বেটিং মামলায় সাজা বাট, আসিফের, প্রতিক্রিয়া ক্রিকেট বিশ্বে
২ নভেম্বর ২০১১লন্ডনের সাউথওয়াক ক্রাউন কোর্টে উঠেছিল ক্রিকেট বেটিং-এর মামলা৷ একটানা ১৬ ঘণ্টা ৫৬ মিনিট ধরে বিতর্ক চলার পর বিচারপতি কুক তাঁর রায়ে জানান, মোট বারোজন জুরিদের মধ্যে সালমান বাট এবং মহম্মদ আসিফকে দোষী সাব্যস্ত করার ভোটাভুটিতে ভোট পড়েছে, ১০-২৷ ফলে দু'জনেই ক্রিকেট বেটিং-এ জড়িত থাকার অপরাধে কারাবাসের সাজা পেয়েছেন৷ এই কারাবাস সাত বছরের হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে৷ এদিকে, এই একই মামলায় এবার উঠে এসেছে আরেক পাকিস্তানি বোলার মহম্মদ আমের-এর নাম৷ খেলা চলাকালীন অর্থের বিনিময়ে ইচ্ছাকৃতভাবে ‘নো-বল' করার কথা তিনি স্বীকার করেছেন৷ বলেছেন ভয়ংকর চাপ এবং হুমকির মুখে তিনি বাধ্য হয়ে দুর্নীতি করেছেন৷ আদালতে পুরো ব্যাপারটার নেপথ্যে ব্রিটিশ বেটিং এজেন্ট মাজহার মাজিদের নামও উঠে এসেছে৷
বাট আর আসিফের বেটিং মামলার ফলাফল জানার জন্য আদালতে বিপুল ভিড় ছিল মঙ্গলবার৷ অতীতে ক্রিকেটাররা ম্যাচ ফিক্সিং বা গড়াপেটার সঙ্গে জড়িয়ে থাকার অপরাধে আইসিসি-র সিদ্ধান্তে খেলা থেকে নির্বাসিত হয়েছেন ঠিকই, যেমন উদাহরণ দক্ষিণ আফ্রিকার হ্যান্সি ক্রোনিয়ে৷ কিন্তু কারাবাসের সাজা এই প্রথম শোনা গেল৷ আগামীকাল বৃহস্পতিবার এই মামলার চূড়ান্ত শুনানিতেই স্পষ্ট হয়ে যাবে, ঠিক কতদিনের জন্য গারদে থাকতে হবে পাকিস্তানের এই ক্রিকেটারদের৷ তবে মহম্মদ আমের যেহেতু নিজের অপরাধ স্বীকার করে নিয়েছেন, সেক্ষেত্রে তাঁর সাজা কিছুটা কম হওয়ার সম্ভাবনা দেখছে ওয়াকিবহাল মহল৷ কিন্তু বাট আর আসিফের ক্ষেত্রে এই সাজা সাত বছরের হওয়ারই সম্ভাবনা জোরদার৷
এদিকে, ক্রিকেট বিশ্বে এই ঘটনার বেশ জোরদার প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে৷ ভারতের ক্যাপ্টেন মহেন্দ্র সিং ধোনি বেটিং-এর তীব্র সমালোচনা করে বিবৃতি দিয়েছেন ৷ বলেছেন স্পট ফিক্সিং এক জঘন্য অপরাধ৷ দেশের হয়ে খেলার সময় গড়াপেটা যারা করে, সেটা আরও বড়মাপের অপরাধের পর্যায়ে পড়ে৷ এদের শাস্তি পাওয়া দরকার৷ শুধু ধোনিই নয়, অস্ট্রেলিয়া থেকে শুরু করে দক্ষিণ আফ্রিকা, প্রায় প্রতিটি ক্রিকেট খেলিয়ে দেশই এই রায় শোনার পর ম্যাচ গড়াপেটা আর বেটিং-এর এই চক্রের তীব্র সমালোচনা করে বিবৃতি দিয়েছে৷
সালমান বাটকে ইতিমধ্যেই আইসিসি ১০ বছরের জন্য ক্রিকেট থেকে নির্বাসিত করেছে৷ আসিফকে সাত বছর এবং আমেরকে পাঁচ বছরের জন্য নির্বাসিত করার সেই ঘোষণা লন্ডনের আদালতের এই রায়ের পরেও বদলাবে না বলে জানিয়েছেন আইসিসি-র প্রধান হারুণ লোর্গাট৷
প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক