়েছে আরেকটি ঘোষণা৷ সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছে, জনবিক্ষোভে নেতৃত্ব দেয়া নেতাদের বিরুদ্ধে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে মামলা করা হবে৷ সব মিলিয়ে মিশরের পরিস্থিতি আবারও খুব উত্তপ্ত৷
ছয়মাস না যেতেই দেশের প্রথম গণতান্ত্রিক সরকারের এ অবস্থা হবে কিছুদিন আগেও এটা ছিল প্রায় অভাবনীয়৷ দেশটিতে হঠাৎই উত্তেজনা দেখা দেয় ২২শে নভেম্বর মুরসি একটি ডিক্রি জারি করায়৷
ডিক্রিটি তাঁর ও তাঁর দল মুসলিম ব্রাদারহুডের ক্ষমতা কুক্ষিগত করার অপচেষ্টা – এ অভিযোগে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে সরকার বিরোধীরা৷ তারপর পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার আগেই নতুন সংবিধান প্রণয়নের পথে চূড়ান্ত পদক্ষেপ নিয়ে বসেন মিশরের নতুন প্রেসিডেন্ট৷ সংসদের ভোটাভুটিতে নতুন সংবিধান অনুমোদিত হলেও সেখানে বিরোধীদের কেউ ছিলেন না৷ সংবিধানের খসড়া প্রণয়নের কমিটিতে বিরোধী দল এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘু খ্রিস্টানদের যে প্রতিনিধিরা ছিলেন তাঁদের সবাই প্রস্তাবিত সংবিধানটিকে ‘অগণতান্ত্রিক’ আখ্যা দিয়ে কমিটি থেকে নাম প্রত্যাহার করে নেন৷ কিন্তু তাঁদের বিরোধীতাকে অগ্রাহ্য করেই সংসদে ভোটাভুটি সেরে ফেলে সংসদ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া মুসলিম ব্রাদারহুড৷
সেই থেকে নতুন মোড় নেয় বিক্ষোভে৷ কায়রোর তাহরির স্কয়ার ছেড়ে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের দিকেও এগোতে শুরু করে বিক্ষোভকারীরা৷ মঙ্গলবার উত্তেজিত জনতা প্রাসাদে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করলে দাঙ্গা পুলিশ তাঁদের উদ্দশ্যে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে৷ পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে তখন ১৮ জনের আহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে মিশরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়৷ বিক্ষোভের মুখে প্রাসাদ ছেড়ে গিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট মুরসি৷ তবে বুধবার সকাল থেকে পরিস্থিতি অনেক শান্ত হওয়ায়, বাইরে বিক্ষোভকারীর সংখ্যা মাত্র শ’দুয়েকে নেমে আসায় প্রাসাদে ফেরেন তিনি৷
কিন্তু ফিরেও কিছুটা নমনীয় হয়ে শান্তি ফেরানোর পথে পা বাড়াননি মুরসি৷ তাঁর দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মুসলিম ব্রাদারহুডের অবস্থান যে ঠিক, বিরোধীরা যে জোর খাটিয়ে সেখান থেকে তাদের সরাতে পারবে না এটা বোঝাতে বুধবার প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের সামনে জনসমাবেশ করবে তারা৷ বিরোধী জোট জানিয়েছে, সেখানে তাদের বিক্ষোভও চলবে৷ মুসলিম ব্রাদারহুডের সমর্থকরা হামলা না চালালে অপ্রীতিকর কিছু ঘটবেনা – এমন আশ্বাসও দিয়েছে তারা৷
এসিবি/ডিজি (ডিপিএ, এএফপি, রয়টার্স)