ব্রেক্সিট চুক্তির কোনো আশা দেখছে না ইইউ
১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ব্রেক্সিট চুক্তির প্রশ্নে ব্রিটেন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে শেষ লগ্নে বোঝাপড়ার সম্ভাবনার কোনো লক্ষণ এখনো দেখা যাচ্ছে না৷ ব্রিটিশ সরকার আইরিশ সীমান্তে ব্যাকস্টপ ব্যবস্থার কোনো স্পষ্ট ও গ্রহণযোগ্য বিকল্প পেশ করে নি৷ আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এ ক্ষেত্রে কোনো অগ্রগতির লক্ষণও দেখা যাচ্ছে না৷ ইউরোপীয় কর্মকর্তারা এ ক্ষেত্রে ব্রিটিশ সরকারের আন্তরিকতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছেন৷ ব্রিটেন ‘লোক দেখানো' আলোচনার ভান করছে বলে তাঁরা অভিযোগ করছেন৷ বৃহস্পতিবার ইউরোপীয় পার্লামেন্টের নেতারা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, যে তাঁরা ব্যাকস্টপ ছাড়া ব্রেক্সিট চুক্তি মেনে নেবেন না৷ উপযুক্ত কারণ থাকলে পার্লামেন্ট অবশ্য ব্রেক্সিটের সময়সীমার আবেদন বিবেচনা করতে প্রস্তুত৷
এই অবস্থায় ইইউ-র প্রধান মধ্যস্থতাকারী মিশেল বার্নিয়ে বলেছেন, আগামী ১৭ ও ১৮ই অক্টোবর ইইউ শীর্ষ সম্মেলনের আগে বোঝাপড়া সম্পর্কে আশাবাদের কোনো কারণ নেই৷ তাঁর মতে, ব্রিটিশ সংসদ চুক্তিহীন ব্রেক্সিট এড়াতে আইন প্রণয়ন করলেও তা কার্যকর হবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে৷ ভবিষ্যতে দুই পক্ষের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তির পূর্বশর্তও তুলে ধরেন বার্নিয়ে৷ টেরেসা মে সরকারের সঙ্গে এই প্রশ্নে ইইউ-র সব বোঝাপড়া মেনে চললে তবেই এমন চুক্তি সম্ভব হতে পারে বলে তিনি মনে করেন৷
ব্রিটেনের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির জটিলতা গোটা প্রক্রিয়াটিকে আরও অনিশ্চিত করে তুলেছে৷ সরকার সংসদ মুলতুবি রেখেছে৷ সরকার ও বিরোধী পক্ষের মধ্যে একাধিক আদালতে সংঘাত চলছে৷ স্কটল্যান্ডের সর্বোচ্চ আদালত সংসদ মুলতুবি রাখার সিদ্ধান্তকে অবৈধ ঘোষণা করায় আগামী মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে বিষয়টির ফয়সালা হবে৷ ইংল্যান্ড ও উত্তর আয়ারল্যান্ডের আদালত অবশ্য সরকারের পক্ষেই রায় দিয়েছে৷ সুপ্রিম কোর্ট স্কটিশ আদালতের রায় বহাল রাখলে সরকারকে অবিলম্বে সংসদের অধিবেশন ডাকতে হবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷
এই অবস্থায় বিরোধী পক্ষ চুক্তিহীন ব্রেক্সিট এড়াতে মরিয়া হয়ে উঠেছে৷ সরকারের নিজস্ব ‘অপারেশন ইয়েলোহ্যামার' নথিপত্রকে সম্বল করে তারা ভয়াবহ পরিস্থিতি সম্পর্কে মানুষকে সতর্ক করে দিচ্ছে৷ অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এখনো ‘যে কোনো মূল্যে' ৩১শে অক্টোবর ব্রেক্সিট কার্যকর করতে বদ্ধপরিকর৷ একমাত্র তিনিই ইইউ-র সঙ্গে বোঝাপড়া সম্পর্কে আশাবাদ প্রকাশ করে চলেছেন৷
সেই বোঝাপড়ার অঙ্গ হিসেবে শুধু আয়ারল্যান্ডের জন্য আলাদা করে এক ব্যাকস্টপ ব্যবস্থার সম্ভাবনাও উঠে আসছে৷ অর্থাৎ ব্রেক্সিট চুক্তির আওতায় ব্রিটেনকে সামগ্রিকভাবে ইইউ-র বাণিজ্যিক কাঠামোর মধ্যে না রেখে শুধু উত্তর আয়ারল্যান্ড প্রদেশের ক্ষেত্রে সেই নিয়ম কার্যকর করার পুরানো প্রস্তাবকে সমাধানসূত্র হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে৷ তবে ব্রিটিশ সরকারের জোটসঙ্গী উত্তর আয়ারল্যান্ডের ডিইউপি দল এখনো ব্রিটেনের অভ্যন্তরীণ বাজারে বিভাজনের বিরোধিতা করছে৷ উল্লেখ্য, দ্য টাইমস সংবাদপত্র এই প্রশ্নে ডিইউপি দলের নমনীয়তার দাবি করেছিল৷ সেই প্রতিবেদন অনুযায়ী আয়ারল্যান্ড সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ এড়াতে তারা ইইউ-র কিছু নিয়ন্ত্রণ মেনে নিতে রাজি হয়েছিল৷
এসবি/কেএম (রয়টার্স, এএফপি)