1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘মহাসেন’-এর জন্য মহাপ্রস্তুতি

সমীর কুমার দে, ঢাকা১৫ মে ২০১৩

উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘মহাসেন’৷ আবহাওয়াবিদদের পূর্বাভাস অনুযায়ী, বুধবার দুপুরের পরই বাংলাদেশের কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ উপকূলে আঘাত হানবে এই মহাসেন৷ অবশ্য তারপরই ঘূর্ণিঝড়টি মিয়ানমারের দিকে চলে যাবে৷

https://p.dw.com/p/18Xe6
A storm lights up the sky above the Yangon river early on May 13, 2013. Myanmar on May 12 began moving people into emergency shelters as a cyclone threatened to batter a violence-wracked region home to tens of thousands of internal refugees. AFP PHOTO/ Ye Aung Thu (Photo credit should read Ye Aung Thu/AFP/Getty Images)
ছবি: Getty Images/AFP/Ye Aung Thu

উপকূলে আঘাত হানার সময় ‘মহাসেন'-এর গতিবেগ ঘণ্টায় ১১৫ থেকে ১৩৪ কিলোমিটারে ওঠানামা করবে বলে খবর৷ তখন প্রচুর বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে৷ ঘূর্ণিঝড় ‘মহাসেন'-এর আঘাতে জীবনহানি ও ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনতে প্রস্তুতি নিয়েছে সরকার৷ উপকূলীয় এলাকার জেলাগুলোর ডিসিদের নেতৃত্বে কমিটি গঠন করা হয়েছে এর মধ্যেই৷ আশেপাশের লোকজনকেও নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে নেয়ার জন্য সতর্ক রাখা হয়েছে৷ এছাড়া, উপকূলীয় ১২টি জেলায় ৫০ হাজারের মতো প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবক রাখা হয়েছে৷

Internally displaced Rohingya man walks across a stream with a child in his back as another catch fish with a net alongside makeshift tents in a camp for Rohingya people in Sittwe, northwestern Rakhine State, Myanmar, ahead of the arrival of Cyclone Mahasen, Tuesday, May 14, 2013. The U.N. said the cyclone, expected later this week, could swamp makeshift housing camps sheltering tens of thousands of Rohingya. Myanmar state television reported Monday that 5,158 people were relocated from low-lying camps in Rakhine state to safer shelters. But far more people are considered vulnerable. (AP Photo/Gemunu Amarasinghe) pixel
ঝড়ের গতিপ্রকৃতি পর্যবেক্ষণ করে মনে হচ্ছে, এটি বুধবার দুপুরের পর বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানতে পারেছবি: picture alliance/AP Photo

আবহাওয়াবিদদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে যে, শ্রীলঙ্কার তৃতীয় শতকের রাজা মহাসেনের নামেই এই ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করা হয়েছে ‘মহাসেন'৷

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক শাহ আলম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়েছে৷ মঙ্গলবার সকাল থেকে তা উত্তর দিকে অগ্রসরমান৷ ঝড়ের গতিপ্রকৃতি পর্যবেক্ষণ করে মনে হচ্ছে, এটি বুধবার দুপুরের পর বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানতে পারে৷ এখন ধীরে ধীরে এর গতি বাড়ছে৷ উপকূলের ৪/৫ শ' কিলোমিটার কাছাকাছি এসে এটি আরো তীব্র হতে পারে৷ এদিকে, কক্সবাজারসহ আশেপাশের এলাকায় মঙ্গলবার সকাল থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে৷ আবহাওয়াবিদরা বলছেন, বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে মহাসেন দুর্বল হয়ে পড়বে৷ স্বাভাবিকভাবেই এতে ক্ষয়ক্ষতি কমবে৷

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী ডয়চে ভেলেকে বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাব্য ক্ষতি মোকাবিলায় ইতিমধ্যে বেতারসহ সব ধরনের প্রচারমাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করা হয়েছে৷ ৪৯ হাজার ৩৬৫ জন প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবক উপকূলীয় এলাকায় দুর্যোগ পূর্ববর্তী কাজ করে যাচ্ছেন৷ সবচেয়ে দুর্যোগপূর্ণ এলাকার লোকজনকে আশেপাশের আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়ার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে৷ প্রয়োজন হলেই তাদের সরিয়ে নেয়া হবে৷ তবে সবাইকে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন মন্ত্রী৷

কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে সাংবাদিক আবদুল গফুর টেলিফোনে ডয়চে ভেলেকে বলেন, টেকনাফ উপকূলে ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড় মহাসেন নিয়ে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে৷ রেডিও টেলিভিশনের খবরের দিকেই সবার মনোযোগ৷ পাশাপাশি টেলিফোনে ঘূর্ণিঝড়ের ব্যাপারে তথ্য নেয়ার চেষ্টা করছেন সবাই৷ টেকনাফে আবহাওয়া অধিদপ্তর ৪ নম্বর সতর্ক সংকেত জারি করেছে৷ ওদিকে, উপজেলা প্রশাসন পর্যাপ্ত আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত থাকার কথা জানিয়েছে৷ উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা এলাকাবাসীকে ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় তাদের কি কি করণীয়, তা নিয়েও দিকনির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানান গফুর৷

সংশ্লিষ্ট উপকূলীয় জেলাগুলোর প্রশাসকরা জানিয়েছেন, উপকূলের কাছাকাছি বসবাসকারী নাগরিকদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রয়োজনে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে৷ সাইক্লোন শেল্টারগুলোকে থাকার উপযোগী করা হয়েছে৷ দুর্যোগকালে এবং পরবর্তী সহায়তার জন্য রেড ক্রিসেন্ট, বিভিন্ন এনজিও ছাড়াও ফায়ার সার্ভিস, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে৷ নৌবাহিনীর কর্মকর্তা লে. কমান্ডার হাসানুজ্জামান স্থানীয় সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তাদের জাহাজগুলোকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে ইতিমধ্যেই৷ এছাড়া, তাদের অন্য সবকিছুও প্রস্তুত রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি৷

প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক সময়ে ঘূর্ণিঝড় ‘গিরি'ও ‘নীলম' তীব্রতা পেয়েও বাংলাদেশের উপকূলে আসেনি৷ দু'টি ঝড়ই মিয়ানমার ও ভারতের ওপর দিয়ে বয়ে যায়৷ তবে সর্বশেষ বাংলাদেশ উপকূলে ২০০৯ সালের ২৩শে সেপ্টেম্বর তীব্রভাবে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় ‘আইলা'৷ এর আগে ‘রেশম' আঘাত হানে ২০০৮ সালের ২৫শে অক্টোবর, ‘নার্গিস' ২৭শে এপ্রিল এবং ‘সিডর' ২০০৭ সালের ১১ই নভেম্বর৷

আবহাওয়াবিদরা বলেছেন, প্রতিবছর এই সময়ে ঘূর্ণিঝড়ের প্রবণতা থাকে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য