ভারতে ক্যামেরন
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৩গত তিন বছরে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের এটা দ্বিতীয় ভারত সফর৷ সঙ্গে এসেছে উচ্চ পর্যায়ের এক বাণিজ্য প্রতিনিধিদল৷ সোমবার মুম্বই-এ তিনি ভারতীয় বাণিজ্য ও শিল্প জগতের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে ব্যবসা ও বিনিয়োগ সম্ভাবনা নিয়ে মত বিনিময় করেন৷ তুলে ধরেন ভারতের সঙ্গে একবিংশ শতাব্দীর অন্যতম বৃহৎ পার্টনারশিপ গড়ে তোলার এক রোডম্যাপ৷
এই প্রসঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমন কল্যাণ লাহিড়ি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘ব্রিটেনের হাতে যে পুঁজি আছে, তার মার্কেট ডেস্টিনেশন কিন্তু ভারত৷ সেই বাজার খুঁজতেই কার্যত ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এসেছেন ভারতে৷ বলা হচ্ছে, সে জন্য ব্রিটেন একদিনেই ভিসা সার্ভিস দিতে রাজি আছে, ভারতীয় ব্যবসায়ীদের জন্য যেটা দরকার৷ অর্থাৎ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের বাধাগুলি দূর করা৷''
যে সব বিনিয়োগ প্রকল্প ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী আলোচ্যসূচিতে আছে তার অন্যতম হলো, ‘মুম্বই-ব্যাঙ্গালোর বাণিজ্য করিডর'৷ এর সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করতে এসেছেন এক বিশেষজ্ঞদল৷ মোট বিনিয়োগ সম্ভাবনা ২,৫০০ কোটি ডলার৷ এক হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ এই করিডরের দুপাশে গড়ে তোলা হবে নগর-শহর, রয়েছে বিনিয়োগের বিপুল সম্ভাবনা৷
মঙ্গলবার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বৈঠক করবেন ড. মনমোহন সিং-এর সঙ্গে৷ ভারতের তরফে চাপ দেয়া হবে ব্রিটিশ-ইটালিয়ান আগুস্তা ওয়েস্টল্যান্ড কপ্টার নিয়ে যেসব দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, সে সম্পর্কে আরো তথ্য সরবরাহের৷ ভারত ইতিমধ্যেই ইঙ্গিত দিয়েছে, সেটা না দিলে ১,২০০ কোটি ডলারের কপ্টার চুক্তি বাতিল করা হতে পারে৷ বাতিল করা হলে ব্রিটেন পড়বে আর্থিক সমস্যায়৷ এই কপ্টার তৈরি হয় ব্রিটেনে৷ বহু কর্মীর চাকরির ঝুঁকি জড়িত৷
পাশাপাশি, ডেভিড ক্যামেরনের দিক থেকে প্রতিরক্ষা বাণিজ্যের কথা উঠতে পারে৷ ফরাসি যুদ্ধবিমান রাফাল কেনার চুক্তি এখনও চূড়ান্ত হয়নি৷ সেক্ষেত্রে ইউরোফাইটার কেনার কথা বিবেচনা করার কথা তোলা হতে পারে৷
রাজনৈতিক ইস্যুতে আফগান সংকট সমাধানে ব্রিটেনে পাকিস্তান-আফগানিস্তান শীর্ষ সম্মেলনে ভারতকে না ডাকায় ভারত তার অসন্তোষের কথা জানাতে পারে৷ অধ্যাপক লাহিড়ির মতে, ‘‘এটাই মনে হয় আফগান সংকট সমাধানে ভারতকে তারা গুরুত্বপূর্ণ মনে করে না৷ অর্থাৎ অর্থনৈতিক দিক থেকে ভারত যতটা গুরুত্বপূর্ণ, রাজনৈতিক দিক থেকে ততটা নয়৷''