1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সুপার শপগুলোতেও ভেজাল

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা ২৪ জুলাই ২০১৩

রমজান মাসে সাধারণ দোকান তো বটেই, সুপার শপের ভোগ্যপণ্যেও ভেজালের ভিড়ে আসল চেনা দায়৷ এ জন্য জেল-জরিমানা করেও কাজ হচ্ছে না৷ আর ইফতারির আইটেমে রঙ এবং কেমিক্যাল মেশানো থামানো যাচ্ছেনা কোনোভাবেই৷

https://p.dw.com/p/19DFa
ছবি: dapd

ব়্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত রোজার মাসে ভেজাল বিরোধী অভিযান জোরদার করেছে৷ এবার তারা এই অভিযানে গুরুত্ব দিচ্ছে সুপার শপগুলোকে৷ কারণ এসব সুপার শপ রমজানে বাহারি ইফতারির পসরা সাজিয়ে বসে৷ তার দাম আকাশ ছোঁয়া হলেও ক্রেতাদের ভিড় লেগেই আছে৷

ভ্রাম্যমাণ আদালত মঙ্গলবার অভিযান চালায় অভিজাত এলাকা উত্তরার আরো অভিজাত ট্রাস্ট ‘ফ্যামিলি নিডস' শপে৷ একটি বিশাল ভবনের চারটি ফ্লোর নিয়ে এই সুপার শপ৷ আর দোকানের প্রবেশ পথের দু'পাশে তাদের সুপরিসর ইফতারি বাজার৷

ভ্রাম্যমাণ আদালত প্রথমেই রান্নাঘরে অভিযান চালায়৷ কিন্তু অভিযান চালতে গিয়ে আদালতের সদস্যরা ‘থ'৷ রান্নাঘর বলতে দুটি ভবনের মাঝখানে ফাঁকা অপরিসর জায়গা৷ যত বড় শপ ঠিক তত সংকীর্ণ তার রান্নাঘর৷ আর সেখানেই নোংরা পরিবেশে তৈরি হয় নানা ‘সুস্বাদু' ইফতার৷ সেই রান্নাঘরের ফ্রিজ থেকে বের করে আনা হয় পচা মুরগির মাংস৷ পরিমাণে প্রায় ২০ কেজি৷ তা দিয়েই হয়ত বানানো হতো চিকেন ফ্রাই৷ এরপর ধরা পড়ে বহু পুরনো তেলে চপ ভাজার দৃশ্য৷ দেখে বোঝার উপায় নেই যে এটি তেল না অন্য কোনো পদার্থ৷

Iftar Ramadan in Dhaka Bangladesch
ঢাকার একটি ইফতার বাজারছবি: picture-alliance/dpa

তত্‍পর কর্মচারীরা ততক্ষণে অনেক কিছু সরিয়ে ফেলেন৷ কিন্তু আরেকটি ফ্রিজ খোলায় তাঁরা ধরা পড়ে যান৷ আগের দিনের চিকেন ফ্রাই, গ্রিল চিকেন এবং কাবাব পাওয়া যায় সেখানে৷ এগুলোই আবার গরম করে একদিন পর বিক্রি করা হয় বলে জানান কর্মচারীরা৷ এদিকে জিলাপির সঙ্গে হাইড্রোজ নামে এক ধরণের কেমিক্যাল এবং রঙ মেশানোর কথা জানান কারিগররা৷ তাঁরা জানান, এতে রঙ ভালো হয় এবং জিলাপি দীর্ঘক্ষণ মচমচে থাকে৷ এছাড়া, প্যাকেটজাত খেজুরে পাওয়া যায় ফরমালিন৷

ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ এইচ এম আনোয়ার পাশা ডয়চে ভেলেকে জানান, তাদের এখানে আরো অনেক ভোগ্যপণ্যে তাঁরা ভেজাল পান৷ তাই প্রতিষ্ঠানের মালিক শফিকুল আলম ও ছয়জন কর্মচারীকে মোট ১৮ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে তিন মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়৷ তাঁরা জরিমানার টাকা পরিশোধ করে কারাদণ্ড থেকে রেহাই পান৷ তিনি এও জানান যে, ট্রাস্ট ফ্যামিলি নিডস শপকে গত বছরও জরিমানা করা হয়েছিল৷ কিন্তু এরপরেও তাদের ভেজাল থামানো যায়নি৷

মালিক শফিকুল আলম অবশ্য দাবি করেন যে, তাঁর অজান্তেই কর্মচারীরা এসব করছেন৷ তিনি কিছু জানেন না৷ ওদিকে, অভিযানের সঙ্গে থাকা বিএসটিআই-এর কর্মকর্তা খালিদ রেজা চৌধুরী ডয়চে ভেলেকে জানান, এসব ভেজাল ইফতার এবং পণ্য খেয়ে সাধারণ মানুষ ক্যানসারসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন৷

জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আবুল হোসেন মিয়া ডয়চে ভেলেকে জানান, তারা প্রতিদিনই ভোক্তাদের কাছ থেকে ভোগ্যপণ্যে ভেজালসহ নানা ধরণের অভিযোগ পান৷ তাদের সাতটি ভ্যাম্যমান দলও এ ব্যাপারে নজরদারি করছে৷ তিনি জানান যে, গত দু'বছরে তাঁরা ৬ কোটি ৭৪ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করেছেন৷ কিন্তু তারপরও কমছে না ভেজাল পণ্য৷ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ার পাশা জানান যে, তাঁরা গত এক বছরে প্রায় সব সুপার শপেই অভিযান চালিয়েছেন৷ এবং তার ফলে কোনো সুপার শপই জরিমানা বা দণ্ড এড়াতে পারেনি৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য