মাশরাফির অবসরের সিদ্ধান্তে সমালোচনা
৫ এপ্রিল ২০১৭তবে মাশরাফি বলেছেন, তিনি তাঁর সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক চান না৷ মঙ্গলবার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টির পর সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘‘আমার কাছে মনে হয় এই সময় বিতর্ক না তৈরি করে আমাদের ক্রিকেটের উন্নতির জন্য কাজ করা উচিত৷ আমার কাছে মনে হয় না এই সব নিয়ে আলোচনা করার কিছু আছে৷’’
এর আগে ফেসবুকে নিজের পাতায় অবসরের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন তিনি৷ ‘‘আমি মনে করি টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট থেকে অবসর নেয়ার জন্য এটাই আমার উপযুক্ত সময় যাতে অনেক তরুণ উদীয়মান ক্রিকেটার তাদের প্রতিভা তুলে ধরতে পারে এবং বিসিবি তাদেরকে সঠিক দিকনির্দেশনা দিতে পারে,’’ লিখেছেন তিনি৷
এদিকে, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম ‘আচমকা কেন মাশরাফির অবসর’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে, অবসরের সিদ্ধান্তের পেছনে কোচ ও বিসিবির চাপের বিষয়টি তুলে ধরেছে৷ বেশ কিছুদিন আগে জাতীয় দলের প্রধান কোচ চন্দিকা হাথুরুসিংহে মাশরাফি, তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিমকে টি-টোয়েন্টি দলে জরুরি মনে করেন না বলে বিসিবির কর্মকর্তাদের জানিয়েছিলেন বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে৷ এরপর শ্রীলঙ্কা গিয়েও মাশরাফির উপর বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করা হয় বলে জানাচ্ছে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম৷
মাশরাফির জীবনী লেখক, সাংবাদিক দেবব্রত মুখোপাধ্যায়ও এসব ঘটনা উল্লেখ করেছেন৷ তিনিও মনে করছেন, অবসরের জন্য বারবার চাপ দেয়ার কারণেই মাশরাফি পদত্যাগে বাধ্য হয়েছেন৷ ‘‘... এই সময় মাশরাফি চলে গেলে বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের খুব একটা যাবে আসবে না৷ মাশরাফিকেও এক সময় যেতেই হবে৷ তাই বলে সে সামান্য একটু সম্মান প্রত্যাশা করতে পারে না! যে ছেলেটা প্রায় শূন্য থেকে গত দুই বছরে জাতীয় দলটাকে এত দূর নিয়ে এলো, অবসরটা তার নিজের সিদ্ধান্তে হতে পারতো না? এতটা অকৃজ্ঞ, নিষ্ঠুর হওয়া খুব জরুরি ছিল!’’ লিখেছেন দেবব্রত মুখোপাধ্যায়৷
ইএসপিএনক্রিকইনফো’র বাংলাদেশ প্রতিনিধি মোহাম্মদ ইসামও ফেসবুকে মাশরাফিকে পদত্যাগে বাধ্য করায় বিসিবির প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন৷ এর আগেও বিসিবিকে সিনিয়র ক্রিকেটারদের সঙ্গে এর চেয়েও খারাপ আচরণ করতে দেখেছেন বলে দাবি করেছেন তিনি৷ তাঁর আশা, বাংলাদেশের নীতিনির্ধারকরা খেলোয়াড়দের এখন থেকে তাঁদের ‘ব্যক্তিগত চাকর’-এর চেয়ে বেশি কিছু মনে করবেন৷ কারণ, এই ক্রিকেটারদের জন্যই তাঁরা (বিসিবির কর্মকর্তারা) বর্তমান অবস্থানে আছেন বলে মনে করছেন ইসাম৷
ফেসবুক ব্যবহারকারী শরিফুল হাসান লিখেছেন, ‘‘ক্রিকেট কিংবা বাস্তবে মাশরাফিরা জীবন দিয়ে দিলেও বিসিবিদের মন ভরবে না, কারণ, তারা মেধা, ত্যাগ চায় না, চায় তেলবাজি৷ কিন্তু মাশরাফিরা সেটা পারে না৷ তাই বোর্ড অখুশি৷ অভিমানে তাই চলে যায় মাশরাফিরা৷ তবে থেকে যায় মানুষের অন্তরে৷ লাভ ইউ মাই হিরো মাশরাফি৷’’
মাশরাফির অবসরে যাওয়ার খবরে দুঃখ পেয়েছেন সামাজিক মাধ্যমের অনেক ব্যবহারকারী৷
বিএম এহতেশাম পায়ে ব্যান্ডেজ বাঁধা অবস্থায় জাতীয় দলের জার্সি গায়ে মাঠে থাকা মাশরাফির একটি ছবি শেয়ার করেছেন৷ সঙ্গে মঙ্গলবারের সংবাদ সম্মেলনে বলা মাশরাফির একটি মন্তব্য উল্লেখ করে লিখেছেন, ‘‘স্যালুট, ম্যাশ’’৷
সংকলন: জাহিদুল হক
সম্পাদনা: আশীষ চক্রবর্ত্তী