শেক্সপিয়ারের জগৎ নিয়ে প্রদর্শনী
১৯ জুলাই ২০১২এই বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ মিউজিয়ামের রিডিং রুমে শুরু হচ্ছে সে প্রদর্শনী৷ প্রদর্শনীতে রাখা হয়েছে শেক্সপিয়ারের আমলের, অর্থাৎ ষোড়শ এবং সপ্তদশ শতাব্দির প্রায় ২০০টি বিভিন্ন বস্তু৷ শেক্সপিয়ার তখন লন্ডনের গ্লোব থিয়েটারের নাট্যকার৷ বলতে কি, পেশাদার নাট্যকাররাও ছিল তখন একটা নতুন ব্যাপার৷
লন্ডন অলিম্পিক্সের কারণেই ব্রিটেন তথা বিশ্বের চিরকালের সেরা চারণকবির ডাক পড়েছে৷ কেননা বিশ্বের মানুষ যখন লন্ডনে আসছে অথবা টেলিভিশনের পর্দায় লন্ডনকে দেখছে, তখন ব্রিটিশ সংস্কৃতি প্রদর্শন করার এমন একটা সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করা চলে না৷ তাই লন্ডন ২০১২ নাম দিয়ে এই সাংস্কৃতিক কর্মসূচি, যার অঙ্গ হিসেবে আবার এই শেক্সপিয়ার প্রদর্শনী৷
শেক্সপিয়ার তো শুধু ব্রিটেনের কবি নন৷ তার একটা উদাহরণ পাওয়া যাবে এই প্রদর্শনীতেই৷ দক্ষিণ আফ্রিকার রবেন আইল্যান্ড কারাদ্বীপে সত্তরের দশকে আটক ছিলেন সনি ভেঙ্কটারত্নম নামের এক রাজনৈতিক বন্দি৷ তাঁর কাছে লুকনো ছিল শেক্সপিয়ারের পূর্ণাঙ্গ রচনাবলীর একটি সস্তার সংস্করণ৷ ভেঙ্কটারত্নম বইটিকে হিন্দু ধর্মগ্রন্থ হিসেবে পাচার করে নিজের কাছে রেখেছিলেন৷ অন্যান্য কয়েদিদের পড়ার জন্য বইটিকে ধার দিতেন তিনি৷ সেই সব কয়েদিরা গ্রন্থের যে পাতার যে অংশ তাদের সবচেয়ে নাড়া দিয়েছে, সেখানে নিজেদের নাম সই করে দিতেন৷ এভাবে এই ‘‘রবেন আইল্যান্ড বাইবেলে'' যে সব কয়েদি তাদের স্বাক্ষর রেখে গেছেন, তাদের মধ্যে নেলসন ম্যান্ডেলাও ছিলেন৷
জুলিয়াস সিজার নাটকের দু'টি ছত্র: ‘‘কাপুরুষরা মরার আগে বহুবার মরে৷ বীরপুরুষরা একবারের বেশি মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করে না৷'' এর পাশেই পাওয়া যাবে ১৯৭৭ সালে করা
নেলসন ম্যান্ডেলার স্বাক্ষর৷ মিইজিয়ামের পরিচালিকা ডোরা থর্নটন বইটি দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আসার পর সেটিকে হাতে নেন - তখন নাকি তাঁর চোখে জল এসে গেছিল৷ কোথায় শেক্সপিয়ারের সেই আদিম সংস্করণ, তথাকথিত ফার্স্ট ফোলিও, আর কোথায় এই রবেন আইল্যান্ড বাইবেল৷ উভয়েই স্থান পেয়েছে ব্রিটিশ মিউজিয়ামের প্রদর্শনীতে৷
জুলিয়াস সিজারই বলে দিচ্ছে, শেক্সপিয়ারের নাটক রোমক সাম্রাজ্য থেকে রবেন আইল্যান্ড অবধি ইতিহাসের ওঠাপড়াকে বোঝার একটি পথ এবং পন্থা৷ সেটাও এই প্রদর্শনীর একটি বিষয়৷
এসি / ডিজি (রয়টার্স)