মণিপুরে সহিংসতা: ঘর ছেড়েছেন ২৩ হাজার বাসিন্দা
৭ মে ২০২৩ইম্ফাল ও চুরাচান্দপুরের হাসপাতালের মর্গের তথ্যের ভিত্তিতে অন্তত ৫৪ জনের প্রাণহানির খবর প্রকাশ করেছে স্থানীয় গণমাধ্যম৷ তবে মণিপুর সরকারের নিরাপত্তা উপদেষ্টা কুলদিপ সিং জানিয়েছেন, ১৮ থেকে ২০ জনের প্রাণহানির তথ্য আছে তাদের কাছে৷ সাম্প্রতিক জাতিগত সহিংসতার ঘটনায় তারা নিহত হয়েছেন কীনা তা খতিয়ে দেখছে কর্তৃপক্ষ৷ তবে প্রায় ১০০ জন আহত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ও পাঁচ শতাধিক বাড়িঘর পুড়ে গেছে বলেও জানান তিনি৷
রোববার সেনাবাহিনী জানিয়েছে, আগের রাতে বড় ধরনের সহিংসতার কোন ঘটনা ঘটেনি৷ চুরাচান্দপুর সকাল সাতটা থেকে দশটা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল করা হয়েছে৷ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে ড্রোন ও হেলিকপ্টার ব্যবহার করে আকাশ থেকে নজরদারি চালানো হচ্ছে বলেও জানিয়েছে তারা৷
বিবৃতিতে বাহিনীটি জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত মোট ২৩ হাজার বেসামরিক নাগরিককে উদ্ধার করে সামরিক ঘাঁটিতে সরিয়ে নেয়া হয়েছে৷
এদিকে পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে উল্লেখ করে কারফিউ শিথিল করার ঘোষণা দিয়েছেন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং৷
কেন এই বিক্ষোভ?
মণিপুরে মেইতেইরা মোট জনসংখ্যার ৫৩ শতাংশেরও বেশি৷ নাগা ও কুকিরা ৪০ শতাংশের মতো৷ কিন্তু একদিন মেইতেইদের আদিবাসী বলে মানা হতো না৷ কিন্তু এবার হাইকোর্ট তাদের সেই তফসিলি উপজাতির স্বীকৃতি দিল৷ ফলে এতদিন মেইতেইরা ‘নোটিফায়েড' পাহাড়ি এলাকায় জমি কিনতে পারতো না৷ এবার তারা পারবে৷ এই সিদ্ধান্তে অন্য আদিবাসীরা ক্ষুব্ধ হয়েছেন৷ হাইকোর্টের এই নির্দেশের বিরুদ্ধে নাগা ও কুকিরা গত সপ্তাহে প্রতিবাদ জানান, যা সহিংসতায় রূপ নেয়৷
এর আগে মণিপুরের বিজেপি সরকারও কেন্দ্রের কাছে চিঠি লিখে মেইতেইদের উপজাতির স্বীকৃতি দেয়ার অনুরোধ করেছিল৷ গত সপ্তাহে মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে কথা বলেন৷
এই পরিস্থিতির জন্য বিজেপিকে দায়ী করেছে কংগ্রেস৷ মণিপুরে সহিংসতায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও৷
ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যটিতে গত কয়েক যুগ ধরেই জাতিগত ও বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলোর সংঘাত চলছে৷ ১৯৫০ এর দশক থেকে এখন পর্যন্ত ৫০ হাজার মানুষ সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছেন৷ রাজ্যটির পূর্বে মিয়ানমার ও পশ্চিমে বাংলাদেশ সীমান্ত৷
এফএস/এআই (এএফপি, রয়টার্স)