মাংসের নিরামিষ বিকল্পের খোঁজে
১৪ জুন ২০২৪‘নিরামিষ' মাংস কি ভবিষ্যতের খাদ্য হতে চলেছে? বার্লিন-ভিত্তিক এক স্টার্টআপের কর্ণধারটিম ফ্রন্টৎসেক সে বিষয়ে বেশ আশাবাদী৷ তাঁর পছন্দের স্টেকের মধ্যে শুধু তেল, হার্বস এবং বিশেষ ধরনের ছত্রাক রয়েছে৷ উদ্যোগপতি হিসেবে তিনি নিরামিষাশী৷ সেই মনোভাবের কারণ ব্যাখ্যা করে টিম বলেন, ‘‘আমার কার্বন ফুটপ্রিন্টের প্রকৃত প্রভাবের কথা জানতে পেরে তিন বছর আগে আমি মাংস খাওয়া বন্ধ করেছিলাম৷’’
কিন্তু বিশ্বব্যাপী মাংস খাওয়ার প্রবণতা শীর্ষে পৌঁছেছে৷ বিশেষ করে গত ৬০ বছরে তা দ্বিগুণ হয়ে গেছে৷ সেই প্রবণতা আরো বেড়ে চলেছে৷ মাংস খাওয়ার ক্ষেত্রে ধনী দেশগুলির ভাগ সবচেয়ে বেশি৷ জার্মানিতে জনপ্রতি গড় হিসেব বছরে প্রায় ৫২ কিলোগ্রাম৷ গবেষক হিসেবে লেনা পার্চের মতে, সেই পরিমাণ খুবই বেশি৷ গবেষক হিসেবে লেনা পার্চ ডানান, ‘‘পশ্চিমা খাদ্যাভ্যাস অনুযায়ী প্রতি দিন এত মাংসের চাহিদা মিটিয়ে গোটা বিশ্বের জন্য পুষ্টির ব্যবস্থা করা অসম্ভব৷ অর্থাৎ জার্মানির মতো দেশে খাদ্যাভ্যাস বদলাতে হবে৷''
এমনকি যে সব দেশে মূলত শাকসবজি খাওয়ার চল বেশি, সেখানেও মাংসের জনপ্রিয়তা বাড়ছে৷ ভারত, পাকিস্তান ও আফ্রিকার সাহারা অঞ্চলে মাংস খাওয়ার প্রবণতা বেশ বেড়ে গেছে৷ জনসংখ্যা ও আয় বাড়ার কারণে এমনটা ঘটছে৷
সমস্যা হলো, মাংস শিল্পখাত জলবায়ু পরিবর্তন তরান্বিত করছে৷ মানুষের কার্যকলাপের ফলে সৃষ্ট প্রায় ১৫ শতাংশ গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের জন্য গবাদি পশুপালন দায়ী৷
অনেকের মতে, খাদ্য তালিকা থেকে মাংস বাদ দিলে সহজেই নির্গমন কমানো যায়৷ কিন্তু বিষয়টি কি সত্যি এত সহজ? বার্লিনে এক খাদ্যমেলার অতিথিরা পুরোপুরি উদ্ভিদ-ভিত্তিক বিকল্প গ্রহণ করতে তেমন উৎসাহ দেখান নি৷
মেলায় বেশ কিছু আকর্ষণীয় নতুন খাদ্যপণ্যের সম্ভার দেখা যাচ্ছে৷ যেমন সয়াবিন দিয়ে তৈরি এই ভিগান কাবাব৷ তবে অতিরিক্ত সিজনিং, অস্বাভাবিক গঠন, খাঁটিত্বের অভাবের মতো বৈশিষ্ট্যের কারণে মাংসের বিকল্পগুলি এখনো মাংসপ্রেমিদের প্লেট থেকে অনেক দূরে রয়েছে৷ লেনা পার্চ বলেন, ‘‘একেবারে একশো থেকে শূন্যে পরিবর্তন করা কঠিন৷ মাংসের বিকল্পগুলি বড়জোর সাময়িক সমাধানসূত্র হতে পারে৷ আমার মতে, এমন বিকল্প থেকে যাবে৷ কারণ এর অর্থ, আমাদেরকে আমাদের সার্বিক ডায়েটে কোনো মৌলিক পরিবর্তন করতে হবে না৷''
তবে ভিগান মানেই পরিবেশবান্ধব, এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই৷ মাংসের অনেক বিকল্পের যথেষ্ট কার্বন ফুটপ্রিন্ট রয়েছে৷ বাকিগুলি উৎপাদনের জন্য অনেক পরিমাণ পানি, জ্বালানি ও চাষের জমির প্রয়োজন হয়৷ কয়েকটি এখনো খাদ্য হিসেবে ছাড়পত্র পায় নি৷
কাটারিনা শানৎস/এসবি