মহাশ্বেতা দেবী এখন অনেকটাই সুস্থ
২৬ মে ২০১০মহাশ্বেতা দেবী৷ ‘হাজার চুরাশির মা' থেকে শুরু করে ‘স্তনদায়িনী'৷ বাংলা সাহিত্যের অন্যধারার রচনা প্রসঙ্গে যে সাহিত্যিককে বাদ দিয়ে ভাবা যায় না৷ অশীতিপর সাহিত্যিক এবং সমাজসেবী মহাশ্বেতা দেবী অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন কিন্তু এখন তিনি বেশ সুস্থ৷ লেখিকার পুত্র নবারুণ ভট্টাচার্য ডয়চে ভেলেকে জানান, ডায়াবিটিস বা মধুমেহ'র মাত্রা অকস্মাত বেড়ে গিয়েছিল তাঁর৷ হায়দ্রাবাদে যেতে অশীতিপর এই সাহিত্যিক কলকাতা বিমানবন্দরে পৌঁছনোর কিছুক্ষণের মধ্যেই প্রায় অজ্ঞান হয়ে পড়েন৷ সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়৷ তবে এখন তাঁর শারীরিক অবস্থা অনেকটাই ভালো৷ সামলে উঠেছেন তিনি, জানান নবারুণ, ডয়চে ভেলেকে৷
ডয়চে ভেলের সঙ্গে মহাশ্বেতা দেবীর খুব ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল ২০০৬ সালের ফ্রাঙ্কফুর্ট আন্তর্জাতিক বইমেলা থেকে৷ সেবার ভারত ছিল অতিথি দেশ৷ আর বর্ষীয়ান ভারতীয় সাহিত্যিক মহাশ্বেতা দেবী ছিলেন প্রধান অতিথি৷ নানা ব্যস্ততার মধ্যেও প্রতিদিনই ডয়চে ভেলের স্টলে কিছুক্ষণের জন্য চলে আসতেন মহাশ্বেতা দেবী৷ সেখানে সকলের সঙ্গে নিজের বৈচিত্র্যময় জীবনের বিভিন্ন ঘটনার কথা বলতেন তিনি৷ জানাতেন, সাহিত্য বিষয়ে তাঁর অনুভূতির কথাও৷ সেই সময়টিও বড় ভালো কাটত তাঁর অনুপম সঙ্গলাভে ডয়চে ভেলের বাংলা বিভাগের সকলেরই৷
অন্যধারার সাহিত্যই শুধু নয়, মহাশ্বেতা দেবী জড়িয়ে আছেন বিভিন্ন সমাজ উন্নয়ন মূলক কাজকর্মের সঙ্গেও৷ বিশেষ করে সমাজের পিছিয়ে পড়া অনগ্রসর শ্রেণীর জন্য তাঁর মমতা অনস্বীকার্য৷ তাঁর রচনায়ও বারবার উঠে এসেছে প্রান্তীয় সমাজের ছবি৷ তিনি তুলে ধরেছেন তাদেরকেই, যাদের কথা কেউ বলে না৷ সামাজিক সংস্কার ভাঙতে বা দৃষ্টিভঙ্গী পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও নিয়েছেন বহুবার৷ পুরুলিয়ার আদিবাসী সম্প্রদায় খেড়িয়া শবরদের জন্য এক সময় রীতিমত সামাজিক আন্দোলন করেছেন এই সাহসী নারী৷ ‘অন্ত্যজ' বলে আর ‘চোর' অপবাদ দিয়ে যে খেড়িয়া শবরদের সমাজে ব্রাত্য করে রাখা হত, তাঁদের দিয়েই মহাশ্বেতা দেবী কলকাতায় একটি দুর্গাপূজা করিয়েছিলেন নয়ের দশকের গোড়ায়৷ এরপর থেকে এই খেড়িয়া শবরদের সামাজিক উন্নয়নে যথেষ্ট অগ্রসরতা দেখা গেছে৷
ডাকাবুকো আর স্পষ্টবক্তা বলে পরিচিতা মহাশ্বেতা দেবী দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন আবার ঝাঁপিয়ে পড়ুন তাঁর কাজে, এই শুভকামনা থাকল আমাদের সকলেরই৷
প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়
সম্পাদনা : সঞ্জীব বর্মন