মনিপুরে কোরিয়ান কালচারের হিড়িক!
১৩ মে ২০১১কারণটা বোঝা খুব সহজ নয়৷ নৃতত্ত্ব থেকে রাজনীতি, সব কিছুই ঢুকে পড়ে এর মধ্যে৷ বছর দশেক আগে রাজ্যটির বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহীরা ঘোষণা করে যে, হিন্দি ছবি দেখা, হিন্দি স্যাটেলাইট টিভি দেখা, এ'সব চলবে না৷ যে সব সিনেমার মালিক এবং কেবল্ অপারেটর সে নিষেধাজ্ঞা মানবেন না, তাদের বোমা হুমকি দেওয়া হয়৷ ফলে কেবল্ অপারেটররা যেখানে যা পান, তাই দিয়ে সেই ফাঁকটা ভরানোর চেষ্টা করেন৷
তার মধ্যে ছিল দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সোলের ‘অরিরং টিভি', একটি ২৪ ঘণ্টার ইংরিজি টিভি চ্যানেল৷ পরে যোগ হয় কোরিয়ার ‘কেবিএস ওয়ার্লড' ইত্যাদি৷ কয়েক মাসের মধ্যেই মনিপুরিরা কোরীয় সংস্কৃতির ভক্ত হয়ে পড়ে৷ মনিপুরের কেবল্ অপারেটাররা না ভেবেচিন্তে কাজটা করেননি৷ কোরিয়ার মানুষদের সঙ্গে মনিপুরিদের চেহারার সাদৃশ্য রয়েছে, কেননা তারাও মঙ্গোল উপজাতি থেকে উদ্ভূত৷ এছাড়া রয়েছে সংস্কৃতির সাদৃশ্য৷
কোরিয়ার বয় ব্যান্ডরা চীন কি জাপান কি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশের মতোই, কম বয়সের মনিপুরিদের কাছেও একই রকম জনপ্রিয়৷ ইমফলের হেয়ারড্রেসিং সেলুনগুলোতে তাদেরই উদ্ভট, সজারুর কাঁটা মার্কা হেয়ারস্টাইলের বিজ্ঞাপন ঝুলছে৷ গম্ভীর মার্কেটের বুটিকগুলোয় সেই ধরণেরই টাইট জিনস্ পাওয়া যাচ্ছে৷ তরুণ মনিপুরিদের ভাষাতেও কোরিয়ার ছোঁয়া লেগেছে - আদত কোরিয়ান ভাষায় সোপ দেখা আর সাবটাইটেল পড়ার ফল৷ তাই পথেঘাটে স্ল্যাং শোনা যাচ্ছে: ‘আনিইয়ং-হাসেয়ো', মানে হ্যালো; ‘কামসাহামনিদা', মানে ধন্যবাদ; ‘সারাং-হায়ও', মানে আমি তোমাকে ভালোবাসি৷
কোরিয়ার সব শো'ই ইংরিজি সাবটাইটেল দিয়ে পাইরেটেড ডিভিডি হিসেবে পাওয়া যাবে ইমফলের বাজারে, মাত্র এক ডলার পরিমাণ মূল্যে৷ সীমান্ত পেরোলেই মিয়ানমার আছে কি করতে?
প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ