ভিন গ্রহে প্রাণের খোঁজ
৭ জুলাই ২০১৩সৌরজগতের বাইরে নক্ষত্র, গ্যালাক্সি সহ অন্যান্য মহাজাগতিক বস্তুর আবিষ্কার নতুন বিষয় নয়৷ বহুকাল ধরেই মানুষ এক্ষেত্রে সাফল্য পেয়ে আসছে৷ সম্প্রতি সেই তালিকায় যোগ হয়েছে বহু আলোকবর্ষ দূরের একের পর এক গ্রহ৷ এত ঘন ঘন নতুন গ্রহের কথা জানা যাচ্ছে, যে সেগুলি সম্পর্কে ভালোভাবে খোঁজখবর করা কঠিন হয়ে পড়ছে৷ এত দূরে পৌঁছানোর ক্ষমতা মানুষের হাতে এখনো আসে নি৷ তাই টেলিস্কোপ বা অন্যান্য যন্ত্রই ভরসা৷ তবে সবার আগে যে প্রশ্নটা মনে জাগে, সেটা হলো ‘‘সেখানে কি প্রাণ আছে বা কখনো ছিল?''
প্রাণের অস্তিত্বের জন্য চাই জল৷ অন্তত আমাদের প্রচলিত জ্ঞান তাই বলে৷ অতএব বায়ুমণ্ডলে জলের অস্তিত্ব শনাক্ত করতে হবে৷ এবার ইউরোপের জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা ঠিক এই কাজের এক নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন৷ পৃথিবীর বুকে অথবা মহাকাশে অবস্থিত বিশাল টেলিস্কোপের মধ্যে তা প্রয়োগ করা যায়৷ এর জন্য যে যন্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে, তার নাম ‘ক্রায়োজিনিক হাই-রেজোলিউশন ইনফ্রারেড এশেল স্পেকট্রোগ্রাফ'৷ চিলির আটাকামা মরুভূমিতে ইউরোপীয় এক টেলিস্কোপে সেটি কাজে লাগানো হচ্ছে৷
সদ্য আবিষ্কৃত এক গ্রহের উপর সেই পদ্ধতি প্রয়োগও করা হয়েছে৷ দূরের সেই গ্রহের এখনো কোনো নাম রাখা হয়নি৷ তবে জানা গেছে সেটি তার ‘সূর্য'-এর চারিদিক প্রদক্ষিণ করতে মাত্র ২ দিন সময় নেয়৷ অত্যন্ত গরম এই গ্রহে ইস্পাতও গলে যাবার কথা৷
দূরের গ্রহের খোঁজের পোশাকি নাম হলো ‘এক্সোপ্ল্যানেট' গবেষণা৷ তাদের সূত্র অনুযায়ী ১৯৯৫ সাল থেকে এখনো পর্যন্ত এর আওতায় আমাদের সৌরজগতের বাইরে মোট ৭২৩টি গ্রহ আবিষ্কৃত হয়েছে৷ নাসা-র হিসেব অনুযায়ী সংখ্যাটা অবশ্য ৮৭৯৷ আরও অনেক মহাজাগতিক বস্তু আদৌ গ্রহ কি না, তা যাচাই করে দেখা হচ্ছে৷ স্কীকৃতি পেলে সেগুলিও গ্রহের তালিকায় স্থান পাবে৷
এখনো পর্যন্ত দূরের কোনো গ্রহেই প্রাণের অস্তিত্বের সম্ভাবনা পাওয়া যায় নি৷ তবে নেদারল্যান্ডস-এর লাইডেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জেন বির্কবি বলেছেন, আগামী কয়েক দশকে পৃথিবীর মতো গ্রহের খোঁজ আরও জোরালো হবে৷ নতুন এই পদ্ধতি প্রয়োগ করে যদি জল এবং সেইসঙ্গে প্রাণের অস্তিত্বের প্রমাণ পাওয়া যায় বা জানা যায়, পৃথিবীর মতোই আরও গ্রহ রয়েছে, তা হবে এক রোমাঞ্চকর আবিষ্কার৷
এসবি/ডিজি (এএফপি)