বৈদ্যুতিক গাড়ি
২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫বিএমডাব্লিউ আইথ্রি মডেলটি হলো বিএমডাব্লিউ-এর প্রথম শতকরা একশো ভাগ বৈদ্যুতিক গাড়ি – যার সিরিজ প্রোডাকশন হচ্ছে৷ ওদিকে ইলেকট্রিক গাড়ি কেনার ব্যাপারে গ্রাহকরা এখনও মনোস্থির করে উঠতে পারেননি৷ যদি ব্যাটারিতে পর্যাপ্ত চার্জ না থাকে আর গাড়ি কোথাও আটকে যায়? যদি ধারে-কাছে ব্যাটারি চার্জ করার কোনো উপায় না থাকে? পেট্রোল পাম্প তো সর্বত্র পাওয়া যায়, কিন্তু চার্জিং স্টেশন খুব বেশি নেই৷ অথচ প্রতি দেড়শ' কিলোমিটার অন্তর গাড়ির ব্যাটারি রি-চার্জ করতে হবে৷ ডাবিএমডাব্লিউ ই মডেল প্রকল্পের পরিচালক নিয়েল আন্ডার্সসোন বলেন:-
‘‘এখনও অনেক দ্বিধা আছে৷ আমাদের স্পষ্ট বলতে হবে যে, আপনি যা-তে অভ্যস্থ তার চেয়ে এই গাড়ির মাইলেজ কিছুটা সীমিত৷ কিন্তু গ্রাহক যদি ব্যাপারটা ভেবে দেখেন এবং শহরে তিনি কিভাবে ও কতটা গাড়ি চালান, সেটা বিবেচনা করেন, তাহলে দেখবেন যে, প্রতিটি তেলের গাড়ি যে চারশ' থেকে পাঁচশ' কিলোমিটার চলতে পারে, রোজ তার দরকার পড়ে না৷ আর বছরে যে দু-তিনবার তার দরকার পড়ে, তখন কার রেন্টাল থেকে গাড়ি নেওয়া চলে৷ হবু গ্রাহককে এই সব বোঝানোর পরে তিনি নতুন করে ভাবতে শুরু করেন এবং তাঁর ওজর-আপত্তিও অনেকটা কমে যায়৷''
পাওয়ার আছে, কিন্তু চার্জিং স্টেশন?
প্রিমিয়াম সেগমেন্টে বেশি পাওয়ারের গাড়িগুলোই বেশি বিক্রি হয়৷ ইলেকট্রিক গাড়িগুলি তাদের পাশে দাঁড়াতে পারবে না ভাবলে কিন্তু ভুল করা হবে: তাদের পাওয়ারও ১৭০ অশ্ব শক্তি; শূন্য থেকে ঘণ্টায় একশ' কিলোমিটার গতিতে উঠতে লাগে মাত্র সাত সেকেন্ড৷ তার ওপর আবার তারা শব্দ কমে করে এবং ধোঁয়া ছাড়ে না৷ গত সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত বিএমডাব্লিউ-এর আইথ্রি মডেলটি বিক্রি হয়েছে তেরোশ' বার৷ শুনলে মনে হবে বেশি নয়, কিন্তু নির্মাতারা তা-তেই খুশি৷ সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো এই যে, পর্যাপ্ত পরিমাণ চার্জিং স্টেশন বা চার্জিং কলাম নেই৷ বার্লিনের মতো শহরগুলি চার্জিং কলামের সংখ্যা বাড়াতে চায় – কিন্তু সেখানেও স্ট্যান্ডার্ড নিয়ে সমস্যা আছে৷ যেমন: বিভিন্ন মডেলের গাড়ির বিভিন্ন রকমের প্লাগ থাকে৷ আন্ডার্সসোন বলেন: ‘‘বর্তমানে গাড়ির অ্যাকুমুলেটর ভরতে বড়জোর ৩০ মিনিট সময় লাগে৷ আপাতত ব্যাটারিতে যে পরিমাণ চার্জ আছে, তা-তে পাঁচ মিনিটের মধ্যেই অ্যাকুমুলেটর আবার ভর্তি হয়ে যাবে৷''
আশ্চর্য, জার্মানির মতো একটি গাড়ি-পাগল দেশ ইলেকট্রিক কার-এর অবকাঠামো বাড়াতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে! অথচ রাস্তাঘাটে ইলেকট্রিক বিএমডাব্লিউ দেখলে কিন্তু লোকজন থেমে দাঁড়ায়৷ কিন্তু শুধু দেখতে ভালো হলেই তো চলবে না৷ সেই সঙ্গে অন্যান্য ইন্সেন্টিভ দিতে হবে, বলে জার্মান মোটরগাড়ি নির্মাতা সমিতির দাবি৷ এক্ষেত্রে বিদেশে ওরা অনেকদূর এগিয়ে গেছে৷
মোটরগাড়ি নির্মাণ শিল্পসমিতির টেকনিক্যাল ডাইরেক্টর উলরিশ আইশহর্ন'এর মতে: ‘‘নরওয়ে বা হল্যান্ডের মতো দেশে, আবার ক্যালিফোর্নিয়া-তেও, ইলেকট্রিক গাড়ি কেনার প্রেরণা দেওয়ার নানা ব্যবস্থা আছে: কর মকুব, রেজিস্ট্রেশন ফি কিংবা সেলস ট্যাক্স মকুব৷ প্রতিটি দেশেই সেটা কিছুটা আলাদা, কিন্তু সব মিলিয়ে ফল দাঁড়ায় এই যে, ইলেকট্রিক গাড়ির দাম প্রায় সাধারণ মোটরগাড়ির পর্যায়ে নেমে যায়৷''