‘মারাত্মক রাজনৈতিক ভুল করবেন না'
১২ জুন ২০১৯সবকিছু পরিকল্পনা অনুযায়ী চললে জুলাই মাসের শেষে ব্রিটেনে নতুন প্রধানমন্ত্রী শাসনভার গ্রহণ করবেন৷ তবে ব্রেক্সিট কার্যকর করার জন্য তাঁর হাতে মাত্র তিন মাস সময় থাকবে৷ কারণ ৩১শে অক্টোবর ব্রিটেন ইইউ ত্যাগ করতে চলেছে৷ নতুন শীর্ষ নেতা এই মেয়াদ আরও বাড়ানোর আবেদন করবেন কিনা, করলে ইইউ সম্মতি জানাবে কিনা, তাও স্পষ্ট নয়৷ টোরি দল তথা দেশের নেতৃত্বের দৌড়ে যাঁরা আসরে নেমেছেন, তাঁদের একটা বড় অংশ নির্ধারিত তারিখেই ব্রেক্সিট কার্যকর করার পক্ষে৷ তবে তাঁরা কীভাবে এত কম সময়ের মধ্যে এমন দুরূহ কাজ করবেন, সে বিষয়ে সন্তোষজনক উত্তর পাওয়া যাচ্ছে না৷ কয়েক জন প্রার্থী এ বিষয়ে ‘অবাস্তব' প্রতিশ্রুতি দিয়ে চলেছেন বলেও অভিযোগ উঠছে৷
এমন প্রেক্ষাপটে ব্রিটেনের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি সম্পর্কে সংশয় প্রকাশ করছেন ইইউ নেতারা৷ প্রতিবেশী দেশ আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী লিও ভারাদকার ব্রিটেনের সংসদ সদস্যদের উদ্দেশ্যে ‘মারাত্মক রাজনৈতিক ভুল পদক্ষেপ' সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছেন৷ তাঁর মতে, ব্রিটেনের বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন যে বিচ্ছেদ চুক্তি সম্পর্কে ঐকমত্যে পৌঁছেছে, নতুন নেতা ক্ষমতায় এলে ইইউ তার তুলনায় আরও ভাল চুক্তি মেনে নেবে, এই ধারণা সম্পূর্ণ ভূল৷ উল্লেখ্য, ব্রিটেনের সংসদ তিন-তিনবার এই চুক্তির বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে৷
ইউরোপীয় কমিশনের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জঁ ক্লোদ ইয়ুংকারও মঙ্গলবার আবার সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, যে ব্রিটেনের নতুন শীর্ষ নেতা কার্যভার গ্রহণ করলেও ব্রেক্সিট চুক্তিতে কোনো রদবদল সম্ভব নয়৷ তিনি বলেন, ‘‘টেরেসা মে ও জঁ ক্লোদ ইয়ুংকার নয়, ব্রিটেন ও ইইউ এই চুক্তি স্বাক্ষর করেছে৷ ইউরোপীয় কমিশনের এক মুখপাত্রও একই সুরে সে কথা জানিয়ে দিয়েছেন৷
টোরি দলের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় প্রার্থী হিসেবে পরিচিত বরিস জনসন ৩১শে অক্টোবর ব্রেক্সিট কার্যকর করতে বদ্ধপরিকর৷ যে কোনো বিলম্বকে তিনি দলের পরাজয় হিসেবে তুলে ধরতে চলেছেন৷ তবে এই কড়া অবস্থানকে জনসন ইইউ-র সঙ্গে নতুন আলোচনার চাল হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছেন৷ প্রয়োজনে চুক্তি ছাড়াই ব্রেক্সিট কার্যকর করতে তিনি পিছপা হবেন না বলে তিনি জানিয়েছেন৷ তবে ইইউ-র কাছে বকেয়া অর্থ আটকে রাখার হুমকি দিয়ে জনসন সবচেয়ে বড় বিতর্ক সৃষ্টি করেছেন৷
টোরি দলের নেতৃত্বের দৌড়ে অন্য কয়েকজন প্রার্থী বরিস জনসন-এর খোলাখুলি সমালোচনা করছেন৷ প্রার্থীদের মধ্যে প্রকাশ্য টেলিভিশন বিতর্কে জনসন-কে অংশ নিতে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন ম্যাট হ্যানকক, মার্ক হার্পার-সহ অনেক প্রতিদ্বন্দ্বী৷ জনসন অবশ্য এমন বিতর্ক এড়িয়ে চলার চেষ্টা করছেন৷ বেফাঁস মন্তব্য বা লাগামহীন রসিকতার জন্য পরিচিত এই প্রার্থী নিজের জয়ের সম্ভাবনা ঝুঁকির মুখে ফেলতে চাইছেন না বলে সমালোচকরা মনে করছেন৷
এসবি/কেএম (রয়টার্স, এএফপি)