1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নির্বাচনে দাঁড়াতে পারছেন না খালেদা জিয়া

৮ ডিসেম্বর ২০১৮

এবার আর জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারছেন না বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া৷ নির্বাচন কমিশনে আপিলেও তিনি হেরে গেছেন৷ তবে এখনো উচ্চ আদালতে যাওয়ার সুযোগ আছে তাঁর৷

https://p.dw.com/p/39jPY
ছবি: picture-alliance/AP Photo/A.M. Ahad

কারাবন্দি খালেদা জিয়া এবার ফেনী-১, বগুড়া-৬ ও বগুড়া-৭ আসনে বিএনপির প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন নির্বাচন কমিশনে৷ কিন্তু ফৌজদারি মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে ২ ডিসেম্বর যাচাই বছাইয়ে রিটানিং অফিসার তাঁর তিনটি আসনেই মনোননয়পত্র বাতিল করেন৷ এরপর নির্বাচন কমিশনের আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল করা হলে শনিবার শুনানি শেষে সন্ধ্যায় তাঁর আপিল আবদেন নাকচ করে রিটার্নিং কর্মকর্তার দেয়া বাতিলের আদেশ বহাল রাখা হয়৷

প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ কে এম নূরুল হুদাসহ পাঁচজন কমিশনারের মধ্যে চারজন খালেদা জিয়ার মনোনয়ন বাতিলের পক্ষে রায় দেন৷ তবে, কমিশনার মাহবুব তালুকদার খালেদা জিয়ার তিনটি মনোনয়নপত্রকেই বৈধ করার পক্ষে রায় দেন৷ ফলে পাঁচজনের মধ্যে ৪-১ ভোটে খালেদা জিয়ার আপিল আবেদন খারিজ হয়ে যায়৷ 

‘বিএনপি'র নেতা কর্মীদের ওপর একটা চাপতো পড়বেই’

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অর্ফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হলে ওইদিনই তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়৷ এরপর রাষ্ট্রপক্ষের আপিলে ওই দণ্ড বাড়িয়ে ১০ বছর করেন আদালত৷ জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট নামে আরো একটি দূর্নীতির মামলায় সম্প্রতি খালেদা জিয়ার সাত বছরের কারাদণ্ড হয়েছে৷ বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী কোনো ব্যক্তির ফৌজদারী মামলায় কমপক্ষে দুই বছরের দণ্ড হলে তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন না৷ বাংলাদেশের সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদে কারা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না তা বলা আছে৷ এবং সেখানে নানা ধরনের অযোগ্যতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে৷

খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে ধারা ২ বিবেচ্য৷ আরো সুনির্দিষ্ট করে তা বলা হয়েছে ধারা ২-এর ঘ উপধারা৷ তাতে বলা হয়েছে, কেউ যদি ‘‘নৈতিক স্খলনজনিত কোনো ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে অন্যূন দুই বৎসরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন এবং তাঁর মুক্তিলাভের পর পাঁচ বৎসরকাল অতিবাহিত না হয়ে থাকে৷''

তবে, হাইকোর্টের সম্প্রতি আরো দু'টি আদেশে স্পষ্ট হয়েছে যে নির্বাচনে দাঁড়াতে হলে বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে শুধু আপিল করলেই হবেনা, দণ্ডও স্থগিত হতে হবে৷ দণ্ড স্থগিত বা বাতিল না হলে নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তি৷ খালেদা জিয়ার দু'টি মামলার রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হলেও তার দণ্ড স্থগিত বা বাতিল হয়নি৷

শনিবার নির্বাচন কমিশনের রায়ের পর খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশনে বিভক্ত আদেশ হয়েছে৷ নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার খালেদা জিয়ার তিনটি মনোনয়নপত্রই বৈধ বলেছেন৷ বাকি চারজন অবৈধ বলেছেন৷ আমরা এখন এই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে যাবো৷'' 

হাইকোর্টে আপিলের জন্য যথেষ্ঠ সময় আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘সময় কোন ব্যাপার না৷ হাইকোর্ট চাইলে যেকোনো আদেশ দিতে পারেন৷ খালেদা জিয়ার প্রার্থীতার জন্য আমরা শেষ পর্যন্ত আইনি লড়াই চালিয়ে যাব৷''

‘আমরা এখন এই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে যাবো’

এদিকে, নির্বাচন কমিশনের রায়ের পর বিএনপি'র নেতাকর্মীরা অনেকটা হতাশ হয়ে পড়েছেন৷ তাদের মন খারাপ হয়ে পড়েছে৷ নির্বাচন কমিশনেও তাদের হতাশা প্রকাশ করতে দেখা যায়৷ তবে বিএনপি'র ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশনের আপিলে খালেদা জিয়ার প্রার্থিতা বাতিল হওয়ায় বিএনপির নেতা কর্মীদের ওপর একটা চাপতো পড়বেই৷ কিন্তু অতীতে দেখা গেছে যেসব নেতা-নেত্রীকে অন্যায়ভাবে কারাগারে রাখা হয়েছে, তাদের ও তাদের দলের জনপ্রিয়তা বেড়েছে৷''

তিনি আরো বলেন, ‘‘এক এগারোতে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছিল, তা এখনো চলছে৷ নির্বাচন কমিশন তাঁর প্রার্থিতা বাতিল করে সেই ষড়যন্ত্রের নগ্ন বহিঃপ্রকাশ ঘটালো৷ অথচ আওয়ামী লীগের অনেকেই একই অবস্থায় নির্বাচনে প্রার্থী হতে পেরেছেন৷ ৩০ ডিসেম্বর বাংলাদেশের মানুষ একটি স্বচ্ছ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চায়৷ আর সেটা যদি না হয় তাহলে সংকট আরো ঘনীভূত হবে৷ আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যাবে৷''

প্রসঙ্গত ,খালেদা জিয়া যে তিনটি আসনে নির্বাচন করতে চেয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন সেই আসনগুলোতে বিএনপি'র বিকল্প প্রার্থী আছে৷ ফলে বিএনপির প্রার্থী সংকট হচ্ছেনা৷