ভারতে সাধারণ নির্বাচন
৫ মার্চ ২০১৪ষোড়শ সংসদীয় নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করলেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ভি.এস সম্পত বুধবার ৫ই মার্চ৷ সংসদের ৫৪৩টি আসনের জন্য দেশজুড়ে ভোট হবে নয় দফায়৷ শুরু হবে ৭ই এপ্রিল এবং শেষ হবে ১২ই মে৷ ভোটের ফলাফল ঘোষিত হবে ১৬ই মে একদিনেই৷ ভোটারদের সংখ্যা ৮০ কোটি ৪০ লাখ৷ গত ২০০৯ সালের তুলনায় ১২ কোটি বেশি৷ এই ১২ কোটি ভোটারদের মধ্যে বেশির ভাগ প্রথমবার ভোট দেবেন৷ এবারে ভোটদান কেন্দ্রের সংখ্যাও সেই অনুপাতে বাড়িয়ে করা হয়েছে ৯ লাখ ৩০ হাজার৷
৭ই এপ্রিল প্রথম দফায় ভোট হবে দু'টি রাজ্যের ছয়টি সংসদীয় আসনে৷ ৯ই এপ্রিল দ্বিতীয় দফায় পাঁচটি রাজ্যের নয়টি আসনে৷ ১০ই এপ্রিল তৃতীয় দফায় ১৪টি রাজ্যের ৯২টি আসনে৷ ১২ই এপ্রিল চতুর্থ দফায় তিনটি রাজ্যের পাঁচটি আসনে৷ পঞ্চম দফায় ১৭ই এপ্রিল ১৩টি রাজ্য ও কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলের ১২২টি আসনে৷ ২৪শে এপ্রিল ষষ্ঠ দফায় ১২টি রাজ্যের ১১৭টি আসনে৷ ৩০শে এপ্রিল সপ্তম দফায় নয়টি রাজ্যের ৮৯টি কেন্দ্রে৷ অষ্টম দফায় ভোট নেয়া হবে ৭ই মে সাতটি রাজ্যের ৬৪টি আসনে৷ ১২ই মে নবম তথা শেষ দফায় ভোট হবে তিনটি রাজ্যের ৪১টি আসনে৷ পশ্চিমবঙ্গে ভোট হবে পাঁচ দফায়৷ ১৭ই, ২৪শে, ৩০শে এপ্রিল এবং ৭ই এবং ১২ই মে৷ ভোট গণনা ১৬ই মে৷
বুধবার থেকেই বলবৎ হলো নির্বাচনি আচরণবিধি৷ সরকার এমন কোনো জনকল্যাণ কর্মসূচির কথা ঘোষণা করতে পারবে না, যা ভোটারদের প্রভাবিত করতে পারে৷ রাজনৈতিক দলগুলিও একে অপরের বিরুদ্ধে এমন কোনো অভিযোগ বা পাল্টা অভিযোগ করতে পারবে না, যা সেইসব দল প্রমাণ করতে পারবে না৷ এই প্রথম সাধারণ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে ‘‘নোটা'' বিকল্প চালু হবে৷ প্রতিদ্বন্দ্বী কোনো প্রার্থীকে পছন্দ না হলে নোটা বোতাম টিপতে পারেন৷ নির্বাচনে অর্থশক্তির যথেচ্ছ ব্যবহারে উদ্বেগ প্রকাশ করে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার বলেন, অর্থশক্তির ব্যাপক ব্যবহার রোধ করতে ফ্লাইং স্কোয়াড এবং ইলেকট্রনিক বা ভিডিও নজরদারির ব্যবস্থা করা হবে৷
নিবাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে বিজেপি শীর্ষ নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেছেন, নতুন যে ১২ কোটি ভোটার এবার ভোট দেবেন, তাঁদের বেশির ভাগই যুব সম্প্রদায়৷ তাঁরা চায় পরিবর্তন৷ ফলে বিজেপি তাঁদের কাঙ্ক্ষিত দল হবে বলে মনে করেন তিনি৷ এছাড়া বেকারি, মূল্যবৃদ্ধি এবং দুর্নীতিই হবে বিজেপির নির্বাচনি ইস্যু৷ উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী মিয়ানমার থেকে দিল্লি ফিরে আসার পর মন্ত্রিসভার বিশেষ বৈঠকে কিছু জনমুখী সিদ্ধান্ত নেবার কথা ছিল৷ যেমন, বিহারের জন্য বিশেষ প্যাকেজ এবং দুর্নীতি-বিরোধী অর্ডিন্যান্স অনুমোদনের নতুন করে চেষ্টা চালানো ইত্যাদি৷ কিন্তু নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণায় সে গুড়ে বালি৷ বিগত নির্বাচনগুলির তুলনায় এবার ভোটারদের দৃষ্টিভঙ্গি এবং মানসিকতায় এসেছে পরিবর্তন৷ তার পেছনে আছে শিক্ষা৷ ধর্ম, জাতপাত এদের তেমন টানে না, যেমন টানে আর্থিক বিকাশ আর দুর্নীতিমুক্ত সুশাসন৷ অন্তত জনমত সমীক্ষা তাই বলছে৷