আবার কারাগারে আসিফ
২৯ জুলাই ২০১৩ব্লগে ধর্মকে অবমাননা করে লেখালেখির অভিযোগে আসিফ মহিউদ্দীনকে গ্রেফতার করা হয় গত ৩রা এপ্রিল৷ এরপর তাঁকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ এবং আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়৷ গত ২৭শে জুন আসিফ আদালত থেকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পান৷ গত বুধবার পর্যন্ত তাঁর এই জামিনের মেয়াদ ছিল৷
পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু ডয়চে ভেলেকে জানান, আসিফ বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির না হয়ে ৪ দিন পর সোমবার আদালতে আত্মসমর্পণ করেন৷ ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণের পর বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান অন্তর্বর্তী জামিনের শর্তভঙ্গের কারণে আসিফের স্থায়ী জামিনের আবেদন বাতিল করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন৷ আদালত থেকেই তাঁকে বিকেলে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়৷
পাবলিক প্রসিকিউটর জানান, এ ছাড়া চিকিত্সা সংক্রান্ত কিছু কাগজপত্র আদালতে উপস্থাপনের কথা ছিল৷ তাও আদালতে উপস্থাপনে ব্যর্থ হয়েছেন আসিফ৷ তিনি বলেন, নতুন করে কোন লেখালেখি বা মত প্রকাশের মাধ্যমে আসিফ তার জামিনের শর্ত ভঙ্গ করেননি৷ আদালত তাঁর আদেশে এ ধরনের কোনো কথা বলেননি৷
আসিফের বোন জুয়েলা জেবুন্নেসা মনি ডয়চে ভেলেকে জানান, আসিফের আইনজীবী চৌধুরী সানোয়ার আলীর সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝির কারণে এরকম হয়েছে৷ তাঁরা ভেবেছিলেন আসিফকে স্থায়ী জামিন দেয়া হয়েছে৷ এবং ২৫শে আগস্ট মামলার পরবর্তী শুনানির দিনে হাজির হলেই চলবে৷ তাঁরা যখন জানতে পারেন আসিফের জামিন অন্তর্বর্তীকালীন, তখন আর কিছু করার ছিলনা৷ ফলে আসিফকে ১ মাস ২ দিন পর আবার কারাগারে যেতে হল৷
আসিফের আরেক আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া ডয়চে ভেলেকে জানান, তাঁরা আবারো জামিনের জন্য আবেদন করবেন৷ তবে তা ঈদের আগে সম্ভব নাও হতে পারে৷
গত ১৪ই জানুয়ারি রাতে উত্তরা এলাকায় মৌলবাদী সন্ত্রাসীরা আসিফের ওপর হামলা চালায়৷ তিনি তখন প্রাণে বেঁচে গেলেও গুরুতর আহত হন৷ দীর্ঘদিন তাঁকে হাসপাতালে থেকে চিকিত্সা নিতে হয়৷ তারপরও তিনি পুরোপুরি সুস্থ হননি৷ এরপর গণজাগরণ মঞ্চ শুরু হলে মৌলবাদী গোষ্ঠী ধর্মকে অবমাননার অভিযোগে আসিফসহ বেশ কিছু ব্লগারকে গ্রেফতারের দাবি জানায়৷ তাদের দাবির মুখে আসিফকে অসুস্থ অবস্থায়ই গ্রেফতার করা হয়৷
একই সময়ে আরো ৩ ব্লগার রাসেল, পারভেজ এবং সুব্রত অধিকারী শুভকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা বিভাগ৷ তাঁরা ৩ জন আসিফের আগেই জামিন পান এবং এখনো জামিনে আছেন৷