‘ভালোবাসার চুম্বন’ নিয়ে ভারতে বিতর্ক
৪ নভেম্বর ২০১৪কেরালা রাজ্যে সাক্ষরতার হার শতকরা একশোভাগ৷ ‘গডস ওন কান্ট্রি’ হিসেবে পরিচিত এই রাজ্যে বিশ্বের প্রায় সব ধর্মই প্রাচীনকাল থেকে উপস্থিত৷ সেই রাজ্যেই ধর্মীয় সংগঠনগুলির এমন তাণ্ডবের বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে বৈকি৷
গোটা ঘটনার সূত্রপাত ‘ভারতীয় যুব মোর্চা' নামের এক সংগঠনের এক হামলার ঘটনা থেকে৷ ‘অনৈতিক কার্যকলাপ' বন্ধ করতে গত সপ্তাহে তারা একটি হোটেলের কফি শপ-এ হামলা চালিয়েছিল৷ সেখানে নাকি প্রকাশ্যে চুম্বন খাওয়া হচ্ছিল৷ সেই ঘটনার ভিডিও প্রচার করে একটি স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেল৷
তারই প্রতিবাদে ‘কিস অফ লাভ' নামের এক প্রতিবাদ আন্দোলন শুরু হয়েছে৷ এই সমাবেশের নাম রাখা হয়েছে ‘কিস কার্নিভাল'৷ প্রকাশ্যে যুবক-যুবতীরা চুমু খেয়ে স্বঘোষিত নীতিবাগীশদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ দেখাচ্ছেন৷ এক প্রাচীন হিন্দু মন্দিরের ছবি সহ টুইটার ব্যবহারকারী দেবদত্ত পট্টনায়েক লিখেছেন, যারা এই আন্দোলনের বিরোধী, তারা আসলে প্রত্যাখ্যাত, লজ্জিত৷ তাদের হৃদয় ভেঙে গেছে, ভালোবাসা পায়নি এবং ক্ষুব্ধ৷ নিজেদের তারা ‘মরাল' বলে মনে করে:
সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে এই আন্দোলন শুরু হয়েছিল, যদিও সেই পাতাটিও বন্ধ করে দেওয়া হয়৷ ভারতের ‘ফার্স্টপোস্ট' অনলাইন সংবাদপত্র টুইটারে লিখেছে, সোশ্যাল মিডিয়াতেও ‘মরাল পুলিশ!'
পুলিশ অনুমতি না দেওয়া সত্ত্বেও প্রতিবাদ চলছে৷ রবিবারও পুলিশ প্রায় ৫০ জন প্রতিবাদকারীকে আটক করেছে৷ মনোরমা অনলাইন সংবাদপত্র পুলিশ ভ্যানের মধ্যে চুম্বনরত অ্যাক্টিভিস্টদের ছবি প্রকাশ করেছে:
‘কিস অফ লাভ'-এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে একাধিক হিন্দু ও মুসলিম সংগঠন৷ তাদের মতে, এর ফলে রাজ্যে ‘যৌন অরাজকতা'-ক সৃষ্টি হবে৷ শিবসেনা দলের কর্মীদের হিংসাত্মক তাণ্ডব ছিল দেখার মতো৷ তারা এই প্রচেষ্টাকে ‘লাভ জিহাদ'-এর অঙ্গ হিসেবে তুলে ধরছে৷ ভারতীয় যুব মোর্চা ছাড়াও সংঘ পরিবারের সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ এবং বজরং দল তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে৷ মুসলিম সংগঠনগুলির মধ্যে রয়েছে সুন্নি সংগঠন এসওয়াইএস এবং সোশ্যাল ডেমক্র্যাটিক পার্টি অফ ইন্ডিয়া৷ তারা সবাই নিজেদের ‘অ্যান্টি কিস' বা চুম্বন-বিরোধী আন্দোলন হিসেবে তুলে ধরছে৷
এমন প্রেক্ষাপটে ‘স্কুপহুপ' লিখেছে, ভারতে প্রকাশ্যে প্রস্রাব করা চলে, কিন্তু চুমু খাওয়া ঠিক নয়!
এসবি/ডিজি (ডিপিএ, পিটিআই)