ভারতে অরগ্যানিক খাবার জনপ্রিয় হচ্ছে
১ ডিসেম্বর ২০১৭ভারতের নতুন দিল্লিতে রবিবার সকালে যে বিষমুক্ত অরগ্যানিক খাবারের বাজার বসে সেখানে মূলত মধ্যবিত্তরাই ক্রেতা৷ খাবারের দাম প্রায় দ্বিগুণ হলেও তাঁরা এখান থেকে খাদ্যপণ্য কেনেন৷
এক নারী বলছিলেন, ‘‘আমি এমনিতে বেশি অর্থ খরচ করতে চাই না৷ কিন্তু বিষাক্ত খাবার খাওয়ার কারণে পরে যে স্বাস্থ্যগত সমস্যা দেখা দেয়, তা নিরসনে আরও বেশি অর্থ খরচ করতে হয়৷ তাই এখানে এসেছি৷’’
আরেকজন জানালেন, ‘‘শরীরের জন্য ভালো খাবার পাওয়ার এটাই একমাত্র উপায়৷ কারণ অন্য জায়গার খাবারগুলো বিষাক্ত৷ পশ্চিমা বিশ্বও অরগ্যানিক খাবারের দিকে ঝুঁকছে৷ নিশ্চয়ই তার একটা কারণ আছে৷ তাই আমরা আর কেন পিছিয়ে থাকব?’’
হর্ষ লোহিত একজন অরগ্যানিক চাষী৷ বছর সাতেক আগে তিনি একটি সফটওয়্যার কোম্পানির মালিক ছিলেন৷ পরে সেটি ভালো টাকা পেয়ে বিক্রি করে দেন৷ পরে অরগ্যানিক চাষে যুক্ত হয়ে পড়েন৷
তিনি বলেন, বহু যুগ ধরে রাসায়নিক সার ব্যবহারের কারণে ভারতের মাটি অনুর্বর হয়ে গেছে৷ এই অবস্থার পরিবর্তন চান হর্ষ লোহিত৷ ‘‘জমিতে এখন প্রাণ নেই৷ তার মানে উৎপাদিত খাদ্যশস্য দেখতে স্বাস্থ্যকর মনে হলেও সেগুলোতে আসলে পর্যাপ্ত পুষ্টি নেই, যা আমাদের শরীরে জন্য দরকারি,’’ বলেন তিনি৷
ভারতের সরকার অরগ্যানিক চাষের জন্য যে প্রণোদনা দিয়ে থাকে, তা খুব সামান্য বলে মনে করেন লোহিত৷ তাছাড়া শুধু বড় শহরের মানুষরা এখন এই সুবিধা পাচ্ছেন৷
তারপরও অরগ্যানিক চাষীর সংখ্যা বাড়ছে৷ কারণ, শহরগুলোতে এসব পণ্যের চাহিদা বাড়ছে৷ অনলাইনের মাধ্যমে অরগ্যানিক খাবার বিক্রি করা প্রতিষ্ঠান ‘আই সে অরগ্যানিক’-এর এই গুদামে গেলে সেটা বোঝা যায়৷
প্রায় দশ হাজার পরিবার এখান থেকে অরগ্যানিক খাবার কেনে৷ সবজি, ফল থেকে শুরু করে প্রায় ২০০ পণ্য আছে এখানে৷
আশমিত কাপুর ২০১১ সালে কোম্পানিটি প্রতিষ্ঠা করেন৷ এখন তাঁর কোম্পানিতে ৫০ জনের বেশি মানুষ কাজ করছে৷ অরগ্যানিক খাবারের মতো নতুন এই খাতের বড় সমস্যা হচ্ছে, কৃষকরা যে আসলেই অরগ্যানিক পদ্ধতিতে চাষ করে ফসল ফলাচ্ছেন, তা নিশ্চিত করা৷
আশমিত কাপুর বলেন, ‘‘কোনো খাবারে ‘অরগ্যানিক’ চিহ্ন থাকলেও আমরা তা আরও নিশ্চিত হতে চাই৷ তাই আমরা কৃষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করি, তাদের উৎপাদন পদ্ধতি সম্পর্কে খবর পাওয়ার চেষ্টা করি৷’’
ভবিষ্যতে পণ্যের তালিকায় আরও অরগ্যানিক খাবার যোগ করতে চান আশমিত৷ যেমন অরগ্যানিক রুটি৷ এভাবে তিনি তাঁর প্রতিষ্ঠানের ক্রেতার সংখ্যা বাড়াতে চান৷
কাটিয়া কেপনার/জেডএইচ