‘সেরা মা’ অক্টোপাস!
১ আগস্ট ২০১৪আর ডিম ফুটে বাচ্চা বের হলেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে বেশিরভাগ মা অক্টোপাস৷ বুধবার মার্কিন বিজ্ঞানীরা বর্ণনা করেছেন মা অক্টোপাস তার গর্ভকালীন সময়টা কীভাবে কাটান, সে বিষয়টি৷ তাঁরা দেখেছেন, নারী অক্টোপাস প্রজাতি ডিম পাড়ার সময় হলে সমুদ্রপৃষ্ঠের প্রায় এক মাইল গভীরে চলে যায়৷ তারপর দীর্ঘ সাড়ে চার বছর ডিমগুলোকে আগলে রাখে৷ প্রাণিজগতে এত দীর্ঘ সময় ধরে ডিমে ‘তা' দেয়ার রেকর্ড অন্য কোনো প্রাণীর নেই৷ বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল প্লসওয়ান-এ নতুন এই গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়৷
সমুদ্রের তলদেশে জীবদের জীবনযাপন সম্পর্কে জানতে মধ্য ক্যালিফোর্নিয়ার সমুদ্রে একটি রিমোট নিয়ন্ত্রিত সাবমেরিন পাঠিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা৷ সেসময় তাঁরা একটি নারী অক্টোপাসের সন্ধান পান, যেটা সমুদ্র তলদেশের অন্তত ৪,৬০০ ফিট নীচে একটি পাথরের খাঁজে অবস্থান করছিল৷ সেখানে স্বচ্ছ ও আলোকিত ১৬০টি ডিমও দেখতে পান বিজ্ঞানীরা৷
তাঁরা বলছেন, ডিমগুলো প্রথম অবস্থায় একগুচ্ছ ব্লু বেরির মতো ছিল, ধীরে ধীরে সেগুলো একগুচ্ছ আঙুরের মতো দেখতে হয়৷ কিন্তু এই সাড়ে চার বছরে মা অক্টোপাসকে কখনো তার স্থান থেকে নড়তে দেখা যায়নি৷ এমনকি পুরোটা সময় না খেয়েই থেকেছে সে৷ এ দীর্ঘ সময়ে না খাওয়ার কারণে ধীরে ধীরে মা অক্টোপাসটি শুকিয়ে যায় এবং বিবর্ণ হয়ে যেতে থাকে৷ ২০০৭ সালের মে মাস থেকে ২০১১ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অবিরাম অক্টোপাসটির উপর সাবমেরিনের সাহায্যে নজর রেখেছিলেন বিজ্ঞানীরা৷
তাঁরা জানান, ‘‘বেশিরভাগ মা অক্টোপাস জীবনে একবার বেশ কয়েকগুচ্ছ ডিম পাড়ে এবং ডিম ফুটে বাচ্চা বের হওয়ার পরই মারা যায়৷ নতুন জন্ম নেয়া শিশুগুলো কিন্তু অসহায় থাকে না৷'' ডিমগুলো ফুটতে এত দীর্ঘ সময় লাগার এটা একটা কারণ, বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা৷ তাঁরা জানান এই পুরো চার বছরে ডিমগুলো যাতে কোনো আঘাত না পায় এবং ভেঙে না যায়, সেজন্য নিজের আট বাহু দিয়ে তাদের আগলে রাখতেন মা অক্টোপাস৷
এপিবি/জেডএইচ (এপি, রয়টার্স)