মাথাপিছু সামরিক ব্যয় ২০২ ডলার!
৯ জুন ২০০৮গোটা বিশ্বে যখন বেড়ে চলেছে শান্তিরক্ষী বাহিনীর সংখ্যা, ঠিক তখন তার চেয়েও বেশী গতিতে বেড়ে চলেছে গোটা বিশ্বের সামরিক ব্যয়৷ সুইডিস সংস্হা স্টকহম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট সিপরি তার বার্ষিক রিপোর্টে বলেছে গত এক দশকে বিশ্বের সামরিক ব্যয় বেড়েছে ৪৫ ভাগেরও বেশী৷
এর মধ্যে কেবল গত বছরেই বেড়েছে ৬ ভাগ৷ সুইডিস সংস্হার হিসেব মতে গত বছর সারা বিশ্বে শান্তিরক্ষা অভিযানের সংখ্যা ছিলো ৬১টি৷ কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য এ সময়ের মধ্যে দেশগুলো সামরিক খাতে ব্যয় করেছে ১৩শ ৩৯ বিলিয়ন ডলারের বেশী যা মোট জিডিপির আড়াই শতাংশ৷ গড়ে একজন মানুষের পেছনে সামরিক ব্যয় হয়েছে ২০২ ৷
সুইডিস সংস্হার হিসেব মতে, গত বছর বিশাল অংকের এ সামরিক ব্যয়ের ৪৫ ভাগই করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যার পরিমাণ ৫৪৭ বিলিয়ন ডলার৷ এর পরই রয়েছে ব্রিটেন, চীন, ফ্রান্স ও জাপান৷ তবে সামরিক ব্যয়ের ক্ষেত্রে বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছে পূর্ব ইউরোপের দেশগুলো৷ এ অঞ্চলে গত এক দশকে সামরিক ব্যয় বেড়েছে শতকরা ১৬২ ভাগ৷ কেবল গত বছরেই বেড়েছে ১৫ ভাগ৷ এছাড়া মধ্য প্রাচ্য, দক্ষিণ এশিয়া, আফ্রিকা এবং পূর্ব এশিয়াতেও গত এক দশকে সামরিক ব্যয়ের পরিমাণ ছিলো ৫০ ভাগেরও বেশী৷
এশিয়ার সবচে বড় দেশ চীন তার সামরিক ব্যয় বাড়িয়ে চললেও দেশটির অর্থনৈতিক গতির তুলনায় তা খুব বেশী নয় বলেও মন্তব্য করা হয়েছে সিপরির রিপোর্টে৷
এদিকে বিশ্বব্যাপী এ সামরিক ব্যয় বাড়ার কারন কি? এ ব্যাপারে সিপরি তার রিপোর্টে বলেছে, বিভিন্ন দেশের পররাষ্ট্র নীতি, সেসব দেশের নিরাপত্তার প্রতি বর্তমান কিংবা সম্ভাব্য হুমকি এবং নানা জায়গার সশস্ত্র সংঘাত গোটা বিশ্বে সামরিক ব্যয় বাড়িয়ে চলেছে৷ এছাড়া বিভিন্ন প্রকারের শান্তিরক্ষা অভিযানের খরচ জোগাতে গিয়েও দেশগুলোর সামরিক ব্যয় বেড়ে চলেছে৷
এদিকে সামরিক ব্যয়ের সঙ্গে রয়েছে অস্ত্র ব্যবসার নিবিড় সম্পর্ক৷ তাই সামরিক ব্যয়ের পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী অস্ত্র ব্যবসারও একটি হিসেব প্রকাশ করেছে স্টকহম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট বা সিপরি৷ গত ২০০৬ সালে বিশ্বের শীর্ষ ১০০টি অস্ত্র কম্পানি মোট ৩১৫ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রি করেছে যা আগের বছরের চেয়ে ছিলো ৯ শতাংশ বেশি৷ এসব কম্পানির মধ্যে ৪১ টি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যাদের অস্ত্র বিক্রির পরিমান ছিলো শতকরা ৬৩ ভাগ৷
বিশ্বব্যাপী বেড়ে চলা এ অস্ত্র প্রতিযোগিতার শেষ কোথায়? এ প্রশ্নের জবাবে কিন্তু আশার কথাই শুনিয়েছে সুইডিস সংস্হা সিপরি৷ সংস্হাটির পরিচালক বেটস গিল বলেছেন, গোটা বিশ্বেই এখন এ ব্যাপারে সচেতনতা বেড়ে চলেছে৷ তাই অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে এখন জাতিসংঘ সহ বিশ্বের বড় দেশগুলো চিন্তা ভাবনা করছে৷