ব্লেককে গুলি করেও পুলিশের শাস্তি হচ্ছে না
৬ জানুয়ারি ২০২১ঘটনাটি ঘটেছিল ২০২০-র অগাস্টে। উইসকনসিনের কেনোশায় জেকব ব্লেক তাঁর গাড়িতে ওঠার মুখে পুলিশ গুলি চালায়। একাধিক গুলি তাঁর পিঠে লাগে। তিনি বেঁচে গেলেও পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। তাঁকে এভাবে গুলি করার পরেও শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্মী রাস্টেন শেসকির বিরুদ্ধে কোনো চার্জ গঠন করা হলো না।
ব্লেককে এই ভাবে গুলি করার পর বিক্ষোভে ফেটে পড়ে অ্যামেরিকা। 'ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার' আন্দোলন আরো জোরদার হয়। পুলিশ কর্মীর বিরুদ্ধে শাস্তির দাবি ওঠে।
মোবাইল ফোনে তোলা ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, দুই বন্দুকধারী পুলিশ কর্মী ব্লেককে অনুসরণ করছেন। ব্লেক যখন তাঁর গাড়ির দরজা খুলে ড্রাইভারের সিটে বসতে যাবেন, তখন শেসকি পিছন থেকে তাঁর জামা টেনে ধরেন এবং গুলি চালাতে থাকেন। ব্লেকের পিঠে একাধিক গুলি লাগে।
কেনোশার পুলিশ ইউনিয়নের দাবি, ব্লেকের কাছে ছুরি ছিল। পুলিশের নির্দেশও তিনি মানেননি। তদন্তকারীরা জানিয়েছিলেন, পুলিশ তাঁর গাড়িতে ছুরি দেখেছিল। কিন্তু ব্লেক কাউকে হুমকি দিয়েছেন, এমন কথা তাঁরা বলেননি।
মঙ্গলবার কেনোশা কাউন্টি ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি মাইকেল গ্রেভলি বলেন, প্রসিকিউটাররা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, শেসকি আত্মরক্ষার জন্য গুলি চালিয়েছিলেন। ব্লেক যখন পুলিশের মুখোমুখি হন, তখন তাঁর কাছে ছুরি ছিল।
সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ
ব্লেকের আইনজীবী বেন ক্রাম্প বলেছেন. এই সিদ্ধান্তের ফলে মার্কিন বিচারব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা আরো কমবে।
জেকবের কাকা জাস্টিন ব্লেক বলেছেন, ''উইসকনসিন প্রশাসন ও ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি আমাদের মুখে চড় মারলেন। যা ঘটেছে তা বর্ণবাদের প্রকাশ ছাড়া আর কিছু নয়।'' আর ব্লেক পরিবারের আইনজীবীর মন্তব্য, ''শেসকির বিরুদ্ধে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ ছিল। মনে হচ্ছে, অ্যামেরিকায় তিন ধরনের বিচার ব্যবস্থা আছে। একটি কালো ও বাদামি মানুষের জন্য, একটি পুলিশ কর্মীদের জন্য এবং একটি বাকি অ্যামেরিকার জন্য।''
বন্দুকধারীর দাবি
পুলিশের হাতে জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর তিন মাস পরে ব্লেকের ঘটনা ঘটে। প্রতিবাদে উত্তাল হয় অ্যামেরিকা। কেনোশায় প্রতিবাদ সহিংস হয়ে ওঠে। ২৫০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পাশের রাজ্য থেকে এক শ্বতাঙ্গ বন্দুকধারী টিনএজার এসে বিক্ষোভে গুলি চালায়। দুই জন মারা যান এবং একজন আহত হন। মঙ্গলবার সেই টিনএজার জানিয়েছেন, তিনি লুটেরাদের হাত থেকে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বাঁচাতে সেখানে গেছিলেন। বিক্ষোভকারীরা তাঁকে আক্রমণ করে। তিনি আত্মরক্ষার তাগিদে গুলি চালিয়েছিলেন।
আবার বিক্ষোভের সম্ভাবনা
ব্লেককে গুলি করার পরও পুলিশ কর্মীর কোনো শাস্তি না হওয়ায় আবার বিক্ষোভ হতে পারে বলে মনে করছে স্থানীয় প্রশাসন। মঙ্গলবার রাতে রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে যায়। বিক্ষোভ হলে কার্ফিউ জারি করা বা অন্য ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষমতা মেয়রকে দেয়া হয়েছে। প্রশাসন ইতিমধ্যেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে।
জিএইচ/এসজি(এপি, রয়টার্স, এএফপি)