এখনো আশার আলো দেখছে ইইউ
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০হাতে আর প্রায় এক মাস সময় রয়েছে৷ অক্টোবরের শেষ অথবা নভেম্বরের শুরুতে সমঝোতা সম্ভব না হলে ২০২১ সালের ১লা জানুয়ারি ব্রিটেন কোনো চুক্তি ছাড়াই ইউরোপীয় ইউনয়ন পুরোপুরি ত্যাগ করবে৷ তখন ব্যবসাবাণিজ্য থেকে শুরু করে একাধিক ক্ষেত্রে নানা বিঘ্ন ঘটবে৷ এমন পরিস্থিতি এড়াতে শেষ চেষ্টা চালাতে মঙ্গল থেকে শুক্রবার পর্যন্ত ব্রাসেলসে দুই পক্ষের মধ্যে নবম ও শেষ পর্যায়ের আলোচনা শুরু হচ্ছে৷ প্রয়োজনে অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত আলোচনার মেয়াদ বাড়ানো হতে পারে৷
ইইউ-র সঙ্গে বিচ্ছেদ চুক্তির শর্ত উপেক্ষা করে ব্রিটেন জাতীয় আইন প্রণয়নের উদ্যোগ চালিয়ে যাওয়ায় দুই পক্ষের মধ্যে বোঝাপড়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে আসছে৷ মঙ্গলবারই ব্রিটিশ সংসদের নিম্ন কক্ষে সেই আইন নিয়ে ভোটাভুটি হবার কথা৷ অথচ চলতি মাসের মধ্যে সেই আইন প্রত্যাহার না করলে ইইউ ভবিষ্যৎ সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা বন্ধ করার হুমকি দিয়েছে৷ বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ইইউ শীর্ষ নেতারা ব্রাসেলসে এক বৈঠকে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন৷ তারপর ১৫ ও ১৬ই অক্টোবর ইইউ শীর্ষ সম্মেলনে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে৷
সোমবার ইইউ কমিশনের নির্বাহী সভাপতি মারস সেফকোভিচ ব্রিটেনের ব্রেক্সিটের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী মাইকেল গোভের সঙ্গে আলোচনার পর বলেন, ইইউ-র কাছে গ্রহণযোগ্য অবস্থান থেকে ব্রিটেন অনেক দূরে রয়েছে৷ ব্রিটেনের প্রস্তাবিত আইন ব্রেক্সিট চুক্তি ও আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করছে বলেও তিনি মনে করিয়ে দেন৷ সেফকোভিচ বলেন, বিচ্ছেদ চুক্তি পুরোপুরি কার্যকর করতে হবে৷ অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি গোভের সঙ্গে আবার বৈঠকের আগে মতপার্থক্য কাটাতে দ্রুত অগ্রগতি প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন৷
চাপের মুখেও ব্রিটেনের সরকার প্রস্তাবিত আইন প্রত্যাহারের কোনো লক্ষণ দেখাচ্ছে না৷ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের এক মুখপাত্র সোমবার লন্ডনে বলেন, গত দুই সপ্তাহের আলোচনা ইতিবাচক হলেও আরও অনেক কাজ বাকি রয়েছে৷
ব্রিটেনকে সতর্ক করে দিলেও ইইউ এখনো দ্বিপাক্ষিক চুক্তির আশা ছাড়ে নি৷ ইইউ কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন সোমবার রাতে বলেন, ইংলিশ চ্যানেলের দুই দিকেই করোনা মহামারির ধাক্কা সামলাতে হচ্ছে৷ অর্থনীতির উপর নেতিবাচক প্রভাব যাতে আরো মারাত্মক না হয়, সেই লক্ষ্যে সব পদক্ষেপ নেওয়া উচিত৷
এমন পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞরা নানা রকম সম্ভাবনার পূর্বাভাষ দিচ্ছেন৷ ব্রিটেন চুক্তিভঙ্গ করেও ইইউ-র কাছ থেকে ছাড় পেতে পারে না৷ অন্যদিকে ইইউ একতরফাভাবে বাণিজ্য চুক্তি সংক্রান্ত আলোচনা ছেড়ে বেরিয়ে এলে আখেরে কট্টর ব্রেক্সিটপন্থিদেরই সুবিধা হবে৷ দুই দিক সামলাতে ইইউ আলোচনা চালিয়ে যেতে পারে৷ আলোচনা সফল হলে চুক্তি খসড়া প্রস্তুত হবে৷ তখন সেই চুক্তি অনুমোদনের শর্ত হিসেবে ইইউ ব্রিটেনের বিতর্কিত আইন বাতিলের দাবি জানাতে পারে৷ চুক্তিভঙ্গের অভিযোগে ব্রিটেনের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপও শুরু করতে পারে ইইউ৷
এসবি/এসিবি (ডিপিএ, এএফপি)