মমতার সভায় বাচ্চাদের পচা বিরিয়ানি!
২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩সরকারি অনুষ্ঠান। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী উপস্থিত। তারই নির্দেশে ছাত্রছাত্রীদের দুপুরের খাবার দেয়া হয়েছিল। প্যাকেট খুলে গন্ধেই বমি করে ফেলল বহু ছাত্রছাত্রী। পচা বিরিয়ানি মুখে তুলতে পারেনি কেউ। অথচ যারা এই পচা বিরিয়ানি দিলেন, তাদের বিরুদ্ধে এখনো পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
মঙ্গলবার শিলিগুড়িতে সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে সবুজসাথী প্রকল্পে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের হাতে সাইকেল তুলে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সব মিলিয়ে সাইকেল দেওয়া হয়েছে এক হাজার ৪০টি। সেই অনুষ্ঠানের শেষে ছাত্রছাত্রীদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
খাবার দেওয়ার দায়িত্ব ছিল অনগ্রসর কল্যাণ দপ্তরের কর্মকর্তাদের। তারা স্থানীয় একটি বিরিয়ানির দোকানে ১২৫০টি বিরিয়ানির প্যাকেট অর্ডার করেন। বিরিয়ানির দোকানদার জানিয়েছেন, সোমবার দুপুরেই তার কাছ থেকে সমস্ত বিরিয়ানি নিয়ে যাওয়া হয়। গরমের মধ্যে পুরো একদিন সেই বিরিয়ানি ফেলে রেখে মঙ্গলবার দুপুরে তা ছাত্রছাত্রীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। স্বাভাবিকভাবেই বাক্স খোলার সঙ্গে সঙ্গে ভিতর থেকে পচা গন্ধ বার হতে থাকে। কেউ সেই বিরিয়ানি খেতে পারেনি। পরে অবশ্য ছাত্রছাত্রীদের জন্য নতুন খাবারের ব্যবস্থা করা হয়।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত এক প্রবীণ সাংবাদিক ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ওই বিরিয়ানি খেয়ে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারতো। এর আগে পচা বিরিয়ানি খেয়ে মৃত্যুর ঘটনা একাধিকবার ঘটেছে। ছাত্রছাত্রীরা ভুল করে ওই বিরিয়ানি খেয়ে ফেললে ভয়াবহ কাণ্ড ঘটতে পারতো। এই ভয়ংকর কাজটি যারা করলেন, তাদের সামান্য ভর্ৎসনা পর্যন্ত করা হয়নি। পুরো বিষয়টি কার্যত চেপে যাওয়া হয়েছে।
অনগ্রসর শ্রেণির কল্যাণ দপ্তরের এক কর্মকর্তাকে এবিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ''ভুল বোঝাবুঝির কারণেই এমন ঘটনা ঘটেছে।'' ঘটনাস্থলে উপস্থিত এক সরকারি স্কুলের শিক্ষিকা ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ''একদিন ফেলে রাখা বিরিয়ানি হাজারের উপর বাচ্চাকে দেওয়া হলো। এটা সামান্য ভুল বোঝাবুঝি নয়। সাংঘাতিক কিছু ঘটে যেতে পারতো।''
দার্জিলিং জেলার জেলাশাসক এস পুন্নমবলমেরও নজরে এসেছে বিষয়টি। কিন্তু এখনো পর্যন্ত পুলিশ কারো বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
এসজি/জিএইচ (পিটিআই)