বিলাসবহুল গান্ধী কলমের বিক্রি বন্ধ করলো মঁ ব্লঁ
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১০১৯৩০ সালে ব্রিটিশ শাসকদের বিরুদ্ধে ডান্ডি অভিযান করেছিলেন ভারতের অহিংস আন্দোলনের অন্যতম প্রবাদ পুরুষ মহাত্মা গান্ধী৷ পায়ে হেঁটে গিয়েছিলেন ২৪১ মাইল৷ আর সেই ঘটনা স্মরণ করেই কলম তৈরির একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছিল মঁ ব্লঁ৷ ‘থিম মহাত্মা' নামের ঐ প্রকল্পের আওতায়, মেশিনে নয়, প্রস্তুত করা হয়েছিল একেবারে হাতের তৈরি মাত্র ২৪১টি কলম৷ মহাত্মা'র পায়ে হাঁটা পথটুকুকে সম্মান দিয়েই৷
সোনা-রূপোয় মোড়া এই মডেলটির নাম ‘মহাত্মা গান্ধী লিমিটেড এডিশন'৷ এছাড়া, প্রত্যেকটি কলমে জড়ানো প্রায় আট মিটার লম্বা একটি সোনার পাত৷ যেন চরকায় সুতো কাটার প্রতীক৷ তবে এ সবের কারণেই, কলমটির বিক্রয়মূল্য দাঁড়ায় ৩০,২০০ মার্কিন ডলার৷ অর্থাৎ, ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১৪ লাখ রুপি৷ আর সেখানেই শুরু হয় সমস্যা৷
দক্ষিণ ভারতে অবস্থিত কেরালা'র ‘ভোক্তা-শিক্ষা কেন্দ্র'-এর পক্ষ থেকে কলমটির বিরুদ্ধে প্রচারাভিযান শুরু হয়৷ এমনকি, মঁ ব্লঁ-এর ভারতীয় শাখার বিরুদ্ধে মামলাও করে সংস্থাটি৷ কেরালা রাজ্যের ‘ভোক্তা-শিক্ষা কেন্দ্র'-এর সদস্যদের কথায়, মহাত্মা গান্ধী নিজে অত্যন্ত সরল, সাধারণ জীবনযাপন করতেন৷ ভারতে তিনি স্বয়ং-সম্পূর্ণ জীবনচর্যার প্রবর্তক৷ তাই, তাঁর নাম এবং ছবি সমৃদ্ধ এহেন বিলাসবহুল একটি কলম বিক্রি করা, তাঁকে হেয় করারই সমান৷
তবে শুধু কেরালার এই সংগঠনটিই নয়, ভারতের অন্যান্য কয়েকটি দলের পক্ষ থেকেও কলমটি বিক্রি বন্ধ করার জন্য দাবি ওঠে৷ শেষ পাওয়ার খবর অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার দক্ষিণ ভারতে অবস্থিত থিরুভানানথাপুরম-এর উচ্চ আদালতে ক্ষমা প্রার্থনা চেয়েছে মঁ ব্লঁ৷ শুধু তাই নয়, আপাতত কলমটির বিক্রিও বন্ধ করেছে এই জার্মান কোম্পানিটি৷ জানিয়েছে সংস্থাটির ভারতীয় শাখার প্রধান পঙ্কজ শাহ৷
তবে ইতিমধ্যেই ভারতের জন্য তৈরি ৭০টি কলমের মধ্যে ৪২টি বিক্রি হয়ে গেছে বলে খবর৷ উল্লেখ্য, ‘মহাত্মা গান্ধী লিমিটেড এডিশন'-এর বিকল্প হিসেবে ‘মহাত্মা গান্ধী লিমিটেড এডিশন-৩০০০' নামের আরো একটি মডেলে তৈরি করেছে মঁ ব্লঁ৷ এতে রয়েছে ফাউন্টেন পেন ও রোলার বলপেন-এর একটি সেট৷ আর এর দাম পড়ছে ৩,০০০ মার্কিন ডলার৷
প্রতিবেদক : দেবারতি গুহ
সম্পাদনা : আব্দুল্লাহ আল-ফারূক