মাতৃদুগ্ধ পানে বিশ্ব রেকর্ড
২৭ অক্টোবর ২০১৩ফিলিপাইন্সের বেশিরভাগ মানুষ বেশ রক্ষণশীল এবং ক্যাথলিক খ্রিষ্টান৷ এ দেশের সমাজে জনসমক্ষে বুকের দুধ খাওয়ানোকে খুব ভালোভাবে দেখা হয় না৷ তাই অ্যাডভোকেসি গ্রুপ ‘ব্রেস্ট ফিডিং ফিলিপিন্স' পুরো দেশে একযোগে সন্তানদের জনসমক্ষে বুকের দুধ খাওয়ানোর আয়োজন করেছে৷ ফিলিপাইন্সের এক হাজার শহরে এই আয়োজন করেছে উদ্যোক্তারা৷
গ্রুপের পরিচালক নোনা আনদায়া-ক্যাসটিলো বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন, যখন কোনো নারী চলচ্চিত্রে যৌন দৃশ্যে অভিনয় করেন বা জনসমক্ষে খোলামেলা পোশাক পড়েন, তখন জনগণ সেটাকে খারাপ মনে করে না৷ অথচ জনসমক্ষে কোনো মা যদি তাঁর সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ান, তাহলে সেটা ভালো চোখে দেখেন না তারা৷
তিনি এও জানান যে, তাদের গ্রুপের এক সদস্যকে বলা হয়েছিল তিনি যেন টয়লেটে গিয়ে তাঁর সন্তানকে দুধ খাওয়ান৷ এই ধরনের আচরণ বদলাতেই তাদের এই উদ্যোগ বলে জানান ক্যাসটিলো৷ ২০০৭ সালে এই গ্রুপটির আয়োজনে ১৫,২১৮ জন মা একসাথে তাঁদের সন্তানদের বুকের দুধ খাওয়ানোর বিশ্ব রেকর্ড গড়ে ‘গিনিস বুক অফ ওয়াল্ড রেকর্ডস'-এ নাম লিখিয়েছেন৷ জানা গেছে, এবারের আয়োজনে ২১ হাজার মা অংশ নিয়েছেন৷ তবে গিনিস কর্তৃপক্ষ তিন সপ্তাহ পরে তাদের রায় জানাবেন৷
২১ বছর বয়সি মা জিঙ্কি ভ্যালেন্সিয়া তাঁর এক মাস বয়সি ছেলেকে নিয়ে এসেছিলেন ম্যানিলার মারিকিনা শহরের আয়োজন স্থলে৷ তিনি জানান, প্রথমবার এত লোকের সামনে শিশুকে বুধের দুধ খাওয়াচ্ছেন, তাই কিছুটা লজ্জা লেগেছে বৈকি৷ কিন্তু পরবর্তীতে হয়ত আর লজ্জা লাগবে না৷ তবে তাঁর স্বামী জনসমক্ষে দুগ্ধপান করাতে দেবেন কিনা, এ বিষয়ে তাঁর সন্দেহ রয়েছে৷ আয়োজকরা আরো জানান, এ আয়োজনের আরো একটি লক্ষ্য হলো শিশুদের যাতে ইনফ্যান্ট ফর্মুলা, অর্থাৎ টিনের দুধ খাওয়ানো না হয়৷
১৯৮৬ সালে ফিলিপাইন্সে ‘মিল্ক কোড' নামে একটি আইন পাস হয়, যেখানে দুই বছরের কম বয়সি শিশুকে ইনফ্যান্ট ফর্মুলা খাওয়ানোর বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ করা হয়৷ এরপর ২০০৯ সালে আর একটি আইন পাস হয় দেশটিতে৷ যেটায় প্রাইভেট ও পাবলিক কোম্পানিগুলোতে কাজ করেন এমন মায়েরা যাতে সেসব জায়গায়, মানে তাঁদের কর্মক্ষেত্রে শিশুদের বুকের দুধ খাওয়াতে পারেন, সেই ব্যবস্থা রাখার নির্দেশ দেয়া হয়৷ তাই আয়োজকরা এই আইনের বাস্তবায়নের উপর জোর দিতে সবার প্রতি আহ্বান জানান৷
এপিবি/ডিজি (এএফপি, এপি)